• সারাদেশ

    বন্ধের পথে দেশের পোল্ট্রি শিল্প খামারীরা

      প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১০:০৯:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ মিজানুর রহমান-সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

    সিন্ডিকেটের কারণে ধ্বংসের পথে আমিষ ও প্রোটিনের চাহিদা পুরণে বিশেষ অবদান রাখা দেশের পোলট্রি শিল্প। বার বার লোকসানের কারণে বেশির ভাগ খামারী পুজি হারিয়ে এখন পথে বসেছেন।অনেকে আবার মুরগীর মড়কের কারণে ডিলারের কাছে লাখ লাখ টাকা (বকেয়া )দেনায় খামার বন্ধ রেখেছেন। নতুন করে খামার পরিচালনা করতে হলে আগে ডিলারের পাওনা পরিশোধ করতে হবে, যা সব খামারীর পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা। অন্য দিকে খাদ্য এবং বাচ্চা উৎপাদনকারী কোম্পানীর সিন্ডিকেটও এ জন্য কম দায়ী নয়। তারা কম দামে ডিম কিনে বাচ্চা ফুটিয়ে চড়াদামে বিক্রী করে।

    শ্রেণী ও মৌসুম ভেদে বিভিন্ন প্রজাতীর বাচ্চা বিভিন্ন দামে বিক্রী করে থাকে। যে সময়ে একটা ব্রয়লার ডিম ১৮-২০ টাকা তার বাচ্চার দাম নির্ধারন করা হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। সোনালী ডিম ১৩-১৮ টাকা, তার বাচ্চার দাম ৩৮-৪২ টাকা,লেয়ার ডিম ১৬-২০ টাকা তার বাচ্চার দাম ৪৫-৫০ টাকা। তাছাড়া বাকি ব্যবসার সুবাদে ডিলাররা খামারিদের নিকট বাচ্চা বিক্রীর সময় প্রতিটি বাচ্চা ৩ থেকে ৫ টাকা বেশী দামে বিক্রী করে থাকেন।আবার খাদ্য বিক্রীর সময়ও বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশী দামে বিক্রী করেন।
    এ দিকে মুরগীর রোগ বালাইয়ের কারণে মড়ক শুরু হলে পুরো খামারই ধ্বংস হতে দেখা গেছে।

    রাণীক্ষেত, গাম্বরা, বার্ডফ্লু, কলেরা, সালমোনেলা, করাইজা, ইকোলাই,সিআরডি এবং ডিসেন্ট্রির মত রোগ বালাই খামারে প্রতিনিয়ত লেগেই থাকে। এ সব রোগবালাই দমনে সরকারী পশুসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ও সংশ্লিষ্ট সকলের খামার তদারকি করে পরামর্শ ও সহযোগিতা করার বিধান থাকলেও কেউ তা করেন না। এমনকি খামারীদের সরকারী উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়না। প্রশিক্ষনের জন্য -সি,আই,জি( কমন ইন্টারেস্ট গ্রুপ) মাঝে মধ্যে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করলেও তা যথেষ্ট নয়।

    এদিকে ডিম উৎপাদনের লেয়ার মুরগীর ডিম কমে যাওয়ায় অনেক খামারী লোকসানের মুখে পড়েছেন। খাদ্যের দাম বাড়লেও সে তুলনায় ডিমের দাম কম। খাদ্যর দাম তদারকি না করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর ডিমের বাজারে অভিযান চালায় এবং জরিমানা করে। এতে খামারীরা ডিমের নায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদনকারী কোম্পানী গুলো কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে মাঝে মাঝেই খাদ্যের দাম বাড়িয়েই চলেছে।

    তারা খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম কাচা মাল সোয়াবিন ও ভুট্টা বিদেশ থেকে আমদানীর কথা বলে থাকেন। অথচ রাশিয়া থেকে আমদানী করা ভুট্টার দাম বেশি বলা হলেও বাংলাদেশী চাষীরা ভুট্টার ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত। সেখানে ভোক্তা অধিকারের মাথা ব্যথা নেই। খোজ নিয়ে জানা গেছে – সারা দেশের মতো সিরাজগন্জের সব উপজেলার বেশীর ভাগ খামারী লোকসানের কারণে খামার বন্ধ রেখেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে আমিষ ও প্রোটিনের চাহিদা পুরুণে দেশের পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় সরকারী বেসরকারী সকলের সমন্বিত উদ্যোগ ও আশু প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ