• ধর্ম

    লাইলাতুল কদর পর্ব-২ মুফতী আঃ কাদের কারিমী

      প্রতিনিধি ২২ এপ্রিল ২০২২ , ৫:৫১:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    আলোকিত ইসলাম ডেস্ক:

    হাজার মাস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো এমন এক হাজার মাস যেই এক হাজার মাসে কদর নেই, এটা একটি হাদীস দ্বারা বুঝা যায়,
    ‏ “‏ رِبَاطُ يَوْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ يَوْمٍ فِيمَا سِوَاهُ مِنَ الْمَنَازِلِ ‏.‏

    রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এক হাজার দিন কাটানোর(যেই দিনগুলোতে সিমান্ত পাহারা নেই) চাইতে এক দিন আল্লাহ্‌ তা’আলার রাস্তায় সীমান্ত পাহারা দেওয়া (বা শত্রুর অপেক্ষায় থাকা) বেশি কল্যাণকর।
    জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৬৬৭

    গ.
    হাজার মাসের চাইতে উত্তম এ জাতীয় দৃষ্টান্ত হাদীসেও পাওয়া যায়।
    حَدَّثَنِي أَوْسُ بْنُ أَوْسٍ الثَّقَفِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ‏ “‏ مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ وَبَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ – كَانَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا ‏.‏

    আওস বিন আওস আস-সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি জুমাআহ্‌র দিন (স্ত্রী সহবাসজনিত) গোসল করলো এবং নিজে গোসল করলো এবং সকাল সকাল যানবাহন ছাড়া পদব্রজে মাসজিদে এসে ইমামের কাছিাকাছি বসলো, মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে খুতবাহ শুনলো এবং অনর্থক কিছু করলো না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের সওম রাখ ও তার রাত জেগে সালাত পড়ার সমান নেকী রয়েছে।
    সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১০৮৭

    ঘ,
    এক হাজার মাস=৮৩ বছর ৪ মাস।

    চার,
    লাইলাতুল কদরের ফজিলত
    حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏”‏‏.‏

    আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত্রি জাগবে, তার পূর্বের গুনাহ্‌ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
    সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৫

    পাচ,
    লাইলাতুল কদর কবে?

    উত্তর-১
    প্রত্যেক বেজোড় রজনীর যে কোন রজনী লাইলাতুল কদর হতে পারে।
    ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ ‏”‏‏.‏

    ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল ক্বদ্‌রের অনুসন্ধান কর।
    সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০১৭

    উত্তর-২
    একুশতম রজনী
    عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فِي تَاسِعَةٍ تَبْقَى وَفِي سَابِعَةٍ تَبْقَى وَفِي خَامِسَةٍ تَبْقَى ‏”‏ ‏.

    ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:ش
    নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকে ‘লাইলাতুল ক্বদর’ অন্বেষণ করো। রমাযানের নয় দিন বাকী থাকতে(একুশতম রজনী), সাত দিন বাকী থাকতে(তেইশতম রজনী) এবং পাঁচদিন বাকী থাকতে(পচিশতম রজনী)।
    সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৩৮১

    উত্তর-৩
    তেইশতম রজনী
    عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُنَيْسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أُرِيتُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ ثُمَّ أُنْسِيتُهَا وَأَرَانِي صُبْحَهَا أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَمُطِرْنَا لَيْلَةَ ثَلاَثٍ وَعِشْرِينَ فَصَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَانْصَرَفَ وَإِنَّ أَثَرَ الْمَاءِ وَالطِّينِ عَلَى جَبْهَتِهِ وَأَنْفِهِ ‏.‏ قَالَ وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُنَيْسٍ يَقُولُ ثَلاَثٍ وَعِشْرِينَ ‏.

    ’আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
    রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে ক্বদ্রের রাত দেখানো হয়েছিল। অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাকে ঐ রাতের ভোর সম্পর্কে স্বপ্ন আরও দেখানো হয়েছে যে, আমি পানি ও কাদার মধ্যে সাজ্দাহ্ করছি। রাবী বলেন, অতএব ২৩ তম রাতে বৃষ্টি হ’ল এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাথে (ফজরের) সলাত আদায় করে যখন ফিরলেন, তখন আমরা তাঁর কপাল ও নাকের ডগায় কাদা ও পানির চিহ্ন দেখতে পেলাম। রাবী ‘আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) বলতেন, তা ছিল ২৩ তম।
    সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৬৬৫

    উত্তর-৪
    চব্বিশ, সাতাইশ, উনত্রিশতম রাত।
    قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ هِيَ فِي الْعَشْرِ، هِيَ فِي تِسْعٍ يَمْضِينَ أَوْ فِي سَبْعٍ يَبْقَيْنَ ‏”‏‏.‏ يَعْنِي لَيْلَةَ الْقَدْرِ‏.‏ قَالَ عَبْدُ الْوَهَّابِ عَنْ أَيُّوبَ‏.‏ وَعَنْ خَالِدٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ الْتَمِسُوا فِي أَرْبَعٍ وَعِشْرِينَ‏.‏

    ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তা শেষ দশকে, তা অতিবাহিত নবম রাতে অথবা অবশিষ্ট সপ্তম রাতে অর্থাৎ লাইলাতুল ক্বাদর। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে অন্য সূত্রে বর্ণিত যে, তোমরা ২৪তম রাতে তালাশ কর।
    সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০২২

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ