প্রতিনিধি ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৯:৫৮:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মু,হেলাল আহম্মেদ রিপন-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ৭৯ নং পূর্ব লামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক নারী সহকারী শিক্ষিকা এক মাসের ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে গিয়ে এক বছর ধরে সেখানে বসবাস করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার অনুপস্থিতিতে তার ক্লাসগুলো নিতে হচ্ছে অন্য শিক্ষকদের। এতে তাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে বলে অভিযোগ একাধিক শিক্ষকদের।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গলাচিপা উপজেলার ৭৯ পূর্ব লামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিক শারমিন আক্তার লিজা ৩০ দিনের চিকিৎসা জনিত ছুটি নিয়ে বিদেশে যান। সেই ছুটি শেষ হয়ে এক বছর পার হলেও তিনি এখনও বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। কিন্তু তার চাকরি এখনও বহাল আছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবগত করা হলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অদৃশ্য কারনে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহতসহ শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।ওই বিদ্যালয়ের দেড়শতাধিক ছাত্রছাত্রীর জন্য প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ছয়জন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, শারমিন লিজা মূলত অসুস্থতার অজুহাতে লন্ডনে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। পাশাপাশি চাকরিও করছেন। এ ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান শিক্ষকসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসার অবগত এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও তারাই ম্যানেজ করে রেখেছেন।
এ বিষয়ে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হেলেনা বেগম দৈনিক বরিশাল সমাচারকে বলেন, লিজা ম্যাডাম গত বছর আগষ্ট মাসের দশ তারিখ এক মাসের ছুটির আবেদন করে পনের আগষ্ট বিদেশের উদ্দেশ্য গেছেন। কিন্তু এখন এক বছর হয়ে গেল, তার কোনো খোঁজ-খবর নেই। বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে একাধিকবার জানানো হলেও এখনো কোন ব্যাবস্থা নেননি। তবে তারা ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্কুলের সহকারি শিক্ষক মোঃ ফরিদ খান বলেন,এক শিপ্টের স্কুলে একসাথেই ছয়টি ক্লাস হয়। আমরা ছয়জন শিক্ষক একটানা পাঠদান করলে শেষের ক্লাসগুলোতে খুব টায়ার্ড বোধ করি। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে স্কুলের বাইরে থাকলে বাকী পাঁচজনে কোনভাবেই পাঠদান করা সম্ভব নয়। তাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান আশাকরি অভিযুক্ত শিক্ষিকা শারমিন লিজার বাড়িতে গেলে শারমিন লিজার মা জানান, তার মেয়ে লিজা হেড মাষ্টারসহ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ছুটি নিয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য ষ্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডন গেছে।
এ বছরের জানুয়ারিতে দেশে ফিরবেন। এর বাইরে আমি কিছু জানিনা।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষিকা শারমিন লিজার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিনিধির মুঠোফোনে জানান, আমি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ছুটি নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছি। চাকরি বহাল থাকায় শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন লন্ডনে আসতে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিতে হয়েছে আর তাই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে আসতে পারিনি।
আমার মা সহজ সরল মানুষ তিনি না বুঝে বলে ফেলেছেন আমি এ বছর দেশে ফিরবো। দু এক দিনের মধ্যেই আমার বোন অফিসে যোগাযোগ করে ইস্তফাপত্র দিয়ে আসবে তাই তিনি নিউজ না করতে অনুরোধ করেন।এ ব্যপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বক্তিয়ার রহমান বলেন, আমি গত মাসে শারমিন লিজার অনপুস্থিতির বিষয়ে জানতে পেরেছি এবং বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। নিতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া এতোদিনেও ব্যাবস্থা না নেয়র বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহনের কথা জানান তারা।