• Uncategorized

    সরাইলে উপজেলার অরুয়াইল গ্রামের মৃত্যুপথযাত্রী মানুষটির শেষ স্থান কোথাই?  কবরস্থানে নাকি , শ্মশানে?

      প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৬:০৭:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল এলাকায় মৃত্যুপথযাত্রী এক বাকপ্রতিবন্ধী ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন স্থানীয় কিছু লোক; যারা এই মুমূর্ষু লোকটিকে বর্তমানে শ্রয় দিয়ে ভরনপোষণ সহকারে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করছেন।পাকশিমুল এলাকার ব্যবসায়ী আফতাব আহমেদ স্বপন ও তার ভাই নূর আলম মিয়ার তত্ত্বাবধানে সেই বাকপ্রতিবন্ধী অসুস্থ মুমূর্ষু লোকটি রয়েছেন।

    ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া ও নুর আলম জানান, এই বাকপ্রতিবন্ধী লোকটি প্রায় ছয় বছর যাবত অসুস্থ। তার নাম কি কেউ জানেন না; সকলেই তাকে ‘বোবা’ বলে ডাকেন। কথা বলতে না পারলেও ইশারা ইঙ্গিতে সব বুঝেন। লোকটির জন্ম সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু পরিবারে। তাদের বাড়ি ছিলো সরাইল উপজেলার অরুয়াইল গ্রামে; বর্তমানে সেখানে তার আপনজন বলতে কেউই নেই।

    তারা আরও জানান, অসুস্থ অবস্থায় লোকটি দীর্ঘদিন যাবত পাকশিমুল বাজারে বিভিন্ন লোকের দোকানের সামনে রাত্রিযাপন করতেন এবং দয়া হলে কেউ খাবার দিলে তা খেয়েই জীবন ধারণ করে আসছিলেন। কিছুদিন আগে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তার দুটো কিডনি চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

    এ অবস্থায় চিকিৎসায় তার স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতির আর আশা নেই এবং তিনি এ দুনিয়ায় আর মাত্র কিছুদিনের অতিথি হিসেবে আছেন; এমন কথা শুনিয়ে চিকিৎসকেরা তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দেন গত তিন দিন আগে।ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া বলেন, অরুয়াইল এলাকার হিন্দু সমাজের কেউ তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক নয়। তাই একজন মানুষ হিসেবে আমিই তার সকল দায়িত্ব নিয়েছি।

    তার খাবার, কাপড়, চিকিৎসার যাবতীয় খরচ আমিই বহন করছি। অনেকেই বলছে তাকে কোথাও ফেলে দিয়ে আসতে; কিন্তু হিন্দু হলেও তিনি একজন মানুষ; আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার জীবনের বাকিটা সময় আমার বাড়িতে নিয়েই রাখবো। গত এক মাসে তার চিকিৎসায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার বাঁচার আর আশা নেই; বাকিটা সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভর।

    স্বপন মিয়া আরও বলেন, বর্তমানে লোকটির শারীরিক অবস্থা খুব আশংকাজনক। কখন কি হয় বলা যায়না। আমরা অরুয়াইল হিন্দু সমাজের নেতাদের কাছে গিয়েছিলাম; উনারা এ লোকের দায়িত্ব নিতে রাজি নন। এ অবস্থায় তিনি মারা গেলে আমরা কি করবো? তিনি তো হিন্দু ধর্মের লোক! তার মরদেহ শ্মশানে দাহ হবে; নাকি আমরা কবরস্থানে দাফন করবো। কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার অরুয়াইল এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা মাষ্টার গোপাল গোপ জানান, ‘আমরা শুনেছি সে (বাকপ্রতিবন্ধী সেই মুমূর্ষু লোকটি) মুসলমান হয়ে গেছে। আমরা এখন কি করবো? বনিয়ারটেক তাদের বাড়ি ছিল। বাপের নাম কাছু দাস। ভাইয়ের নাম রাখাল দাস। এরা কেউ নাই। তার আর কোন আত্মীয় স্বজন আছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখতে বলেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের এই নেতা।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ