• বরিশাল বিভাগ

    স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তেই নির্বাচন করতে চান অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক

      প্রতিনিধি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৬:৪৯:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    বরগুনা প্রতিনিধি:

    বরগুনা-২(বেতাগী-বামনা-পাথরঘাটা) আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক। শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় স্মার্ট বরগুনা গড়ার লক্ষ্যে এমপি প্রার্থী হওয়ার জন্য এলাকাবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

    অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের খ্যাতিমান আইনজীবী ও বিশিষ্ট লেখক। ‘নিষিদ্ধ কথা’, ‘খোকা থেকে জাতির পিতা’, ‘বাংলার সর্বনাশের ঘণ্টা’, ‘মূখ্যমন্ত্রীর অভ্যুত্থান’, ‘রাজনীতির ফিনিক্স পাখি শেখ হাদিনা’ মতো উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসহ তার বহু রচনা ও সম্পাদনা গ্রন্থ রয়েছে। এই নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। কর্ম সূত্রে ঢাকায় থাকলেও এলাকায় বেশ গুরুত্ব রয়েছে তার।

    স্থানীয়রা জানান, অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক বিভিন্ন সময় বরগুনা (বেতাগী-বামনা-পাথরঘাটা) জেলার পিছিয়ে পড়া মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য দেশীয় প্রজাতির মৎস্য ও শামুক সংরক্ষণ প্রকল্পে বরগুনা জেলাকে অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য গোপালগঞ্জ মৎস্য চাষি সমিতি গঠন করেন। ফলে এখন এ সমিতির তদারকিতে শত শত মৎস্য চাষি উপকৃত হচ্ছে। ছাগল-গরু পালন, ভ্যান-দোকান, জাল, ও পোনা চাষের সুবিধা পাচ্ছে। বিশেষ করে বেতাগীতে প্রথম গ্রামীণ টাওয়ার এবং ওয়াইফাই টাওয়ার মশিউর মালেকের পরামর্শে স্থাপিত হয়। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এলাকার নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।

    জানা গেছে, অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক ১৯৭১ সালে বেতাগী বন্দরের খালে মুক্তিযোদ্ধাদের নৌকায় রান্না করা খাবার, চাল, ডাল সরবরাহ করেন এবং তার পিতা মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থ সহায়তা করা সহ সংবাদ সরবরাহ করতেন। মুক্তিযুদ্ধোত্তরকালে বেতাগী বন্দরে তাদের বাড়িতে ই প্রথম ত্রাণ ও পূনর্বাসনের কাজ শুরু করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৭২ সালে মাত্র দশ বছর বয়সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্যপদ গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে বেতাগী হাইস্কুলে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে নাট্য বিভাগীয় সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে এসডিও সিরাজুদ্দিন সাহেবের নেতৃত্বে বরগুনা শহরে প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালে বেতাগী থানা শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

    এ সময় জিয়াউর রহমানকে একনায়ক বলে প্রতিবাদ মিছিল করায় পুলিশ আটক করতে চাইলে ছাত্ররা থানা ঘেরাও করে মুক্ত করে। ১৯৮৬-৮৮ সালে ছাত্রলীগের সুলতান-রহমান পরিষদে জাতীয় পরিষদের সদস্য হন। ১৯৯১-তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বেতাগী থানার সমাজসেবা সম্পাদক হন। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদ’র কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা মহানগরের আইন সম্পাদকের পদ পান। এ ছাড়া ২০০২ সালে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে ২০১৬ এর নভেম্বর পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

    অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক বরগুনার বেতাগী সদরের পূর্ব বেতাগীর সম্ব্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আগা বাকের খানের অধস্তন বংশের সন্তান এছমাইল হাওলাদার বেতাগী বন্দরে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। পাকিস্তান আমলে বরগুনা মহাকুমায় একমাত্র সুপোরি রপ্তানিকারক ছিলেন তিনি। মা সোনাবরু বিবি মোকামিয়ার নায়েব পরিবার মৃধা পরিবারের সন্তান ছিলেন। মশিউর মালেকের ফুলঝুরিতে গুলিশাখালী ও নিশানবাড়িয়ায় রয়েছে বাড়ি। এছাড়াও পাথরঘাটা উপজেলায় তাদের বংশের অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে।

    তিনি অত্যন্ত মেধাবী। অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে ১৯৭৭ সালে এসএসসি ও ১৯৭৯ এইচএসসি পাশ করেন। ৮০-৮৫ সালে বরিশাল বিএম কলেজে রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতক সম্মান অধ্যয়ন শেষে অর্থনৈতিক কারণে লেখাপড়ায় ছেদ ঘটলেও মেধাবী মশিউর মালেক একই সঙ্গে ১৯৯০ সালে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ও ১৯৯১ সালে আইন শাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি ২০১০ সাল থেকে দুই বছর ইতালির রোমে তরভেগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মতত্ত্বে ‘শান্তি’র ওপর গবেষণা করেন এবং ২০২০ সালে ‘আত্মতুষ্টি ও শান্তি’ থিসিসে আমেরিকার ফোর্ড জোন্স বিশ্ববিদ্যায়ের বহির্বিভাগীয় ছাত্র হিসেবে (অফক্যাম্পাস) পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

    অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক ইত্তেফাককে জানান, দেশরত্ন শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিতের জন্যই তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বলেন, তাকে দলীয় প্রতীক নৌকা দেওয়া হলে নিরঙ্কুশভাবে আওয়ামী লীগ বরগুনা-২ (বেতাগী-বামনা-পাথরঘাটা) আসনে অন্য যেকোন প্রার্থীর চেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন।

    তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, এ আসনে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুল ইসলাম মনি বিএনপি বা স্বতন্ত্র হিসেবে অত্যন্ত শক্তিশালী। তাকে হারাতে হলে একমাত্র তার পক্ষেই সম্ভব। তা ছাড়া মনির মতো প্রার্থীকে হারানোর জন্য তার রয়েছে বেতাগী উপজেলায় নৌকার একচেটিয়া ভোটব্যাংক এবং পাথরঘাটায় সমান গ্রহণযোগ্যতা। যা আওয়ামী লীগের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কারো নেই। এ ছাড়া বেতাগীর মানুষকে তিনি ছাড়া অন্য কেউ ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে না।

    তিনি আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছাত্র জীবনেই ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ৭৫ এর পর থেকে তার ভূমিকা এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন আইনি লড়াই করে আওয়ামী রাজনীতি ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠায় যে ভূমিকা তিনি রেখেছেন তাতে তিনি আশাবাদী দল এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাকে অবশ্যই মূল্যায়ন করে মনোনয়ন দেবেন। স্থানীয়দের দাবি, অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেকের মতো সৎ, সাহসী ও নির্মোহ ব্যক্তিকে আরও আগেই মনোনয়ন দেওয়া উচিত ছিল।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ