• আন্তর্জাতিক

    প্রেমের টানে ভারত থেকে সিরাজগঞ্জ এসে ঘরবাঁধা সেই স্ত্রীকে ফিরে পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ

      প্রতিনিধি ২৩ জুন ২০২৩ , ১০:০০:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ মিজানুর রহমান-সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:

    প্রেমের টানে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন অনেক তরুণ-তরুণী। এমন সংবাদ প্রায়ই পত্রিকার শিরোনাম হয়। কিন্তু এবার সংবাদের শিরোনাম হলো বাংলাদেশী তরুণের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে স্বামী-সন্তান রেখে চলে এসেছেন বাংলাদেশে। মিথ্যে পরিচয়ে গড়েছেন প্রেমের সম্পর্ক,বেঁধেছেন ঘর,করছেন সংসার। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে রাখা সেই স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে ভারত থেকে চলে এসেছেন বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার দাদপুর গ্রামে। ভারত থেকে আসা সেই নারীর নাম নার্গিসা বেগম। ফেসবুকের মাধ্যমে জুয়েলের সঙ্গে তার পরিচয়। এরপর দুজনের প্রেম। নার্গিসা এক পর্যায়ে ভারত থেকে চলে আসেন জুয়েলের কাছে। বিয়ে করেন। যদিও এটি ছিল তার দ্বিতীয় বিয়ে। ভারতে তার ৮ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। এই সন্তানের জন্যই নার্গিসাকে ফিরিয়ে নিতে ভারত থেকে উল্লাপাড়া এসেছেন তার প্রথম স্বামী ফজলুর রহমান মীর।

    শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুরে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে,বৃহস্পতিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা ফজলুর রহমান স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে উল্লাপাড়া থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন। জানা যায়,সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে প্রেমের টানে ফজলুর রহমান ও ৮ বছরের শিশু সন্তান জিসানকে ছেড়ে ভারত থেকে পালিয়ে জুয়েলের কাছে আসেন নার্গিসা। স্বামী ও সন্তানের কথা গোপন করে তিনি ১ জুন জুয়েলকে বিয়ে করেন। জুয়েল তার চেয়ে ৫ বছরের ছোট। বাংলাদেশে এসে নার্গিসা নিজেকে নাইসা মল্লিক নামে পরিচয় দেন। জুয়েল দাদপুর গ্রামের ইরান সরকারের ছেলে।

    এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে নার্গিসা বেগমের স্বামী ও সন্তান রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সংবাদে বলা হয়, ১২ বছর আগে বাঁকুড়া জেলার ফজলুর রহমান মীরের সঙ্গে বিয়ে হয় দানগড় ধারেশা মল্লিক পাড়ার বাসিন্দা নার্গিসা বেগম মল্লিকের। মীর জিসান নামে তাদের ৮ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। হঠাৎ নিখোঁজ হন ওই গৃহবধূ। এই মর্মে দমদুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন ফজলুর রহমান।

    জুয়েলের বাবা ইরান সরকার বলেন, আমরা তো এত কিছু জানতাম না। ভেবেছিলাম মেয়েটি অবিবাহিতা। ছেলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর জানতে পারি ভারতে তার স্বামী ও সন্তান আছে। যেভাবেই হোক মেয়েটি এখানে এসেছে। বাংলাদেশের আইন মোতাবেক বিয়েও হয়েছে। আমাদের কোনো আপত্তি নাই। আমরা তাকে ত্যাগ করতে পারি না। তবে ভারত থেকে আসা স্বামীর সঙ্গে সে যদি যেতে চায় আমাদের কিছু করার নেই। উল্লাপাড়ার দূর্গানগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবাদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আসা মেয়েটি বিবাহিতা- এ কথা আমরা পরে জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা হচ্ছে। তবে ভারত থেকে আসা তার প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সে ফিরে যেতে চাচ্ছে না।

    এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আসা নার্গিসার প্রাক্তন স্বামী আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। জুয়েলও তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিতে রাজি। কিন্তু সে যেতে চাচ্ছে না। পুলিশ তার সঙ্গে কথা বলে জেনেছে তার ভিসা, পাসপোর্ট, ডিভোর্স ও বিয়ের কাগজপত্র আছে। তাছাড়া ফজলুর রহমান মীর আগেও একটা বিয়ে করেছেন। তার ঘরে বড় বড় সন্তান রয়েছে। সে প্রতিনিয়ত মদ্যপ হয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। তাকে ডিভোর্স দিয়ে বৈধ পথে বাংলাদেশে এসে সে জুয়েলকে বিয়ে করেছে। আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। বলেন মো. নজরুল ইসলাম।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ