• আন্তর্জাতিক

    ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যোদ্ধা প্রেরণ করতে হবে-মুফতি ফয়জুল করীম

      প্রতিনিধি ১০ মে ২০২৪ , ১০:০০:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    আঃ কাদের কারিমী-বরিশাল জেলা প্রতিনিধি:

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের মজলুম জনতার পক্ষে লড়াই করার জন্য যোদ্ধাদের তালিকা করতে হবে। তালিকা তৈরি করে তাদেরকে বিশ্বসন্ত্রাসী ইহুদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রেরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে সরকার আন্তরিক না হলে জনতা স্পষ্ট ধরে নেবে এ সরকার উপরে ফিলিস্তিনের জন্য মায়াকান্না করে ভেতরে ভেতরে ইসরায়েলের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করছে। সরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে আছে এটা দেখানোর জন্য ছাত্রলীগকে মাঠে নামিয়েছে, অপরদিকে পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরাইল তুলে দিয়ে ইসরাইলের সাথে তলে তলে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তিনি ইসরাইলের বর্বরতার প্রতিবাদে আগামি ১৭ মে শুক্রবার সারাদেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

    আজ ১০ মে শুক্রবার বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ফিলিস্তনে অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ডা. শহীদুল ইসলাম, ইলিয়াস হাসান, প্রফেসর বাকি বিল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, হাফেজ শাহাদাত হোসাইন, শফিকুল ইসলাম, শওকত উসমান, সাইফ মুহাম্মদ আলাউদ্দিন প্রমুখ। প্রচন্ড তাবদাহ উপেক্ষা করে ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঈমানদার জনতা রাজপথে ইসরাইল বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগানে ফেটে পড়েন।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি ফয়জুল করীম আরও বলেন, ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। বর্বর ইসরাইল চাপিয়ে দেওয়া একটি জারজ রাষ্ট্র। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসরাইলি পণ্য বয়কট নয়, আমদানি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের বাজারে ইসরায়েল ও তাদের দোসর ভারতের পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, দখলদার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাঈল শুধু আজকেই নয় বরং তারা ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপরে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলায় কয়েক লক্ষ মানুষকে তারা শহীদ করেছে। বিশেষ করে বিগত ৭ মাসে ইসরাঈল ফিলিস্তিনের গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে তা অকল্পনীয়। এই ক’মাসেই প্রায় চল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। ইসরায়েলের বর্বর হামলায় স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জাসহ কোন স্থাপনায় বাদ যাচ্ছেনা। এই গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। একইসাথে অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলী এই বর্বর হামলা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি জাতিসংঘ, আন্তজার্তিক সংস্থা এবং মুসলিমবিশ্বের মোড়লদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

    ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের গোলামি করছে। সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশের নিরীহ আদম সন্তান হত্যা করছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদটুকু করারও সাহস করছে না। তিনি বলেন, উগ্রবাদি হিন্দুরা ফরিদপুরের মধুখালিতে দুই সহোদর ভারইকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করার দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো খুনিরা ধরাছোয়ার বাইরে। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে শীঘ্রই ফরিদপুরে বিশাল গণসমাবেশের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতার লোভে সন্ত্রাসী ইসরাইলকে বন্ধু বানাতেও কুন্ঠাবোধ করছে না। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইসলাম ও মুসলমানদের চিরশত্রু ইহুদিদের সাথে গোপনে আতাত করে চলছে। আমরা মানবতার পক্ষে, মজলুমের পক্ষে, জালেমের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। দেশীয় ও বিদেশী সকল শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম, আছি এবং থাকবো, ইনশাআল্লাহ।

    সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, বিশ্বসন্ত্রাসী ইসরাইলের পণ্য বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসরাইল ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। আল-আকসা সমগ্র উম্মাহর সম্পদ। এটি রক্ষার দায়িত্ব শুধু ফিলিস্তিনিদের নয়। গোটা মুসলিমবিশ্বকে আল-আকসা রক্ষায় অস্ত্র হাতে মাঠে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। তিনি আরও বলেন, সংসদ নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখান করেছে, উপজেলা নির্বাচনও জনগণ বর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী হলেন বর্জিত প্রধানমন্ত্রী। বর্জিত প্রধানমন্ত্রীকে জনগণ আর এক মুহূর্তের জন্যও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে গণমাধ্যমে নিউজ আসার পর প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে পরোক্ষভাবে সিন্ডিকাটারদের পক্ষাবলম্বন করেছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করেছেন। পরে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম, পল্টন মোড়, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় পল্টন মোড়ে এসে মুনাজাতের মাধ্যমে মিছিলের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ