• আইন ও আদালত

    পত্নীতলা এস আর অফিসে সক্রিয় জ্বালিয়াতচক্র

      প্রতিনিধি ৩ আগস্ট ২০২২ , ৭:০০:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    নওগাঁর পত্নীতলা এস আর ( সাব-রেজিষ্ট্রী) অফিসের এক দলিল লেখক মৃত ব্যাক্তিকে জিবিত দেখিয়ে জমি রেজিষ্ট্রী করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। উক্ত দলিল লেখক নজিপুর সদর হরিরাম পুরের হাফেজ উদ্দিনের ছেলে ফয়জুল হক, যার লাইসেন্স নাম্বার ১৬৫। উক্ত দলিল লেখক ফয়জুল এর বিরুদ্ধে এই ধরনের অপকর্মের বহু প্রমাণ আমাদের হাতে আছে কিন্তু অজানা কোন কারণে সে ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উক্ত দলিলের দাতা শ্রী সুব্রত কুমার দাস ২৫৮১/২০১৯ নাম্বার দলিলে ২২-০৫-২০১৯ তারিখে গ্রহিতা সুরাইয়া বানু পিতা জহির উদ্দিন, মাতা মোরশেদা, গ্রামঃচক গোবিন্দ, ইউনিয়নঃ কৃষ্ণপুর, পত্নীতলা জেলাঃ নওগাঁকে আরএস খতিয়ান ৬৪, এসএ দাগ-১৫৯, আরএস দাগ- ৫৪২ ধানি ৪১ শতাংশের মধ্যে সোয়া ০৯ শতাংশ জমির মুল্য ৭০,০০০=/ টাকা মুল্যে দুইজন সাক্ষীর সাক্ষর ও একজন সেনাক্তকারীর নাম পাওয়া যায়।

    সাক্ষী হিসাবে প্রথম আঃ সালাম পিতা মৃত রহিম, মাতা ছামেনা গ্রামঃ কৃষ্ণরামপুর, অপর সাক্ষী আঃ আলিম পিতা মৃত কাশেম, মাতাঃ হাওয়া, গ্রামঃ নেপালপুর উপজেলাঃ পত্নীতলা জেলাঃ নওগাঁ। সনাক্তকারী নাম হিসাবে মনছের আলী, পিতা মৃতঃ ইমাম বক্স, মাতা মৃত্যু আলমন বিবি, গ্রামঃ চকগোবিন্দ, পত্নীতলা নওগাঁ। সনাক্তকারী মোঃ মনসের আলীর সাথে আমাদের প্রতিনিধি সরাসরি কথা বললে সে উক্ত বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানায়। তার কথায় অন্য কেউ কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তার নাম ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি দলিল গ্রহীতা মোসাম্মৎ সুরাইয়া বানু পিতা মৃত জহির উদ্দিনের প্রথম কন্যা সন্তান। উক্ত জহিরের স্ত্রী মোর্শেদার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে সে আমাদের জানায় অন্য কেউ তাদের ফাঁসানোর জন্য উক্ত কাজটি করে থাকতে পারে।

    কথার এক পর্যায়ে এর কারণ ও লাভ কি সে বিষয়ে জানতে চাইলে সে বিশ্বাসযোগ্য কোন সদুত্তর দিতে পারে নাই তবে এখানে একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, মোরশেদার ছোট মেয়ের জামাই মোঃ নুর আমিন সুব্রত দাস সেজে জমি রেজিস্ট্রেশন করেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। সেই সাথে ২০১৯ সালের অনেক আগেই সুব্রত হত্যা মামলার আসামি মৃত জহির উদ্দিন মারা যাওয়ার কথা অন্তত এতোটুকু বুঝা যায় এই জালিয়াতি জহিরের স্ত্রী মোর্শেদা, জমি গ্রহীতা মুসাম্মাৎ সুরাইয়া বানু, ছোট মেয়ের জামাই নুর আমিন এবং ছোট মেয়ে সুমাইয়া বেগম সকলে জেনে শুনেই এই ধরনের কাজটি করেছে বলে স্থানীয় জনগণ জানান। যদিও মোরশেদা উক্ত বিষয়ে জানতে চাওয়ায় কৌশলে এড়িয়ে যান।

    স্থানীয়ভাবে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের কাগজ প্রমাণাদি উপস্থাপন করার কথা থাকলেও আজ নয়তো কাল এভাবে কালক্ষেপণ করে যাচ্ছে এই জালিয়াতচক্রের মূল হোতা মোরশেদা বেওয়া। সুব্রত কুমার দাসের হত্যা মামলা সহ জমি রেজিষ্ট্রী সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলি পুরন করে দেওয়া হয়েছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ কালে জানা যায় শ্রী সুব্রত কুমার দাস ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসের কোন একদিন হঠাৎ করে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের সাত দিন পর বস্তা বন্দি অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করে পত্নীতলা থানা পুলিশ। পরনের হাফ সোয়েটার ও লুঙ্গী দেখে লাশ সনাক্ত করে নিহত সুব্রতের স্ত্রী শ্রমতি বাসনা রানি দাস। ঐদিন শ্রীমতি বাসনা রানি দাস নিজে বাদি হয়ে চারজন নামিয় ও অজ্ঞাত নামা আসামির নাম দিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

    বিজ্ঞ আদালতে দির্ঘ্য দিন মামলা চলার পরে শামসুল, আঃ খালেক, আজাহারদের যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন এবং বাকি এক আসামি বাবুল হোসেনকে পলাতক হিসাবে সন্দেহাতীত ভাবে মৃত্যদন্ড সাজা প্রদান করেন। যদিও আসামি বাবুল হোসেন রায়ের বিরোদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে উক্ত মামলা হতে অব্যহতি পায়। মামলাটি শেষ হতে যদিও চার বছর সময় লাগে কিন্তু মৃত সুব্রত কুমার দাসের একমাত্র পুত্র সন্তান শ্রী স্বদেশ কুমার দাস (ফেকা) সহ কিছু স্থানীয় জনগনের দেওয়া তথ্য উপাত্ত দিয়ে আমাদের প্রতিনিধিকে সহায়তা করে। ভুক্তভোগীর দাবি ২৬ বছর আগের মৃত ব্যক্তি কিভাবে জমি রেজিষ্ট্রী প্রদান করে।

    এই কাজে সংশ্লিষ্ট সাব- রেজিষ্টার, দলিল লেখক ফয়জুল, সাক্ষি ও সনাক্তকারী সবাই অবৈধ ভাবে টাকার বিনিময়ে মৃতকে জিবিত বানিয়ে আমার জমি ভোগ দখল করতেছে। সে আক্ষেপের সুরেই বলে যেখানে দাতা গ্রহিতার উপস্থিতিতেই জমি রেজিষ্ট্রী করা হয় সেখানে কিভাবে একটু টাকার বিনিময়ে এতবড় অন্যায় করা হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা ও উক্ত কাজে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সেই সাথে জমির প্রকৃত মালিককে যথাযথ প্রমান সাপেক্ষে ফিরিয়ে পাওয়ার আবেদন জানিয়েছে ভুক্তভোগী শ্রী স্বদেশ কুমার দাস ও তার মা শ্রীমতি বাসনা রানী দাস।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ