• রংপুর বিভাগ

    বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে, ৫০ স্থান ঝুকিপূর্ণ

      প্রতিনিধি ১৮ মে ২০২২ , ১১:০১:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন,-স্টাফ রিপোর্টারঃ

    আর মাত্র দেড় মাস পর মরা তিস্তা ভরায় পরিনত হবে। বন্যায় ভাসবে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০টি গ্রামের এক লাখ মানুষ। দীর্ঘ ৫১বছরে বাঁধটি সংস্কার, মেরামত, সংরক্ষণ না করায় ব্যবহারের অযোগ্য, হুমকির সন্মুখিন ও ৫০টি স্থান ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। গত সোমবার উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল বাধঁটির ২৬ কিলোমিটার পরিদর্শন করে ৩১টি স্থান ঝুকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে।

    গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির ডানতীর কাপাসিয়া ইউনিয়নের কামারজানি হতে বামতীর তারাপুর ইউনিয়নের ঘগেয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার লম্বা। এর মধ্যে প্রায় ৫০টি স্থান ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। উপজেলা শহরের সাথে পূবাঞ্চলের ৮টি ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই বাঁধটি। বর্তমানে বাঁধটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পরায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই ৮টি ইউনিয়নের লোকজন এখন ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে শোভাগঞ্জ ভায়া বালার ছিঁড়া হয়ে উপজেলা শহরে যাতায়াত করছে।

    বেলকা ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রাজেন্দ্র কুমার সরকার জানান, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাঁধটি মেরামত এবং সংস্কার করা হয়নি। সে কারনে র্তমানে বাঁধটি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। গত বছর বন্যায় বেলকা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থান ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তাৎক্ষনিক পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় প্রশাসন বাঁশের প্যালাসাইটিং দিয়ে কোনমতে মেরামত করেছে। বর্তমানে বাঁধটির অবস্থা খুবেই খারাপ। বন্যা আসা মাত্রই ছিঁেড় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাঁধটি ঝুকিপূর্ণ এবং হুমকির সন্মুখিন হওয়ায় বর্তমানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সে কারনে ২০ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা ও জেলা শহর হতে মালামাল এনে ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। বাঁধটি সংস্কার ও মেরামত একান্ত প্রয়োজন।

    বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় ২০টি স্থান বাঁধটির জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন। গত বছর বান্যার সময় তার ইউনিয়নের ১০টি স্থানে বন্যার পানি বাঁধের গর্ত দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। তাৎক্ষনিক মেরামত করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে বাঁধটি মারাত্বক ভাবে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গত এক মাস ধরে বাঁধটির উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সে কারনে কাপাসিয়া, শ্রীপুর, চন্ডিপুর, হরিপুর, কঞ্চিবাড়ি, শান্তিরাম বেলকা ইউনিয়নের লোকজন ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা শহরে যাওয়া আসা করছে।

    উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, গত সোমবার উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বাঁধটির প্রায় ৩১টি স্থান ঝুকিপূর্ণ। বন্যার সময় যে কোন মর্হুতে ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে করে উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সে কারনে আগাম পরিদর্শন পূর্বক মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।

    গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি মেরামত এবং সংস্কারের অভাবে আসলে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিষয়টি তিনি অবগত রয়েছেন। অতিদ্রত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

    স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, বাঁধটি সংস্কার এবং মেরামত জরুরী হয়ে পরেছে। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার জাতীয় সংসদ আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়। বন্যার কবল থেকে বাঁধটি রক্ষার জন্য অতিদ্রত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ