• ধর্ম

    লাইলাতুল কদর পর্ব-১ মুফতী আঃ কাদের কারিমী

      প্রতিনিধি ২১ এপ্রিল ২০২২ , ৩:১৬:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    আলোকিত ইসলাম ডেস্ক:

    বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাস হলো রমজান, রমজানের শ্রেষ্ঠ হলো শেষ দশক, আর শেষ দশকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো লাইলাতুল কদর।

    আল্লাহ তায়ালা বলেন,
    اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ فِیۡ لَیۡلَۃِ الۡقَدۡرِ
    নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল ক্বাদরে।

    وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ
    তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ কী?

    لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ۬ۙ خَیۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَہۡرٍ
    ‘লাইলাতুল কদর’ হাজার(যেই এক হাজার মাসে কদর নেই) মাস অপেক্ষা উত্তম।

    تَنَزَّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ فِیۡہَا بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ ۚ مِنۡ کُلِّ اَمۡرٍ
    সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে।

    سَلٰمٌ ۟ۛ هي حَتّٰی مَطۡلَعِ الۡفَجۡرِ
    শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।

    প্রিয় মুসল্লি ভাইয়েরা! কয়েকটি কথা মনে রাখব,
    এক,
    এই সুরা নাযিলের প্রেক্ষাপট,

    উদাহরণ- ১
    বনী ইসরায়েলের এক ব্যাক্তির ব্যাপারে আলোচনা,
    عن مجاهد بن جبر المكي:]
    أنَّ النبيَّ صلّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ ذكر رجلًا من بني إسرائيلَ لبس السلاحَ في سبيلِ اللهِ ألفَ شهرٍ، قال: فعجب المسلمونَ من ذلك، قال: فأنزل اللهُ عزَّ وجلَّ: إِنّا أَنْزَلْناهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ وَما أَدْراكَ ما لَيْلَةُ الْقَدْرِ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ التي لبس فيها ذلك الرجلُ السلاحَ في سبيلِ اللهِ ألفَ شهرٍ
    রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তির আলোচনা করেছেন যে আল্লাহর রাস্তায় এক হাজার মাস লড়াই করেছেন, এতে মুসলমানরা আশ্চর্য হলেন, তখন আল্লাহ এই সুরা নাযিল করলেন।
    السنن الكبرى للبيهقي ٤‏/٣٠٦

    উদাহরণ- ২
    عَنْ عَلِيِّ بْنِ عُرْوَةَ قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمًا أَرْبَعَةً مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، عَبَدُوا اللَّهَ ثَمَانِينَ عَامًا، لَمْ يَعْصوه طَرْفَةَ عَيْنٍ: فَذَكَرَ أَيُّوبَ، وَزَكَرِيَّا، وحزْقيل بْنَ الْعَجُوزِ، وَيُوشَعَ بْنَ نُونٍ -قَالَ: فَعَجِبَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ مِنْ ذَلِكَ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، عَجِبَتْ أُمَّتُكَ مِنْ عِبَادَةِ هَؤُلَاءِ النَّفَرِ ثَمَانِينَ سَنَةً، لَمْ يَعْصُوه طَرْفَةَ عَيْنٍ؛ فَقَدَ أَنْزَلَ اللَّهُ خَيْرًا مِنْ ذَلِكَ. فَقَرَأَ عَلَيْهِ: ﴿إِنَّا أَنزلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ﴾ هَذَا أَفْضَلُ مِمَّا عَجِبْتَ أَنْتَ وَأُمَّتُكَ. قَالَ: فَسُرَّ بِذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ وَالنَّاسَ مَعَهُ
    আলি ইবনে উরওয়াহ থেকে বর্ননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন বনী ইসরায়েলের চার ব্যাক্তির ব্যাপারে আলোচনা করলেন, যারা আশি বছর একাধারে আল্লাহর ইবাদত করেছেন, তারা হলেন যাকারিয়া, আইয়ুব, হিযকিল এবং ইউসা আলাইহিমুস সালাম। এতে সাহাবারা আশ্চর্য হলেন, তখন জীবরাঈল আমিন এসে বললেন হে আল্লাহর রাসূল!আপনার উম্মত এদের ব্যাপারে আশ্চর্য হলো! আপনার এর চেয়ে উত্তম সুরা নাযিল করেছেন। তিনি সুরা কদর শুনিয়ে দিদিলে। ইবনে কাসীর

    দুই,
    লাইলাতুল কদর কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার রাত,
    قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَغَيْرُهُ:
    أَنْزَلَ اللَّهُ الْقُرْآنَ جُمْلَةً وَاحِدَةً مِنَ اللَّوْحِ الْمَحْفُوظِ إِلَى بَيْتِ العِزّة مِنَ السَّمَاءِ الدُّنْيَا، ثُمَّ نَزَلَ مُفَصَّلًا بِحَسْبِ الْوَقَائِعِ فِي ثَلَاثٍ وَعِشْرِينَ سَنَةً على رسول الله صلى الله عليه وسلم
    আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ননা তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা সম্পুর্ন কুরআন লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানের বাইতুল ইজ্জতে অবতীর্ণ করেছেন, অতঃপর সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী তেইশ বছরে পুর্ন কুরআন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অবতীর্ণ করেছেন। ইবনে কাসীর

    তিন,
    হাজার মাসের ব্যাপারে কয়েকটি কথা,
    ক,
    ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ قَامَ رَجُلٌ إِلَى الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ بَعْدَ مَا بَايَعَ مُعَاوِيَةَ فَقَالَ سَوَّدْتَ وُجُوهَ الْمُؤْمِنِينَ ‏.‏ أَوْ يَا مُسَوِّدَ وُجُوهِ الْمُؤْمِنِينَ ‏.‏ فَقَالَ لاَ تُؤَنِّبْنِي رَحِمَكَ اللَّهُ فَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُرِيَ بَنِي أُمَيَّةَ عَلَى مِنْبَرِهِ فَسَاءَهُ ذَلِكَ فَنَزَلَتْ ‏:‏ ‏(‏ إنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ‏)‏ يَا مُحَمَّدُ يَعْنِي نَهْرًا فِي الْجَنَّةِ وَنَزَلَتْ ‏:‏ ‏(‏ إنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ * وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ * لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ‏)‏ يَمْلِكُهَا بَعْدَكَ بَنُو أُمَيَّةَ يَا مُحَمَّدُ ‏.‏ قَالَ الْقَاسِمُ فَعَدَدْنَاهَا فَإِذَا هِيَ أَلْفُ شَهْرٍ لاَ يَزِيدُ يَوْمٌ وَلاَ يَنْقُصُ

    ইউসুফ ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    তিনি বলেন হাসান (রাঃ) মুআবিয়া (রাঃ)-এর নিকট বাই’আত গ্রহণের পর তাঁর সামনে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেনঃ আপনি (মুআবিয়ার নিকট বায়’আত গ্রহণ করে) মু’মিনদের চেহারা কলঙ্কিত করেছেন। এতে তিনি বললেনঃ তুমি আমাকে অভিযুক্ত করো না। আল্লাহ তা’আলা তোমার প্রতি রাহমাত করুন। যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (স্বপ্নে) উমাইয়্যা বংশীয়দেরকে তাঁর মিম্বারের উপর দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তাঁর নিকট খারাপ লাগে। তখন অবতীর্ণ হয়ঃ “আমি অবশ্যই তোমাকে কাওসার (ঝরণা) দান করেছি” (সূরাঃ আল-কাওসার-১) অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ! আমি জান্নাতে তোমাকে কাওসার নামক ঝরণা দান করেছি। আরো অবতীর্ণ হয়ঃ “নিশ্চয় আমি এ কুরআন মহিমান্বিত রাতে অবতীর্ণ করেছি। আর মহিমান্বিত রাত প্রসঙ্গে আপনি কি জানেন? মহিমান্বিত রাত হাজার মাস হতেও উত্তম” (সূরাঃ আল-ক্বাদর-১-৩)।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ