• জনপদ

    সলঙ্গার তেলকুপি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

      প্রতিনিধি ১৯ নভেম্বর ২০২২ , ১১:৪৭:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ লুৎফর রহমান লিটন-সলঙ্গা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

    সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার তেলকুপি ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকেন তেলকুপি কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের নদী পারাপারের জন্য আজও কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

    সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়,সলঙ্গা থানা থেকে প্রায় ০৫ কিলোমিটার দুরে সলঙ্গা ইউনিয়নের তেলকুপি নামক স্থানে একটি ব্রিজের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। বিশেষ করে নদীর পশ্চিম পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র অবস্থিত হওয়ায় স্কুলগামী নদীর পশ্চিম পাড়ের শিক্ষার্থীসহ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা নারী-পুরুষকে নানা দুর্ভোগ আর দুর্গতির মধ্যদিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিতে হচ্ছে। অপরদিকে নদীর পশ্চিম পাড়ে কবরস্থান স্থাপিত কবরে মৃত্যুদেহ দাফন করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পুর্বপাড়ের বাসিন্দাদের।

    নানা প্রয়োজনে সকল শ্রেনি-পেশার মানুষের জন্য যাতায়াতের দুর্গতি যেন নিত্যসঙ্গীতে পরিনত হয়েছে। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু আদৌ তাদের এ দাবি পুরণ হয়নি। ফলে জরুরী অনেক সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে তেলকুপি অঞ্চলের মানুষগুলো। যোগাযোগ ব্যবস্থার এ আধুনিকতার যুগে এসেও সরকারের তরফ থেকে আজও অবহেলিত তেলকুপি নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। একমাত্র একটি ব্রিজের অভাবে যুগের পর যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে পারাপার হয়।

    কয়েকটি গ্রামের স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় এখন সারা বছরই এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যখন বন্যার পানি চারিদিকে থৈ-থৈ করে তখন পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ভাড়ায় চালিত নৌকা। আর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীর পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হলেও হেঁটেই ওই সকল গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনের তাগিদে স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রসহ জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।

    এছাড়াও তেলকুপি ওই এলাকার কয়েকটি গ্রামে যে ইরি-বোরো ধান উৎপাদন হয় তা যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোনো পথ না থাকায় স্থানীয় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ কৃষি পণ্যসামগ্রী সহজভাবে বাজারজাত করতে না পারায় নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই ফড়িয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে কৃষি পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি থাকলেও তা নিয়ে যেন কারো তেমন মাথা ব্যথা নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,আওয়ামীলী একাধারে তিন বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন আর ক্ষমতাসীন সেই দলের মুল সংগঠন আওয়ামীলীগ সলঙ্গা ইউনিয়ন শাখার সভাপতির বাড়ী নাইমাড়ী অথচ সে বদৌলতেও আজ পর্যন্ত এ ব্রিজের দাবী পুরণ হয়নি এ অঞ্চলের মানুষের।

    এ ব্যাপারে তেলকুপি গ্রামের মো: শাহ আলম সরকার ও মোঃ শহিদুল ইসলাম সাবেক মেম্বার , ও গোলবার ও তোমছের ও শহিদুল ইসলাম মাস্টার ও মোঃ দুলাল মন্ডল ও মোঃ শাজাহান আলি খান মোঃ খকন ও হাই আমরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষার মৌসুমে নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতাম কিন্তু বর্ষার সময় নৌকা পারাপারে বেশী ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় সারা বছরই এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকি। তেলকুপি গ্রামটি বিশাল বড় হওয়ায় তেলকুপিতে পার্শ্ববর্তী নদীর উভয় পাড়ের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে নদীর উপর দু’টি স্থানে বাঁশের সাঁকো স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি সাঁকো গ্রামের দক্ষিন প্রান্তে উচ্চ বিদ্যালয়,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কবরস্থান সংযুক্ত স্থানে আরেকটি গ্রামের মধ্যস্থল উত্তর প্রান্তে অবস্থিত।

    এদিকে একটি ব্রিজের অভাবে এ এলাকার মানুষ এখন যোগাযোগ থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং বছরের পর বছর ধরে কৃষি পণ্যের নায্য মূল্যসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে সুযোগ সুবিধা বাড়াতে তারা এই স্থানে স্বাধীনতার পর থেকে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসলেও তা স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পুরণ হয়নি। তবে দুঃখের বিষয় দেশ স্বাধীনের পর থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ এ যাবতকাল যতগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে ততগুলো নির্বাচের সময়ই ভোটের স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদেরকে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

    কিন্তু পরে যে দলই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যায় না কেন তখন সেই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সেই প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যান। মনে রাখেন না আর তাদের সেই প্রতিশ্রুতির কথা। তবে প্রত্যাশায় বুক বেঁধে থাকা এলাকার মানুষের এ দাবি এখনো কেউ বাস্তবায়িত করেনি। যার কারণে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে সাঁকোর উপর দিয়ে নদী পারাপারের ক্ষেত্রে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে কোঁমলমতি শিক্ষার্থীদের।

    এব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সংসদ সদস্য মোঃ তানভীর ইমাম এমপি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এদিকে সলঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এদিকে জনগুরুত্বপুর্ণ এই স্থানে জরুরী ভিত্তিতে যদি একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় তাহলে এ এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ