• সাহিত্যে

    দিগন্তধারা সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ পেয়েছেন ড. আফজাল হোসেন খান

      প্রতিনিধি ২৮ মে ২০২২ , ২:৪৫:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

    বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্য রচনায় ও গবেষণায় ‘দিগন্তধারা সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ পেয়েছেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ড. আফজাল হোসেন খান। তাছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিরেক্টর(ইনচার্জ), স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের দায়িত্ব পালন করছেন। শুক্রবার (২৭ মে,২০২২) বিকাল ৫ টায় বাংলাশে ফিল্ম আর্কাইভ এর প্রোজেকশন হলে জমকালো অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশবরেণ্য সাহিত্যিক ও গবেষক অধ্যাপক ড. হায়াৎ মাহমুদ, প্রধান বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ভাষা ও সাহিত্যের পন্ডিত অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
    ড. আফজাল হোসেন খান চাঁদপুর জেলার মতলব থানায় জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলে পড়াকালীন তিনি ছড়া কবিতা, গল্প লিখতেন। স্কুল পাশ করতেই প্রকাশিত হয় তাঁর রচিত উপন্যাস ‘হৃদয়ে রক্তক্ষরণ’, অতপর প্রকশিত হয় ‘ঘর পালানো মেয়ে, শ্রাবনী সহ অসংখ্য উপন্যাস ও কবিতার বই ‘এই মেয়ে’। তিনি ২০০৩ সালে শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতায় যোগ দেন। তখন মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য পড়াতে গিয়ে দেখলেন শিক্ষার্থীর সে সময়ের সাহিত্য ইউসুফ জুলেখা, শ্রী কৃষ্ণকীর্তণ কাব্য বুঝতে কষ্ট হয়। তখন তিনি এইসব সাহিত্যগুলোকে গদ্যে গল্পে-উপন্যাসে রূপান্তর করেন, যেন ছাত্ররা বুঝতে পারেন। বই দুটোর নাম রাধা কৃষ্ণ ও ইউসুফ জুলেখা।
    এছাড়াও জাতীয় কবির জীবন ও কর্ম নিয়ে লিখেন ‘নজরুল জীবন কথা’। উপরোক্ত গ্রন্থগুলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। এভাবেই তিনি হযরত সোলায়মান শাহর জীবনী নিয়ে লেখেন দোহাই লেংটা, এবং লিখেছেন শেখ হাবিবর রহমান সাহিত্য রচনা ও তাঁর অবদান নিয়ে গবেষণা গ্রন্থ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীনই তিনি নানাদিকে বিচরণ করেন সংগ্রহ করতে থাকেন বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও বিয়ের বৈচিত্রময় তথ্য। এইসব নিযে লিখেন ‘বিয়ে’ নামক গ্রন্থ। হাজার বছরের বাংলার লোকসংস্কৃতি-লোকখেলা বিশেষ করে সন তারিখ নিয়ে লিখেন ‘বৈশাখ’ নামক গ্রন্থ। তিনি সকল ধনি-গরিব, ধর্ম-বর্ণ-জাত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লিখেন ‘কৃষ্ণমোহাম্মদ’ নামক আলোচিত এক উপন্যাস।
    মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজ সংস্কারক পিতার কাছে শৈশব থেকেই মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর বৈচিত্রময় ট্রাজেডির গল্প ও আদর্শের কথা শুনে শুনে বেড়ে উঠেছেন তিনি। সময় পেলেই পড়েছেন নানাগ্রন্থ, ছুটেছেন নানা জনের কাছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানার জন্য, যতোই জেনেছেন ততোই অবাক হয়েছেন আর ভাবছেন এই প্রজন্মতো কিছুই জানেননা এতো বড় সাহসের গল্প। এই ‘সাহস’কে তেজ কে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, সকল মানুষের কাছে পৌছাতে হবে। এই ভেবে ভেবে দীর্ঘ সাত বছর নিরলস পরিশ্রম করে তিনি রচনা করলেন বঙ্গবন্ধুর জীবন আর্শ নিয়ে উপন্যাস ‘ফাদার অব দ্য নেশন’। গ্রন্থটির প্রকাশে কেঁপে যায় সারা বাংলা। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বইটির মোড়ক উম্মোচনের কথা থাকলেও নিরাপত্তার সমস্যা চিন্তা করে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আইনবিদ ড. কামাল হোসেন, সেক্টর কমান্ডার কে এম শফিউল্লাহ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ প্রমূখ ও অসংখ্য মিডিয়া ও মানুষের উপস্থিতিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে গ্রন্থটির মোড়ক উম্মোচন হয়। গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব শেষে লেখক বাসায় ফিরতেই পুলিশ তাঁকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফকার করে।

    তিনি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তথ্য নিতে গিয়ে তিনি পেয়ে যান একে একে পেয়ে যান বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ ও নিজ হাতে রচিত চিঠিপত্র সংগ্রহের নেশায় মেতে উঠেন। ২০০৭ সালে প্রকাশ করেন ভাষণের প্রথম খণ্ড, অতপর একে একে ২য়, ৩য়, ৪ র্থ খণ্ড প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, একজন কবি বা লেখক তাঁর স্বপ্নের কথা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করেন, আর একজন নেতা প্রকাশ করেন পথে-প্রান্তরে-ময়দানে-সবখানে ভাষণের মাধ্যমে, জ্বালাময়ি ভাষণের মাধ্যমেই একটি ঘুমন্ত নিস্পেষিত জাতিকে তিনি জাগিয়েছেন স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কেমন রাষ্ট্র চেয়েছেন, সোনার বাংলা কেমন হবে? কি ভাষণ দিয়েছেন!- যার জন্য ত্রিশলক্ষ মানুষ বুক পেতে দিয়েছিল মেশিনগানের সামনে। ভাষণগুলো না শুনলে না পড়লে বঙ্গবন্ধুকে জানা যাবেনা। তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা, সকল দিক নির্দেশনা ভাষনের মাধ্যমে দিয়ে গেছেন।
    ড. খান বছরের পর বছর নানাভাবে নানাস্থান থেকে ভাষণগুলো সংগ্রহ করে মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা খুব ভালো লিখেন। তার লেখাগুলো ড. খান বিভিন্ন পত্রিকা থেকে নানাসময় সংগ্রহ করছেন। তত্বাবধায়কের সরকারের ঈর্ষান্বিত লোভের কারণে প্রিয় নেতৃকে বন্দি করে রাখা হয় প্রায় ২ বছর। সে সময় দল বা দলীয় অঙ্গসংগঠনগুলোকেও প্রতিবাদ করতে দেয়নি ভাড়াটিয়া সরকার। তখন ড. খান প্রতিবাদস্বরূপ বই বিশাল আয়োজন করে জনাব আমির হোসেন আমু এমপি ও হাজার হাজার ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর সকল লেখার সংকলন ‘স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার’ গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। তিনি এখনো প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যা ‘নন্দিত নেতৃত্বে’ শেখ হাসিনা শিরোনামে গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তিনি নিয়মিত সম্পাদনা করেন ‘বং’ নামের বিশেষ সংখ্যা। তাঁর রচিত, সংকলিত ও সম্পাদিত প্রকাশনার সংখ্যা প্রায় ৪০ টিরও বেশী।
    তিনি বাংলাদেশ কালচারাল ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সংগঠনের নিয়মিত আড্ডা হতো ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। তিনি ভাবলেন এই পার্কেই ৭ মার্চের ঘোষণা, এই পার্কেই জিন্নাহ বলেছে উর্দু হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এই পার্কেই শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া হয়েছে। এই পার্কেই পাকিস্তানীরা আত্মসমর্পণ করেছিল। এই খানেই ১০জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন। অসংখ্য স্মৃতিময় ঐতিহাসিক স্থানগুলোর কোনো চিহ্ন নেই। এইসব স্থানগুলো চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণের লক্ষে সংগঠনের ব্যানারে ২০০৫ সালে রিপোর্টাস ইউনিটিতে ‘৬টি দাবী পেশ করেন এবং ক্রমান্বয়ে দাবী জানিয়ে যান। ২০০৮ সালে সেনাপ্রধান শফিউল্লাহ ও অধ্যাপক মুনতাসির মামুন এইসব দাবী নিয়ে মামলা করেন। ২০১৩ সালে বিচারপতি খায়রুল