• ঢাকা বিভাগ

    এবার সংক্রমণের রেড জোন ঢাকা-রাঙামাটি

      প্রতিনিধি ১৩ জানুয়ারি ২০২২ , ৩:৩৩:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও শনাক্তের হিসাবে ঢাকা ও রাঙামাটিকে সংক্রমণের রেড জোন বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলে চিহ্নিত করেছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ।এই দুই জেলায় বর্তমানে সংক্রমণের হার ১০ থেকে ১৯ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

    স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে গত এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ সময়ে নতুন রোগী শনাক্তের হার ১৬৯ শতাংশ বেড়েছে। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত হয়েছে।

    এর আগে মঙ্গলবার বিকালে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে সংক্রমণের পরিস্থিতি বোঝাতে লাল, হলুদ ও সবুজ তিনটি সংকেত দিয়ে উচ্চ ঝুঁকি, মধ্যম ঝুঁকি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার শূন্য থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে থাকলে সবুজ জোন, ৫ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে থাকলে হলুদ জোন। আর ১০ থেকে ১৯ শতাংশের মধ্যে থাকলে রেড জোন বলে ধরা হয়। আর শনাক্তের হার ২০ থেকে ২৯ শতাংশের বেশি হলে সেটিকে গাঢ় লাল বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

    অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকা ও রাঙামাটি জেলা সংক্রমণের রেড জোন অর্থাৎ উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ৬ জেলা এবং কম ঝুঁকি অর্থাৎ সবুজ জোনে রয়েছে দেশের ৫৪ জেলা।গত এক সপ্তাহের তথ্য বিবেচনায় উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ঢাকায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ। রাঙামাটিতে শনাক্তের হার ১০ শতাংশ।হলুদ জোন অর্থাৎ মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় থাকা জেলাগুলো হলো-যশোর, রাজশাহী, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নাটোর ও রংপুর। এছাড়া গ্রিন জোন বা নিম্ন ঝুঁকির সবুজ জোনে রয়েছে ৫৪টি জেলা।

    এগুলো হলো চট্টগ্রাম, বগুড়া, গাজীপুর, কক্সবাজার, কুষ্টিয়া, নীলফামারী, বরগুনা, শেরপুর, মেহেরপুর, ঠাকুরগাঁও, ফেনী, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, পিরোজপুর, বাগেরহাট, নারায়ণগঞ্জ, নওগাঁ, ঝালকাঠি, খুলনা, পটুয়াখালী, কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, ফরিদপুর, বরিশাল, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, সিলেট, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, গাইবান্ধা, শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, খাগড়াছড়ি, ঝিনাইদহ, পাবনা, মাদারীপুর, মাগুরা, সুনামগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, নেত্রকোনা, ভোলা, টাঙ্গাইল, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নড়াইল। এসব জেলায় সংক্রমণের হার শূন্য থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে।

    এদিকে বুধবার দুপুরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, এক সপ্তাহে (৫ থেকে ১১ জানুয়ারি) শনাক্তের হার দ্বিগুণ হয়েছে। ৫ জানুয়ারি শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, সেখানে ১১ জানুয়ারি তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশে।

    তিনি বলেন, দেশে উপসর্গ দেখা দিলে করোনা পরীক্ষা করা জরুরি হলেও অনেকেই পরীক্ষা করাচ্ছেন না। পরীক্ষার পরিমাণ বেশি হলে রোগীর সংখ্যা ও সংক্রমণের হার আরও অনেক বেশি হতো।ডা. রোবেদ আমিন বলেন, গত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। এরপর থেকে সংক্রমণের হার ক্রমাগত বাড়ছে। কোনো নির্দিষ্ট ধারায় তা বৃদ্ধি পাচ্ছে না, যা খুবই আতঙ্কের বিষয়।

    তিনি বলেন, জেলাভিত্তিক হিসাবে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর পরই রয়েছে চট্টগ্রাম, সেখানে ১ লাখ ১ হাজার ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রামেও শনাক্তের হার বাড়ছে। এরপর রয়েছে কুমিল্লা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, খুলনা, ফরিদপুর, বগুড়া, কক্সবাজার।

    তিনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ছে। হঠাৎ করে মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ধরে নিতে হবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে করোনা পরীক্ষা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে দেড় লাখেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হিসাবে পূর্ববর্তী সপ্তাহের চেয়ে ৬ হাজারেরও বেশি (১৬৯ শতাংশের বেশি) রোগী শনাক্ত হয়েছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ