• কৃষি

    বাড়ছে নারী শ্রমের চাহিদা তবে বাড়েনি মজুরি

      প্রতিনিধি ২৪ মার্চ ২০২২ , ২:৪৬:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন-স্টাফ রিপোর্টারঃ

    গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে চলছে বোরো ধান পরিচর্যার কাজ। পরিচর্যা কাজে নারী শ্রমিকের চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি তাদের মজুরি। মোট শ্রমশক্তির অর্ধেকের বেশি হওয়া সত্ত্বেও মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন শ্রমজীবী নারীরা। একটু বিশ্রাম কিংবা কথা বলা, ধমক খেতে হয় ভূস্বামীদের।কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি হওয়ায় উপজেলায় শ্রমের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। নারী শ্রমিকদের তুলনায় পুরুষ শ্রমিকদের মজুরি বেশি ও কাজে ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা থাকায় নারী শ্রমিকদের চাহিদা বাড়ছে প্রতিনিয়ত।

    সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে লিঙ্গ বৈষম্য খানিটা কমলেও কায়িক শ্রমের ক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্য যেন জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে ওইসব শ্রমজীবী নারীদের ওপর।স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৬শ’ ২০ জন কৃষক তাদের ২৮ হাজার একশ ৯৩ হেক্টর জমিতে বোরো করেছেন। চারা লাগানোর পর চলছে পরিচর্যার কাজ। এ অবস্থায় বেড়েছে নারী শ্রমিকের চাহিদা।

    মঙ্গলবার উপজেলার চাচিয়া মীরগঞ্জ, নওহাটি চাচিয়া, তারাপুর, বামনজল, নাচনী ঘগোয়ার ফসলি জমি ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে ধান নিড়ানোর কাজে পুরুষের চেয়ে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। পুরুষ শ্রমিকরা বেশি উপার্জনের আশায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাওয়ায় কৃষকদের ভরসা এখন নারী শ্রমিকের উপর। মাঠে তাকালেই চোখে পড়বে শুধুই নারী শ্রমিক।

    অসুস্থ স্বামী, পরিত্যক্তা, বিধবা ও অসচ্ছল পরিবারের নারীরা স্বামীর চিকিৎসা, সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেয়াসহ পড়াশোনার খরচ যোগাতে কাজ করছেন এসব নারী। শ্রম বিক্রি করতে গেলে অভাবী নারীদের ন্যায্য মজুরি না দিয়ে স্বল্প মজুরিতেই কাজ করিয়ে নিচ্ছেন ভূস্বামীরা। হচ্ছেন মজুরি বৈষম্যের শিকার।

    যেখানে পুরুষ শ্রমিকরা প্রতিদিন সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা মজুরি পাচ্ছেন, একই পরিমাণ কাজ করে নারী শ্রমিকরা সেখানে পাচ্ছেন ১শ’ ৫০ থেকে ২শ’ টাকা। পুরুষের তুলনায় নারী শ্রমিকদের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও বাড়ছে না তাদের মজুরি। বঞ্চিত হচ্ছেন এসব শ্রমজীবী নারী তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে। অথচ এসব শ্রবজীবী নারী ন্যায্য মজুরি পেলে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি স্বচ্ছলতা বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা সচল রাখতেও সক্ষম হতেন।

    কথা হয়, বামনজলে ও নাচনী ঘগোয়ায় ধান ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কারে ব্যস্ত শ্রমিক মোনয়ারা, হোসনে আরা বেগম এর সাথে।মোনয়ারা বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তান ও নিজের পেট বাঁচাতেই তার এ কামলা দেওয়া।মোনয়ারা বলেন, ‘ঘরে অচল স্বামী। কাজ না করলে খাব কি, স্বামীর ওষুধ কিনবো ক্যামনে?’ জেলেখার অবস্থাও ঠিক এমনই। তারা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে আসর নামাজের আজান পর্যন্ত কাজ করতে হয়। বসে থাকি না, একটানা কাজ করি। তারপরও বেটা ছাওয়ার চেয়ে মজুরি কম পাই। এই টাকা দিয়ে তো সংসার চলেনা।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ