• আমার দেশ

    ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষে বাংলাদেশ-আলোকিত ৭১ সংবাদ

      প্রতিনিধি ১২ এপ্রিল ২০২২ , ৬:৫৫:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    গত চার বছরে ইলিশ উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্বে মোট ইলিশের উৎপাদনের হার ৬৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৬ শতাংশ। এটি অবাক করা উন্নতি। স্পষ্ট যে সরকারের নানা পরিকল্পিত পদক্ষেপের ফলে ধারাবাহিকভাবে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। সঙ্গত কারণেই ইলিশ উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশও বর্তমানে বাংলাদেশকে ইলিশ উৎপাদনের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করছে। এখন ইলিশ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনার জন্য অবকাঠামোগত অগ্রগতিও সাধিত হয়েছে। এ কাজে যুক্ত হয়েছে গবেষণা জাহাজ। যেটিতে ফিশ ফাইন্ডার, ইকো-সাউন্ডার, নেভিগেশন এবং অত্যাধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদি, ইলিশ গবেষণা ল্যাবরেটরি, নেটিং সিস্টেম, পোর্টেবল মিনি হ্যাচারিসহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। আশা করা যায় ইলিশের গবেষণালব্ধ ফলাফল আগামীতে নতুন নতুন প্রজনন ক্ষেত্র, বিচরণ পথ নির্ধারণ করে ইলিশের উৎপাদন কাক্সিক্ষত মাত্রায় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

    দারুণ রুপালি ঝিলিক, লোভনীয় রসনা তৃপ্তকর স্বাদ এবং অতিথি আপ্যায়নে বাঙালীর বিশেষ খাদ্য-ঐতিহ্য- সব মিলিয়ে জাতীয় মাছ ইলিশের বিশেষ কদর রয়েছে। শর্ষে ইলিশ, ইলিশ পাতুড়ি, ইলিশ ভাজা- জিভে জল আসার মতোই সব রেসিপি। বাঙালীর ইলিশপ্রেম নিয়ে নানা কথা চালু রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রফতানি আয় বাড়ানো এবং আমিষের চাহিদা মেটানোর জন্য ইলিশের ব্যাপক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের জীবিকার প্রধান উৎসই হচ্ছে ইলিশ। প্রায় ৬ লাখ জেলে ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বঙ্গোপসাগর তীরের ভারত-মিয়ানমার, আরব সাগর তীরের বাহরাইন-কুয়েত, পশ্চিম মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের পাশে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মেকং অববাহিকার ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া, চীন সাগরের পাশে চীন ও থাইল্যান্ডে ইলিশের বিচরণ কমতির দিকে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন প্রতি বছর আট থেকে দশ শতাংশ হারে বেড়েই চলেছে। এ সাফল্য ধরে রাখা চাই।

    ইলিশ উৎপাদনে গতি আনার লক্ষ্যে সরকার বিজ্ঞানসম্মত ও বাস্তবোচিত বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গবেষকগণ কতিপয় সুপারিশও প্রদান করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে আগামী ২-৩ বছর পর্যন্ত প্রতিবছর ৭ দশমিক শূন্য লাখ মে.টনের বেশি ইলিশ আহরণ না করা, প্রতিটি ইলিশকে জীবনচক্রে কমপক্ষে এক বার ডিম ছাড়ার সুযোগ দেয়া, ইলিশের বিচরণ ও প্রজনন ক্ষেত্রকে দূষণের হাত থেকে সুরক্ষা দেয়া ইত্যাদি। আমরা আশা করব ইলিশ উৎপাদনে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে কর্তৃপক্ষ সুপারিশগুলো বিবেচনা করবেন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ