• আইন ও আদালত

    ভূয়া বিল ভাউচার ও নথি-পত্র প্রস্তুতে বিলম্ব হওয়ায় নাজিরকে ইউএনও’র মারধর ও গুলি বর্ষণ

      প্রতিনিধি ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ২:৫২:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

    মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

    মুজিব বর্ষে আশ্রয়হীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরের ভ্য়া বিল ভাউচার, অনিয়ম -দুর্নীতি ও অনৈতিক কাজের ফাইল প্রস্তুতে বিলম্ব হওয়ায় রাঙ্গাবলীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান আবারও এক কর্মচারীকে (অফিস সহকারী) মারধর করে অজ্ঞান করেছেন। আতংক ও ভীতিকর পরিবেশ
    সৃষ্টি করতে নিজের পিস্তল দিয়ে করেছেন ৪ রাউন্ড গুলি বর্ষণও। গুরুত্বর আহত আবস্থায় রফিকুল ইসলামকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও আতংক এবং ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পুরো রাঙ্গাবালীতে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

    এব্যাপারে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেনে। ইউএনও’র কার্যালয়ে এখন কর্মকর্তা শূন্য রয়েছে।পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের নিকট ২৩ ফেব্রুয়ারী লিখিত অভিযোগে হামলার শিকার অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গাবালি উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান বদলী জনিত কারনে মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী কতৃক আশ্রায়ন প্রকল্পে গরীবদের মাঝে বিতরণকৃত ঘরের সকল মালামাল নিজেই ক্রয় এবং নিজের লোক দিয়ে নির্মানকাজ সম্পন্ন করতেন। ঘরের এসব মালামালের ভ্থয়া বিল ভাউচার প্রস্তুত ও প্রকল্প সংক্রান্ত নতি-পত্র,ক্যাশ বই, চেক বইসহ সব ধরনের
    কাজ তিনি নিজেই করতেন, নিজেই লিখতেন এবং নিজ হাতে টাকা উত্তোলণ করতেন।

    বদলী কালীন সময়ে বিগত দিনের এসব বিল ভাউচার প্রস্তুত ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সকল অনৈতিক কাজের স্বাক্ষী নৈশ্য প্রহরী মশিউরকে চাকুরিচ্যুত করার রিপোর্ট প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলে দীর্ঘ দিনের জমানো এসকল ফাইলের রিপোর্ট ও নথি-পত্র প্রস্তুতে বিলম্ব এবং ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্রাম ও ভি আই পি অতিথিদের আপ্যায়ন বাবদ দোকানে বকেয়া থাকা ১২ লাখ টাকা পরিশোধের কথা বললে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারী বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পরিষদের ডরমেটোরিয়ামে দোতলায় নেশাগ্রস্থ অবস্থায় কর্মকর্তাদের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে সিড়ির দিয়ে ফেলে দিলে রফিকুল ইসলামম মারাত্মক আহত হন এবং বাম হাত মচকে যায়। আতংক ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার নিজের পিস্তল
    দিয়ে ৪ রাউন্ড গুলি বর্ষণও করেন। অজ্ঞান অবস্থায় তাকে অন্যান্য কর্মচারী ও স্থানীয়রা,

    উদ্ধর করে আহতকে ছোট বাইশদিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের উপ-সহকারী ডাঃ ফিরোজ এর নিকট নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এসময় তার অবস্থার আরো অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পটুয়াখালীতে রেফার করলে ২২ ফেব্রুয়ারী রাতেই তাকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের ১৪ নম্বর কিবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

    এঘটনায় উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝেই নয়, পুরো জেলা
    প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। অনেক
    কর্মকর্তা –কর্মচারী হত্বিহল হয়ে পড়েছেন। অনেকে আবার বাড়তি ঝামেলা
    এড়াতে অফিস ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলায়
    এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও
    স্থানীয়রা জানান,পটুয়াখালীর মূল ভ্থ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন উপজেলা রাঙ্গাবালী। এই
    উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মাশফাকুর রহমান ২০১৯ সালের
    ২০ ফেব্রুয়ারী যোগদান করেন । যোগদানের পর থেকেই তিনি কোন কিছুর
    তোয়াক্কা না করে ধরাকে সরা জ্ঞান করে সব কিছু নিজের মত করে চালাতে থাকেন।
    বিচ্ছিন্ন চর এলাকা হওয়ায় প্রশাসনের উচ্চ মহলের অগোচরে থেকে যায়
    সবকিছ্থ। এই সুযোগে তিনি সকল অনিয়ম ও দুর্নীতিকে নিয়মে পরিনত করেন।
    মুজিব বর্ষের ঘর বিতরণে ২০/৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ গ্রহন , টি আর,
    কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। তার
    এসব দুনর্ীতির বিরুদ্ধে যাতে কেউ মুখ খুলতে সাহস না করে সেই জন্য তিনি
    সবার উপর স্টিম রোলার চালাতে থাকেন। পান থেকে চুন খসলেই তিনি পরিষদের
    কর্মচারীদের বাপ-মা তুলে গালি গালাজ করে ক্ষ্যান্ত হননা । গায়েও হাত তুলতেন।
    নিজের পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। গত ২৪ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান, রাঙ্গাবালী উপজেলা
    পরিষদের নৈশ্য প্রহরী মশিউর রহমানকেও প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় শতশত মানুষের
    সামনে মারধর করে মারাত্বক জখম করে। এসময় তাকেও হাসপাতাল পর্যন্ত ভর্তি হতে
    হয়। পরবর্তীতে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে এঘটনা রফাদফা হয়। এর আগে গত১ বছর
    আগে রমজান মাসে মালি আবু হানিফ ও এমএলএসএস ফেরদাউসকে মারধর করেছে
    বলে এক প্রত্যক্ষ দশর্ী জানান। এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চান আহত নাজির রফিকুল
    ইসলাম।

    ২২ ফেব্রুয়ারী নাজিরকে মারধরের ঘটনায় উপজেলা প্রকোশল অধিদপ্তারের এক
    কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,ইউএনও এর বিষয়তো তাই এনিয়ে
    কেউ মুখ খুলতে চান না,বুজেনইতো ভাই

    এ বিষয় রাঙ্গাবালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ দেওয়ান জগলুল হাসান দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠ,ও দৈনিক বরিশাল সমাচারকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ছিল,তবে এঘটনায় কেউ এখন অভিযোগ করেনি,অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।

    এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ জহির মিয়া বলেন, আমি ঘটনার সময়
    চালিতা বুনিয়ায় একটি মিলাদে ছিলাম, আমি ওভার টেলিফোনে মারধর ও গুলি বর্ষনের ঘটন শুনেছ্।ি মারধরের শিকার উনাকে( রফিকুল ইসলাম) যে ডাক্তার চিকিৎসা দিয়েছেন তিনিও আমাকে বলেছেন । আমি চাই আসল ঘটনা
    বেরিয়ে আসুক। এ ঘটনা ইতোমধ্যে ডিসি মহোদয়ও অবহিত হয়েছেন, তিনি জেলার সবোর্চ্চ কর্মকর্তা, তিনি কি পদক্ষেপ নেন অমরা ও উপজেলা পরিষদের প্রতিটি কর্মকর্তা এখন তার দিকে তাকিয়ে আছি।

    এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন যুগান্তর ও দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠকে বলেন, অফিসিয়াল যে প্রসেস আছে, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।

    এঘটনার ব্যাপারে রাঙ্গাবালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমানের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সব কয়টি নম্বর
    (০১৬৩৬৪৪৪৪৪৪৪.০১৭১২৯৯৯৫৯১২,০১৭৩৩৩৩৪১৫৭)বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য
    জানা যায়নি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ