• Uncategorized

    হাসাড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য দোয়া করায় চাকুরী খুয়ালো ইমাম

      প্রতিনিধি ১৯ নভেম্বর ২০২১ , ১০:৪৯:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    শ্রীনগর(মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

    ইমামের কাজ হচ্ছে সবার জন্য দুআ করা। সেই দুআতে কে নির্বাচিত হবে সেটা ইমামের দায় নয়। আর সেই দুআ করায় চাকুরী হারালো মসজিদের ইমাম। গত ৩০শে অক্টোম্বর এমনই এক ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলারহাসাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম হাসাড়া মাঝিপাড়া এলাকায়।
    সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪ বছর পূর্বে পশ্চিম হাসাড়া মাঝিপাড়া জামে মসজিদ(মিনার মসজিদ) কমিটি ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেন বরিশাল ভান্ডারীয়া উপজেলার মাওলানা আব্দুল আলিমকে। গেল দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে হাসাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের নিজ নিজ এলাকার মসজিদে ইমামদের কাছে তাদের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জন্য ইমাম সাহেবদের দোয়া করতে বলেন। ইমাম মাওঃ আঃ আলিম স্বতন্ত্র প্রার্থী সোলাইমান খানের জন্য সেই দুআ করায় চাকুরী হারাতে হয়েছে ইমামকে। এমনকি ইমামের বেতন ও তার সামানের কথা বলাতে পা কেটে ফেলার হুমকি দেয় ঐ মসজিদের কোষাদক্ষ মুনসুর মাঝি নামে এক ব্যাক্তি। মুনসুর মাঝি হাসাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও আওয়ামীলীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আহসান হাবিবের নৌকা প্রতিকের সমর্থিত কর্মী ছিল। তার সমর্থিত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর জন্য দুআ করছে ইমাম। কিন্তু প্রতিদ্ব›িদ্বর স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য কেন দুআ করলো এটাই ইমামরে অপরাধ।
    ইমাম মাওঃ আঃ আলিম অভিযোগ করে বলেন, আমি দুই মেয়াদে গত ৫ বছর যাবৎ পশ্চিম হাসাড়া মাঝিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ইমামতি করে আসছি। দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে গত ২২অক্টোম্বর শুক্রবার হাসাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থীর আহসান হাবিব সমর্থকরা তাদের প্রার্থীর জন্য দুআ করতে বললে আমি দোয়া করি। ২৯শে অক্টোম্বর শুক্রবার একই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী সোলাইমান খানের আনারস প্রতিকের সমর্থকরা তাদের প্রার্থীর জন্য দুআ করতে বললে আমি দুআ করি। পরেদিন আমি মসজিদ কমিটির কাছে ছুটি নিয়ে নিজ বাড়ীতে চলে যাই। আমি নিজ বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে মাওয়াঘাট পার হবারপর ওপারে পৌছে মসজিদ কমিটির কোষাধক্ষ মুনসুর মাঝি সাহেবের মোবাইল ফোনে কল করে বলি কাকা আমিতো এই পারে চলে এসেছি আমার জন্য দুআ করবেন। এর আধাঘন্টা পরে মুনসুর মাঝি সাহেব আমাকে ফোন করে এবং বলে ইমাম সাহেব আপনি কি গতকাল রাতে সোলাইমান চেয়ারম্যানের বাসায় গিয়ে ছিলেন। তখন আমি বলি যে মসজিদ কমিটির জুলহাস মাঝি ও সাক্কু মাঝি আমাকে অনুরোধ করে চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়ীতে নিয়ে যায়। তখন মুনসুর মাঝি বলে তোর আর আমাদের মসজিদে ইমামতি চাকুরী নাই। তুই আর আসবি না। তখন আমি বলি আমার বেতন ও ছামান রয়েছে এগুলোতে আনতে হবে এবং আমার চাকুরী নাই সেটাতো আপনাদের নিয়মানুযায়ী আমাকে তিনমাস আগে বলতে হবে। তখন বলে না তুই! এগুলো আনতে এপার আর আসতে পারবি না। আসলে তোর পা কেটে ফেলবো।
    এব্যাপারে মসজিদ কমিটির কোষাধক্ষ মুনসুর মাঝির কাছে জানতে তার ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর কল রিসিভ করেনি।
    মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল হক শিকদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ইমাম খুব ভালো ইমাম। ইমাম সাহেব কারো জন্য দোয়া করায় তাকে এভাবে চাকুরী ছাড়া করার হুমকি দিতে পারে না। ইমাম সাহেবতো সবার জন্য দুআ করবে।
    এলাকার মুসল্লিরা বলেন, দুআ করার জন্য আমাদের মসজিদের ইমামে চাকুরী যেতে পারে না এবং তাকে এভাবে কেউ হুমকিও দিতে পারে না। আমরা এই ইমামকে কেই ইমাম হিসেবে বহাল রাখবো।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ