• বরিশাল বিভাগ

    পটুয়াখালী’তে ভাসমান ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের মহা উৎসব

      প্রতিনিধি ২৭ নভেম্বর ২০২২ , ১১:১০:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    মু,হেলাল আহম্মেদ রিপন-পটুয়াখালী:

    পটুয়াখালী সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে ভাসমান ড্রেজারের একটি চক্র। চক্রটি আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মোল্লার স্ট্যান্ডসহ আসামীর হাট,হাউদা ব্রীজ,মোল্লার স্ট্যান্ড এলাকার সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে বোমা মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছে এই চক্র। এতে করে আবাদি জমির পরিমাণ সংকুচিত সহ কৃষি কাজে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়াও বালু উত্তলনের ফলে সরকারি খালের দুপাশের রাস্তা ও গাছ পালা হুমকির মুখে পড়েছে। কিন্তুু রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছে প্রশাসন।

    খোজ নিয়ে জানা যায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি গত ২৫ নভেম্বর শুক্রবার সকালে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের আসামির হাট সংলগ্নে সরকারি খাল থেকে বালু উত্তলনের খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর ভুমি অফিসের সিনিয়র তহসিলদার দুলাল মিয়াকে মুঠো ফোনে জানায়। এর কিছুক্ষন পর সদর ভুমি থেকে একজন সহকারী ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাসমান ড্রেজার জব্দ করে স্হানীয় ৫ নং ওয়ার্ডের ফারক মেম্বারের জিম্মায় দিয়ে চলে যায়। কিন্তু তহসিল অফিসের অফিস সহকারী ঘটনাস্থল থেকে চলে আসলেই ড্রেজার মালিক বশির পুনরায় মেম্বারের সহায়তা কাজ চালিয়ে যায়। জানাযায় স্থানীয় মেম্বার ফারুক সরকারি খালে একাধিক বাধদিয়ে অবৈধভাবে মৎসচাষ সহ বালু উত্তলনের সাথে প্রতক্ষ ভাবে জড়িত।

    এবং সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মোল্লা স্ট্যান্ড,হাউদা ব্রীজ,আসামীর হাটখোলাসহ একাধিক স্থানে সরকারি খাল থেকে বালু উত্তলনের নেপথ্যের খল নায়ক এই ফারুক মেম্বার। অবৈধ এ সকল ভাসমান ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় ক্ষমতাবান ড্রেজার ব্যবসায়ীরা। এনিয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এরা সরকারি খাল থেকে ভাসমান ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে আসছে। স্থানীয় বাসিন্দা খবির শিকদার মিজানুর,বেল্লাল মতলেব মিয়া বলেন,ভাসমান ড্রেজারে কৃষি জমি,ব্যহত হচ্ছে ধ্রুত এগুলো বন্ধ করতে হবে বলে জানান।

    সরকারি খালের তীরে কোটি টাকার সড়ক ও গ্রামীন জনপদের টিআর,কাবিটার সড়ক বিলিন হয়ে যেতে পারে যে কোন মুহূর্তে। তাছাড়া খালের পাশে কৃষিজমি ও বসত বাড়িগুলো পড়েছে চরম হুমকির মুখে। শুধু তাই নয় মেশিনের বিকট শব্দে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ঐসব গ্রামের সাধারণ জনগন।

    পটুয়াখালী’র সদর উপজেলাগুলোতে খোজ নিয়ে জানা যায়,জৈনকাঠী ইউনিয়নের কৌরাখালী এলাকার ড্রেজার মালিক ফিরোজ,
    সেয়াকাঠী স্কুল সংলগ্ন ভাসমান ড্রেজার মালিক বাবুল,কৌরাখালী মজিবর। এছাড়াও সদর উপজেলার মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের ড্রেজার মালিক জাফর। পার্শবর্তী ইউনিয়ন আউলিয়াপুর ড্রেজার মালিক বশির গাজী,আবু বক্কর,মাহাবুব আলম,মিজান,আব্দুল রব মিয়া।এছাড়াও বদরপুর ইউনিয়নে নাসিরসহ আরো অনেকে। এদের অবৈধ ভাসমান ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তলনের মহা উৎসব চালাচ্ছে।

    জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী সড়ক,কালভার্ট, বিভিন্ন স্থাপনার সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে নদী, খাল ও পুকুর
    থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। সদর উপজেলা আউলিয়াপুর ইউনিয়নের সাবিনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আসামীর হাট,পূর্ব আউলিয়াপুর, সলগ্ন বাজার সড়কের ১০ মিটারের মধ্যে খাল থেকে বোমা মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এভাবে খাল, ডোবা ও
    পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বোমা মেশিন মালিকরা জানান, নিচু জমি ভরাট, নির্মাণ কাজসহ বিভিন্ন কাজের জন্য এই বালু তোলা হচ্ছে। পরিবেশ বল অধিদপ্তর বরিশাল সূত্রে জানা যায়, বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ এবং নিষিদ্ধ।

    বালু উত্তোলন করতে হলে অবশ্যই সরকার কতৃক স্বীকৃত নির্ধারিত বালু মহাল থেকে তা উত্তোলন করতে হবে। পুকুর বা ডোবা থেকে বালু উত্তোলনের সময় সেখানে যে শূন্যতা তৈরি
    হয় তার কারণে আশপাশের ভূমি ধস ঘটতে পারে।

    এ বিষয়ে পটুয়াখালী সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবদুল হাই এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

    এব্যপারে পটুয়াখালী সদর ইউ,এন,ও জান্নাত-আরা নাহিদ এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও ফোনটি রিসিভ হয়নি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ