• সারাদেশ

    আশুরার দিনে যা যা ঘটেছিল : মুফতী আরিফুল ইসলাম কারীমী

      প্রতিনিধি ২৯ জুলাই ২০২৩ , ৩:১৫:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    আলোকিত ইসলাম ডেস্কঃ

    আরবি হিজরি সালের প্রথম মাস মুহররম। এ মাসের দশ তারিখই হেচ্ছ আশুরা। বহুকাল ধরেই আশুরা নিয়ে রয়েছে নানা কথা ও ঘটনার বর্ণনা। এ নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক বই ও ডকুমেন্টরি। যা এখনো হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তবে এসব বিষয়ে থাকতে সতর্ক। শুধু কারবালার প্রান্তরে হৃদয় বিদারক ঘটনার জন্য আশুরা মর্যাদাবান ও গুরুত্বপূ হয়নি। বরং প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের বর্ণনায় ফুটে ওঠেছে আশুরার মর্যাদা। যে কারণে প্রিয় নবি আশুরার দিনে রোজা রাখার কথা বলেছেন। বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফারের কথা বলেছেন।

    আশুরার কিছু প্রচলিত ঘটনাআশুরা নিয়ে সমাজে রয়েছে নানা ধরনের কথা। যা মানুষের মাঝে বিভেদ তৈরি করছে। এ সব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। যার কিছু তুলে ধরা হলো-
    >> কেয়ামতঅনেকেই বলে থাকেন যে, আশুরার দিনে কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। নির্ভরযোগ্য কোনো বর্ণনায় এ কথা প্রমাণিত নয়। এ দিন কেয়ামত সংঘঠিত হোক আর না হোক, কেয়ামত আসার আগেই মুমিন ব্যক্তির উচিত পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

    >> আদম আলাইহিস সালামের তাওবা কবুলআশুরায় তাওবা কবুল হয়। হাদিসে পাকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা এসেছে। আর আশুরার দিনে হজরত আদম আলাইহিস সালামের তাওবা কবুল হয়েছে মর্মে আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব কিতাবে এ সম্পর্কিত একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তবে ওলামায়ে কেরাম এ হাদিসের সনদকে দুর্বল বলেছেন।যেহেতু প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন আশুরার দিন আল্লাহ তাআলা অনেকের তাওবা কবুল করেন। তাই মানুষের উচিত এ দিন বেশি বেশি তাওবা করা।

    >> জুদি পাহাড়ে নৌকা নোঙরআশুরার দিন হজরত নূহ আলাইহিস সালামের নৌকা জুটি পাহাড়ে নোঙর করেছিল বলে শোনা যায়। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদের একটি বর্ণনায় এ তথ্য পাওয়া যায়। এ হাদিসটিকেও দুর্বল বলা হয়েছে।

    >> হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মহজরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্ম আশুরার দিনে হয়েছে বলে এমনই বর্ণনা এসেছে আত-তারগিব ওয়াত-তারহিবে। আদম আলাইহিস সালামের তাওবার সনদের মতো এ বর্ণনার সনদও দুর্বল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

    এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক কথা ও ঘটনা। মূলত এসব কারণে আশুরার মর্যাদা ঘোষিত হয়নি। তবে বনি ইসরাইলের সে ঘটনাটি হাদিসের বর্ণনায় ওঠে এসেছে হাদিসের বর্ণনায় আশুরার দিনের সুস্পষ্ট ঘটনাআশুরার দিনে দু’টি ঘটনা সুস্পষ্ট। তার একটি হলো হজরত মুসা আলাইহিস সালামের কাওমের মুক্তি আর অন্যটি হলো ফেরাউন সম্প্রদায়ের ধ্বংস।

    > হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তার সাথীরা ফেরাউন ও তার সৈন্যবাহিনীর হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আল্লাহ তাআলা সমুদ্রের মধ্যে তাদের জন্য রাস্তা বানিয়ে দেন। যা দিয়ে তারা সমুদ্র পাড়ি দেন।> ফেরাউন ও তার বাহিনী মুসা আলাইহিস সালামের কাওমকে তাড়া করে সমুদ্রে তৈরি রাস্তা প্রবেশ করলে সে রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। আর তাতে ডুবে ফেরাউন ও তার সৈন্যবাহিনী সমূলে ধ্বংস হয়ে যায়।

    এছাড়াও কারবালার প্রান্তরে হজরত ইমাম হুসাইনের শাহাদতও ঘটে এ আশুরার দিনে। বিশ্বব্যাপী মানুষ এ দিনটিকে যদিও কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনার জন্য সবেশি স্মরণ করে থাকে। মুলতঃ বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনা অনুযায়ী আশুরায় নয় বরং মুহররম মাসে আমল করার কথা বলেছেন। আর আশুরায় রোজা রাখার কথাও বলেছেণ। হাদিসে এসেছে-এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা ও তাওবা ইসতিগফারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। তাই মাসব্যাপী আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত আবশ্যক।

    রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি রমজানের পর আরও কোনো মাসে রোজা রাখতে চাও তবে মুহররমে রোজা রাখ। কেননা সেটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন রয়েছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা অনেকের তাওবা কবুল করেন। ভবিষ্যতেও আরও অনেক মানুষের তাওবা কবুল করবেন।’ (তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ) তাওবা ও ইসতেগফারের জন্য সবচেয়ে উত্তম হলো কুরআন-হাদিসে বর্ণিত ইসতেগফার বিষয়ক দোয়াগুলো বুঝে বুঝে পড়া। এ দোয়াগুলোর মাধ্যমে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ