• Uncategorized

    সিদ্ধিরগঞ্জে গণধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা, গ্রেফতার-৫

      প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২০ , ৫:২৩:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    সাদ্দাম হোসেন মুন্না-নারায়ণগঞ্জ রিপোর্টারঃ

    সিদ্ধিরগঞ্জে গণধর্ষণের শিকার ১৬ বছরের এক কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। গণধর্ষণের ওই ঘটনার ৬ মাস পর বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে এক‌টি মামলা দা‌য়ের করা হ‌য়ে‌ছে।নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর মা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা‌টি ক‌রেন।এর পর পরই ৫ আসামিকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ৷

    মামলার এজাহারের বরাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, ৬ মাস পূর্বে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়াদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ওই কিশোরী৷লজ্জায় ও আসামিদের হুমকিতে দীর্ঘদিন চুপ ছিল তারা৷ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎক জানায়, মে‌য়ে‌টি ৫ মাস ৪ দিনের অন্তঃসত্ত্বা৷গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় কিশোরীর মা একটি মামলা দায়ের করলে ৫ আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়৷

    গ্রেফতার ৫ আসামি হলেন: ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জের রমজান আলীর ছেলে উজ্জ্বল রানা (২০), একই থানার সাটিয়া এলাকার সাতারুল হোসেনের ছেলে তাজেল ইসলাম (১৬), মৃত বাবুল হাওলাদারের ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জ কদমতলী গ্যাসলাইন হাজী হুমায়ুন কবিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. জালাল (২১), ভোলা চরফ্যাশন থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ছেলে আব্দুল আজিজ হাওলাদার ওরফে মিন্টু হাওলাদার (৫৫) এবং তার স্ত্রী বিলকিস হাওলাদার। আসামিরা সকলেই সিদ্ধিরগঞ্জ কদমতলী গ্যাসলাইন এলাকার হাজী হুমায়ুন কবিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া৷

    মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বাদী ও তার স্বামী সন্তানদের নিয়া গত ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত উল্লেখিত অভিযুক্তদের সঙ্গে পাশাপাশি কক্ষে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৮ অক্টোবর তারা বাড়িটি পরিবর্তন করে তাদের বর্তমান ঠিকানায় ভাড়াটিয়া হিসাবে চলে আসে। এর আ‌গে গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় ভুক্তভোগী কিশোরী তাদের রুমের পাশে দাড়াইয়া ছিল। এ সময় আসামি জালাল ও বিলকিস হাওলাদার ওই কিশোরীকে কথা বলার জন্য বিলকিসের ঘরে নিয়ে যায়।

    পরে আসামি উজ্জ্বল রানা ও তাজেল ইসলামকে রুমে ডেকে এনে কিশোরীর সঙ্গে রেখে বাইরে চলে যায় তারা। দরজা বন্ধ করে উজ্জ্বল রানা ও তাজেল ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিলকিস দোকান থেকে ওষুধ কিনে এনে কিশোরীকে খাওয়ায়। এরপর সে কিছুটা সুস্থ হলে মিন্টু হাওলাদার, বিলকিস ও জালাল কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখায়। লজ্জায় এবং ভয়ে গণধর্ষণের ঘটনা সে কাউকে জানায়নি৷

    নির্যাতনের শিকার কিশোরীর মা জানান, তিনি মেসবাড়িতে রান্না করেন৷ তার স্বামী একজন রিকশাচালক৷ অভাবের সংসারে তার তিন ছেলে ও দুই মেয়ে৷ নির্যাতনের শিকার তার বড় মেয়ে গ্রামের একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী৷ করোনাকালীন সময়ে তাকে গ্রাম থেকে শহরে এনে তাদের সাথে রাখেন৷ গত এপ্রিলে ঘটনার সন্ধ্যায় তিনি ও তার স্বামী কাজে বাইরে ছিলেন৷ তার অভিযোগ, আসামি উজ্জ্বল রানা ও তাজেল ইসলাম তার মেয়েকে ধর্ষণ করে এবং সহযোগিতা করেন অন্য তিন আসামি৷

    কান্নাজড়িত কন্ঠে কিশোরীর মা বলেন, ‘আমি একেবারে গরীব মানুষ৷ জামাইডা কামকাইজ ঠিকমতো করে না৷ লকডাউনের মধ্যে এত কষ্টে ছিলাম তাও কোনোদিন মাইয়ারে কামে দেই নাই৷ সারাদিন বাইরে কাম করি৷ তার মইধ্যে এই ঘটনা আমি ধারণাও করি নাই৷ পরশু দিন মাইয়া অসুস্থ হইয়া পড়লে অনেক জোরাজুরির পর এই কথা জানায়৷ পরে হাসপাতালে নিয়া দেখি ৫ মাসের গর্ভবতী৷

    আসামিপক্ষ এ ঘটনার মিমাংসার জন্য চাপ দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, অনেক কষ্ট কইরা মাইয়ারে বড় করছি৷কয়বছর পর বিয়া দিতে চাইছি৷হেই মাইয়ার লগে এমন নির্যাতন৷হেরা কয় মিমাংসা করতে৷ আমি মিমাংসা চাই না, শাস্তি চাই

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ