• আইন ও আদালত

    আসামি ধরতে গিয়ে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো পুলিশ

      প্রতিনিধি ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৪:৩৪:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ লুৎফর রহমান লিটন-সলঙ্গা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

    সিরাজগঞ্জে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের আরও অভিযোগ, এ ঘটনার পর থানায় গিয়ে ওসিকে বিষয়টি জানালে তিনি দিনভর বসিয়ে রাখেন। পরে সন্ধ্যার দিকে টাকা খোয়া গেছে মর্মে লিখে তাতে সেই নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তাদের দাবি, কোনো অভিযোগ না থাকলেও জান্নাতুল নামে একজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হলেও ছাড়া হয়নি। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।

    শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার বারইভাত নয়াপাড়ায় আব্দুস সাত্তার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
    বাড়ির কর্তা আব্দুস সাত্তার, ছেলের বউ শানু ও নাসরিন খাতুন জানান, শুক্রবার ভোররাত চারটা থেকে সাড়ে চারটার দিকে রায়গঞ্জ থানার এএসআই রায়হান ফেরদৌস দুজন কনস্টেবল নিয়ে বাড়িতে আসেন। পরে সবাইকে ডেকে মমিন ও জান্নাতুলের খোঁজ করেন। এসময় মমিন বাড়িতে না থাকায় তিনি জান্নাতুলকে আটক করেন।

    এক পর্যায়ে মমিনের ঘরে গিয়ে তাদের শো-কেস তছনছ করার পর ড্রয়ারের চাবি চান। কিন্তু চাবি না দেওয়ায় ড্রয়ার টান দিয়ে খুলে ভেতরে থাকা মমিনের দেড় লাখ ও তার ভাই বাবুর গরুর ব্যবসার জন্য রাখা এক লাখ টাকা নিয়ে নেন। এরপর জান্নাতুলকে নিয়ে থানার দিকে বাড়ি থেকে বের হন।
    এ সময় টাকা কেন নিলেন এবং টাকা দিয়ে যান বললে এএসআই রায়হান ফেরদৌস বলেন, এখানে কোনো কথা হবে না, সকালে থানায় আসেন।পরে সকালে থানায় আসার পর ওসি এবং সার্কেল এএসপিকে কিভাবে টাকা নিয়েছে, কেমন আচরণ করা হয়েছে সব জানানো হয়।

    পরে এএসআই রায়হানের বরাত দিয়ে ওসি জানান, রায়হান কোনো টাকা নেয়নি। একই সঙ্গে টাকা হারিয়ে গেছে বলে তারা একটি অভিযোগ লিখে তাতে সাক্ষর নেন। জান্নাতুলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি।
    ভুক্তভোগী বাবু ইসলাম জানান, আমি গরুর ব্যবসা করি। এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। আমার ঘরে টাকা রাখার জায়গা না থাকায় বড়ো ভাই মমিনের স্ত্রীর কাছে টাকা রেখেছিলাম। রাতে এএসআই বাড়িতে গিয়ে ভাবির ড্রয়ার থেকে আমার এক লাখ ও ভাইয়ের দেড় লাখসহ মোট আড়াই লাখ টাকা নিয়ে নেয়। তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে অস্বীকার করেন টাকা নেননি।

    জান্নাতুলের মা রেখা খাতুন জানান, ব্যবসার জন্য ছেলেরা কিস্তিতে টাকা তুলেছিল। সেই টাকা পুলিশ নিয়ে গেলো। আর আমার ছোট ছেলেটাকেও বিনা দোষে ধরে নিয়ে গেলো।
    এ বিষয়ে রায়গঞ্জ থানার এএসআই রায়হান ফেরদৌস বলেন, তাদের টাকা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে আপনারা ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মমিনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, আর জান্নাতুল মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সন্দেহে আটক করা হয়েছে।

    রায়গঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, রায়গঞ্জ সার্কেলের এএসপি ইমরান রহমানসহ আমি ভুক্তভোগী ও থানার এএসআই রায়হান ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সত্যতা পাইনি। তবে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে টাকা খোয়া গেছে বলে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
    জান্নাতুলকে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ছেলেটি কিশোর তাই তাকে সমাজসেবা অফিসারের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ