• বরিশাল বিভাগ

    পটুয়াখালীতে সার ডিলার’রা সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে চালাচ্ছে অবৈধ ব্যবসা!

      প্রতিনিধি ২৪ আগস্ট ২০২২ , ১২:৩১:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় সরকার কতৃক নিয়োগকৃত ইউনিয়ন ভিত্তিক বিসিআইসি সার ডিলারদের সার বিতরণে অব্যবস্থাপনা। অনৈতিক গুদামজাত করনে ভরা মৌসুমে কৃত্রিম সংকট তৈরী ও নির্ধারিত মূল্যের বাহিরে অতিরিক্ত মূল্যে খুচরা ডিলারদের সার বিতরন সহ এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে ভুগছেন গোটা উপজেলার প্রান্তিক কৃষক”রা। অদৃশ্য শক্তির বলে চলছে সার বিতরন ব্যবস্থা এমনকি সদর পৌর শহরে ইউনিয়ন পর্যায়ের সার ডিলাররা একাধিক গুডাম ব্যবহার করছে।

    এমনটাও অভিযোগ উঠেছে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গলাচিপা উপজেলার সদর পৌর এলাকা সহ ১৩ টি ইউনিয়নে বিসিআইসি ডিলারদের মধ্যে অধিকাংশের ইউনিয়ন পর্যায়ে গোডাউন কিংবা শোরুমের অস্তিত্ব নেই। অনেকেই আবার লোক দেখানো গোডাউনে অল্প সংখ্যক ইউরিয়া সারের বস্তা রেখে ব্যবসা করছে। এলাকার বাহিরে। ৭ দিনের সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা মেলে, গলাচিপা বকুল বাড়িয়া ইউনিয়নে সরকার কতৃক নিয়োগ কৃত বিসিআইসি ডিলার মান্নান এন্টারপ্রাইজ ব্যবসা করছেন গলাচিপা পৌর এলাকায়। যা সার বিতরন নিতিমালার বর্হিভুত।

    এই অনিয়মের বিষয় মান্নান এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এব্যপারে কিছু বুঝিনা আপনারা আমার ভাইয়ে সাথে কথা বলেন। আপনারা কোথায় আছেন আমার দোকানে চলে আসেন একসাথে চা খাই বলে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব এরিয়ে যায়। এমনও দেখা মেলে মান্নান এন্টার প্রাইজের ছোট ভাই আনসার নিজেও একজন সার ব্যবসায়ী তার ডিলার পয়েন্ট ইউনিয়ন পর্যায় হলেও তিনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন গলাচিপা পৌর শহরে এটা কি অনিয়ম নয়।এবিষয়ে গলাচিপা পৌর এলাকায় ডিলার খোকন পোদ্দার বলেন, আমি একাধিক বার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বলেছি তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। শুধু তাই নয় মান্নান এন্টারপ্রাইজ পৌর এলাকায় দুটি গুদামঘর ও একটি শো-রুম রয়েছে। আমি কারো সাথে ঝামেলায় যাইতে চাই না।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গলাচিপা উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির এক সদস্য বলেন, এখানে ইউনিয়ন পর্যায় নিয়োগকৃত বিসিআইসি ডিলারদের অধিকাংশ ব্যবসা করেন পৌর এলাকায় যা সম্পূর্ণ নিতিমালার বাহিরে। তাছাড়া এই অনিয়ম দুর করতে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ইং সালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক সকল বিসিআইসি ডিলারদের স্ব স্ব স্থানে সার বিতরনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এব্যপারে গলাচিপা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আরজু আকতার বলেন, পৌর এলাকায় তাদের শো-রুম থাকতে পারে কিন্তু আমার জানামতে গুদামঘর নেই। তবে অনিয়ম দেখা গেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে জানান।

    বিসিআইসি সার ডিলারদের সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নিজস্ব দোকান অথবা গুদাম ব্যতীত নিজ বাড়িতেও সার মজুদ রাখার কোন সুযোগ নেই। উপরোক্ত নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়ো জনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।এবং সারের দোকানে কীটনাশক ব্যতীত অন্য কোন পন্য রাখা যাবে না বা বিক্রয় করা যাবে না। বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে সার বিক্রয় করতে চাইলে অবশ্যই দোকানে যার নামে লাইসেন্স তার নামে সাইনবোর্ড ব্যবহার করতে হবে। এবং লাইসেন্স এর ফটোকপি দোকানে সংরক্ষণ করতে হবে। বিসি আইসি ডিলারগন বরাদ্দের কম পক্ষে ৫০% সার খুচরা ডিলারদের সরবরাহ করতে হবে। যথা সময়ে সার উত্তোলনে নব্য আগমনী বার্তা দাখিল করতে হবে। এক ইউনিয়নের সার অন্য ইউনিয়নে কার্তৃপক্ষের নির্দেশনা ব্যতীত বিক্রয় করা যাবে না।

    যে ওয়ার্ড অথবা ইউনিয়নের জন্য লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে সেইসব জাইগায় নিজস্ব দোকান এবং গ্রদাম নিশ্চিত করতে হবে। বিসি আইসি অধীনস্থ খুচরা বিক্রেতাগণ অবশ্যই নিজ ডিলারের কাছ থেকে সার সংগ্রহ করবেন। মূল্য তালিকা লাল সালু কাপড় অবশ্যই দোকানের বাহিরে প্রদর্শন করতে হবে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশী দামে সার বিক্রয় করা যাবে না। যার নামে লাইসেন্স তাকেই ব্যবসা করতে হবে।মজুদ রেজিষ্টার ফর্মেট অনুযায়ী সংরক্ষণ করতে হবে। বিক্রয় রেজিষ্টারে অবশ্যই কৃষকের নাম এবং মোবাইল নাম্বার থাকতে হবে।

    সার বিক্রয়ের রশিদ অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে এবং রশিদে ক্রেতার স্বাক্ষরের পাশাপাশি ক্রেতার মোবাইল নাম্বার অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে, মূল্য তালিকা অবশ্যই থাকতে হবে।
    উক্ত বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ,কে,এম মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান,, নীতিমালার বাহিরে সার বিতরনের কোন সুযোগ নেই। যদি এধরণের কোন অনিয়মের খোঁজ পাওয়া গেলে আমরা প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।এসময় তিনি এব্যপারে আরো বলেন,সার বিতরণ ব্যবস্থার অনিয়মে জেলা প্রশাসকের জিরো টলারেন্স রয়েছে বলে জানান।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ