• আইন ও আদালত

    সাংবাদিক পরিচয়ে পিডিবির লাইনম্যানের প্রতারণা

      প্রতিনিধি ৩০ জানুয়ারি ২০২২ , ৫:৪১:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    রাকিবুল হাসান আহাদ-বিশেষ প্রতিনিধিঃ

    জাহাঙ্গীর আলম বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধলা বাজার স্কুলের পাশে। পেশায় গফরগাঁও পিডিবি অফিসের লাইনম্যান । নিজেকে পরিচয় দেন পত্রিকা বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবেও । সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে সাদাব্যস্ত থাকেন পুরোদস্তর ভদ্রলোকবেশী এই জাহাঙ্গীর আলম । বোঝার কোন উপায় নেই যে, তিনি একজন প্রতারক। মূলত প্রতারণাই তার পেশা। প্রতারণা করেই প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন অসহায় সহজ সরল বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মোটা অংকের টাকা । পরকিয়া করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে বাধ্য হয়েছেন এক নারীর সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে। তার প্রতারণার কবল থেকে রক্ষা পাননি নিজের বোনের স্বামীও । তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গেছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও ডেমরা থানা পর্যন্ত । ত্রিশাল থানাতেও রয়েছে অভিযোগ । এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশী তদন্ত চলছে । তার কর্মকান্ডে চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন ভূক্তভোগীরা।

    অভিযোগ, পিডিবির লাইানম্যান জাহাঙ্গীর আলম প্রথম বিয়ে করেন, ঈশ্বরগঞ্জের চরাঞ্চলে । এই স্ত্রীর ঘরে রয়েছে একটি পুত্র সন্তান । ত্রিশালের ধলার বাসিন্দা এক ভদ্রলোকের স্ত্রীর সাথে তার পরকিয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে গণধোলাই দেয় । ধলা রেলস্টেশন সংলগ্ন তার বাড়ি । পিডিবির লাইনম্যান হিসাবে জাহাঙ্গীর নিয়ন্ত্রণ করেন ৬শ’ গ্রাহকের বৈদ্যুতিক পিডিবির মিটার । এইসব গ্রহকদের মিটারে বিল বেশি উঠলে উৎকোচ বা ঘুষ নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম তা কমিয়ে দেন । এছাড়াও বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ , খুঁটি স্থাপন করার কথা বলে গ্রাহকদের নিকট থেকে টাকা নেন । সুবিধাবঞ্চিত কারর পর সেই টাকা আত্বসাত করেন । ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেন । জাহাঙ্গীর প্রতিদিন তার সহযোগীদের নিয়ে ধলা বাজারে ইয়াবা আড্ডায় মত্ত হন । তার নিয়ন্ত্রণে ধলা বাজারে নিয়ন্ত্রিত হয় বেশকিছু সিসি ক্যামেরা ।

    স্থানীয় আব্দুল ওয়াদুদ জানান, আমি তার বোনকে বিয়ে করি । সে ও তার বোন ব্যবসার কথা বলে ২০ লাখ টাকা নেয় । টাকা চাইতে গেলে তার বোনকে প্রভাবিত করে আমার বিরুদ্ধে মামলা এবং আমাকে ডিভোর্স দেন । এই মামলায় আমার হাজতবাস হয় । আমার সন্তান আছে । সন্তানকেও জিম্মী করে রেখেছে ।স্থানীয় আব্দুল কদ্দুস জানান, জাহাঙ্গীরকে ভাল মনে করতাম । রেল লাইানের পাশে আরেকজনের স্ত্রীর সাথে পরকিয়া করে । গতবছর এলকাবাসী ধরে গণপিটুনি দিয়ে বিয়ে করিয়ে দেয় নারীর সাথে । মেয়েটির আগেও কয়েকবার বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেয় । এলাকাবাসীর দাবী, সুন্দরি মেয়েদের ফুসলিয়ে ভূলিয়ে ভালিয়ে প্রথমে নিজে ভোগ করে পরে অন্যদের দেয় জাহাঙ্গীর । পরে সুযোগ বুঝে ঐমেয়েদের দেহ ব্যবসা করাতে বাধ্য করেন । গত বছর একজন স্বনামধন্য এক সাংবাদিকের সাথে কাজ করত এই জাহাঙ্গির । পরে হঠাৎ করে বিডি২৪ ক্রাইম নামের পত্রিকা খুলে ঢাকার কেরানিগঞ্জ ঠিকানা দেখিয়ে ভূয়া ঠিকানা ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ এই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ।

    পত্রিকাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে সে । বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আহমদ আবু জাফরের নামেও অপপ্রচার চালাচ্ছে এই জাঙ্গাঙ্গীর । তার বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহের সিনিয়র সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, জাহাঙ্গীর সহজ সরল টাইপের মানুষ । তার সরলতার সুযোগ নিয়ে মানুষ তাকে ব্যবহার করে । তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বিষয়ে আমার জানা নেই । তবে জাহাঙ্গীর সম্পাদক হলো কি করে প্রশ্ন করেন তিনি । তবে, সাংবাদিকদের মধ্যে কাদা ছোড়াছোড়ি কাম্য নয় ।
    ত্রিশালের এক সাংবাদিক জানান, প্রায় প্রতিদিনই দেখি, সুন্দরি নারীদের নিয়ে ঘোরাফেরা করতে জাহাঙ্গীরকে। ঢাল হিসাবে ঐসব নারীদের ব্যবহার করেন তিনি ।

    ত্রিশাল থানার উপ পরিদশৃক(এসআই) আনিছুর রহমান জানান, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ রয়েছে । তদন্তে তার পত্রিকার কোন কাগপত্র দেখাতে পারেননি তিনি । স্থানীয় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দরাও তাকে চেনেন না বলে সাংবাদিকরা জানিয়েছেন । বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ।ঢাকার ডেমরা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আহাদ জানান, ভুয়া পত্রিকার সম্পাদক জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ঢাকার বিজ্ঞ আদালতে সাইবার আ্যাক্টে অভিযোগ নং- ২৫৬/২০২১ তদন্ত করছি । ফেসবুকে তার নামে একাধিক আইডি রয়েছে । যা তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ