• আমার দেশ

    সুইসাইড নোট উদ্ধার, মৃত্যুর আগে কী লিখে গিয়েছিলেন আত্মহত্যাকারী মহসিন খান?

      প্রতিনিধি ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৯:২৯:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    আরিফুল ইসলাম কারীমী-স্টাফ রিপোর্টারঃ

    গতরাতে ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যাকারী ব্যবসায়ী আবু মহসিন খানের (৫৮) একটা সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে তার লাশের পাশে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. সাজ্জাদুর রহমান সুইসাইড নোটের কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
    বুধবার রাত ৯টার দিকে বাসা থেকে ফেসবুক লাইভে এসে লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন আবু মহসিন। তিনি চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর। পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। থাকতেন ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর ভবনে। নিজের একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি।

    মহসিন খান সুইসাইড নোটে লিখেছেন, ‘ব্যবসায় ধস নেমে যাওয়ায় আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। আমার সঙ্গে অনেকের লেনদেন ছিল। কিন্তু তারা টাকা দেয়নি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’মহসিন খান ২০১৭ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হন, পরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে মাকে নিয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়।এদিকে আত্মহত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন কথা বলেন মহসিন। এর আগে দরজায় সাদা কাগজে লিখেন ‘মামা দরজা খোলা, হাতলের হ্যান্ডেল চাপ দিয়ে ভেতরে ঢুক।’ কাগজটি স্কচটেপ দিয়ে দরজায় লাগানো ছিল।

    লাইভে তিনি বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি ক্যানসার আক্রান্ত। আমার ব্যবসা এখন বন্ধ। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমি বাসায় একাই থাকি। আমার ভয় করে যে, আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না।

    লাইভে মহসিন আরও বলেন, পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামেলিকে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামেলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন লোকজনের কাছে পাঁচ কোটি টাকা পাই।কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও সে টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না।

    এরপর পিস্তলের লাইসেন্স দেখান। বলেন, আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে। আমি চলে যাব। আত্মীয় স্বজন যারা আছো, যেহেতু বাবাও আমাকে জায়গাটা দেয়নি, আমি যে কবরস্থানটা করেছি সেখানে আমাকে দাফন করো না। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে একটি কবরস্থান হয়েছে, সেখানে তোমরা আমাকে দাফন করে দিও। প্রত্যেকটা লোক আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমার বাবা, মা, ভাইরা, প্রত্যেকটা লোক, এভরিওয়ান।

    লাইভে কথা বলার সময় তার সামনে টেবিল ছিল। ওই টেবিলে কাফনের কাপড় ছিল। এর ওপর একটি চিরকুট ছিল; তাতে লেখা আছে, এখানে কাফনের কাপড় রাখা আছে। যা আমি ওমরা হজে ব্যবহার করেছিলাম। যারা দেখছেন, তাদের সাথে এটাই শেষ দেখা।সবাই ভালো থাকবেন। এভাবে ১৫ মিনিটি কথা বলে ১৬ মিনিটের সময় নিজের মাথায় গুলি করে মহসিন। কালেমা পড়তে পড়তে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ