• আমার দেশ

    সকলের কাছে পাসওয়ার্ড থাকা উচিত-জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান

      প্রতিনিধি ১০ জুন ২০২২ , ৫:১৭:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    মো: রাফসান-মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:

    জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, জীবনের জন্য গোটা বিশ্বই এক গ্রন্থাগার। জীবনজুড়ে নতুন কোনো কিছু অনুন্ধানের জন্য লাইব্রেরিতে যেতে হয়,আমাদের সকলের লক্ষ্য একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টি। সেই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টিতে লাইব্রেরি সায়েন্সের ভূমিকা অনস্বীকার্য।। প্রতিটি ক্ষেত্রে লাইব্রেরির আবশ্যকতা রয়েছে। ঘর থেকে শুরু করে আকাশে, বিমানে, লঞ্চে, ট্রেনে জ্ঞান অন্বেষণের যে সোর্সগুলো রয়েছে তার প্রধানতম অনুষঙ্গ হচ্ছে লাইব্রেরি। তবে আধুনিক এই সময়ে এসে ভাবতে হবে বাংলাদেশের লাইব্রেরি সায়েন্স সনাতনী ব্যবস্থার মধ্যে আটকে আছে কিনা। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর মধ্যে কোথাও কিছু বই-পুস্তক আছে সেটি লাইব্রেরি।

    নাকি একটি পরিবারে শিশু জন্ম লাভের পর থেকে ধীরে ধীরে তার ঘরের মধ্যে টেবিলে গড়ে ওঠে ছোট্ট লাইব্রেরি, স্কুলে লাইব্রেরি, একটি সভ্য সমাজে ট্রেনে চড়ে বসলে একজন যাত্রী সহজে বই পড়তে পারে। হাসপাতালে পড়তে পারে। এভাবে চলার প্রতিটি বাঁকে বাঁকে লাইব্রেরির যে সংযোগ সেটি নিশ্চিত করাই আধুনিক গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞানর লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন।
    জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন-ক্যাম্পাস পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা ইন লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স কোর্সের ৬ষ্ঠ ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম এবং ৫ম ব্যাচের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

    গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের শিক্ষার্থীর হাতে একটি পাসওয়ার্ড থাকা উচিত। যেই পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ই-জার্নালে, ই-বুকে অধ্যয়নের সুযোগ পাবে। সেটি যদি আমরা না করতে পারি তাহলে আমরা একটি সনাতনী ব্যবস্থার লাইব্রেরির মধ্যে থাকবো, তা দিয়ে সমাজ পবির্তনের জায়গায় পৌঁছানো দুঃসাধ্য। সুতরাং শিক্ষা গ্রহণে যদি আমরা উৎকর্ষতা অর্জন করতে না পারি তাহলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে পিছিয়ে থাকতে হবে। একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আধুনিক লাইব্রেরি গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিজেকে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন,

    একজন আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের জ্ঞানের অনুসন্ধানের সোর্সগুলোর প্রতিটি এক্সপ্লোর করার নাম যদি লাইব্রেরি হয়, তাহলে গোটা পৃথিবীই একটি গ্রন্থাগার। গোটা পৃথিবী যখন গ্রন্থাগার। আধুনিকতায় পৌঁছানোর মূল জায়গা। জ্ঞান চর্চায় লাইব্রেরি সায়েন্সের পরিসর তখন অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত। এর মাধ্যমে আধুনিক, যুগোপযোগী, উদার, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক ভাবধারায় সমৃদ্ধ মনস যদি জাগ্রত না হয়, তাহলে লাইব্রেরি শুধু ধূলোময় কিছু বইয়ের স্তুপে পরিণত হবে। একারণেই আধুনিক সমৃদ্ধ লাইব্রেরি প্রযুক্তি বান্ধব হওয়া আবশ্যক। আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা আছে। তা সত্ত্বেও লাইব্রেরিকে আধুনিক করতে যদি সফটওয়্যার দরকার হয়, ই-লাইব্রেরি, ই-জার্নাল দরকার হয়, তার সবকিছুই করতে আমরা প্রস্তুত।কারণ একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি হচ্ছে জ্ঞানার্জনের প্রধানতম স্থান।’

    আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। কিন্তু আমি মনে করি, যে গরিব, দুঃখী নিন্মবিত্তদের নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে এই শ্রেণির পরিবর্তন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। সেই চ্যালেঞ্জকে সঙ্গে নিয়েই সমাজ পরিবর্তনে অতন্ত্র প্রহরীর মতো কাজ করছি আমরা।’উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘কোভিড উত্তর পৃথিবী আরও চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু সেটি হবে আরও আধুনিক ও বিজ্ঞান মনস্ক। সেই জায়গা যদি আমরা পিছিয়ে থাকি তাহলে মনে রাখতে হবে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে বড় আহ্বান আমাদের সামনে আছে, সেটি যদি আমরা ধরতে না পারি তাহলে অনগ্রসর হয়ে থাকতে হবে, যেটি আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদের সামনে মানবিক উন্নত বাংলাদেশ। যেই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়াবেই শুধু নয়, স্বাধীনতার শতবর্ষের বাংলাদেশ অনেক উন্নত-আধুনিক রাষ্ট্রের তুলনায় মানবিক রাষ্ট্র হবে।

    আমাদের লক্ষ্য সুস্পষ্ট; মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে প্রতিটি নাগরিক আত্মমর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকবে।’
    স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন ও লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স বিভাগের কোর্স সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।

    এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরুজ্জামান, জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মো. আতাউর রহমান, পরিবহন দপ্তরের পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক মো. সাজেদুল হক, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দপ্তরের পরিচালক মু. আখতারুজ্জামান, প্রকাশনা ও বিপণন দপ্তরের পরিচালক আ. মালেক সরকার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক সুমন চক্রবর্তীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানগণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিসহ প্রায় ৩০০ শতাধিক শিক্ষার্থী।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ