• Uncategorized

    শ্রেষ্ঠ রাত পাওয়ার সহজ উপায় “ই’তেকাফ” মুফতী আঃ কাদের কারিমী

      প্রতিনিধি ২০ এপ্রিল ২০২২ , ২:০৭:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    আলোকিত ইসলাম ডেস্ক
    এক
    শেষ দশকের গুরুত্ব,
    حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَهُ وَأَحْيَا لَيْلَهُ، وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ

    ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    তিনি বলেন, যখন রমাযানের শেষ দশক আসত তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন।
    বুখারী-২০২৪
    দুই,
    ইতেকাফের গুরুত্ব

    (১)
    ইমাম যুহরী রহিমাহুল্লাহ বলেন,
    عجباً للمسلمين ! تَرَكوا الاعتكافَ ، مع أن النبي صلى الله عليه وسلم ، ما تَرَكه منذُ قَدِمَ المَدِينَةَ حتى قَبَضَه الله عز وجل
    মুসলমানদের জন্য আশ্চর্য লাগে! তারা ইতেকাফের মতো ইবাদত ছেড়ে দেয়! অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করার পর মৃত্যু পর্যন্ত কখনো ইতেকাফ ছাড়েন নি।

    (২)
    عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ، ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ‏.‏

    নবী সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের শেষ দশকে ই’তিকাফ করতেন। তাঁর ওফাত পর্যন্ত এই নিয়মই ছিল। এরপর তাঁর সহধর্মিণীগণও (সে দিনগুলোতে) ইতিকাফ করতেন।
    সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০২৬

    (৩)
    ইন্তেকালের বছর বিশ দিন ইতেকাফ করেছেন,
    حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعْتَكِفُ فِي كُلِّ رَمَضَانَ عَشْرَةَ أَيَّامٍ، فَلَمَّا كَانَ الْعَامُ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ اعْتَكَفَ عِشْرِينَ يَوْمًا‏.‏

    আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি রমযানে দশ দিনের ই‘তিকাফ করতেন। যে বছর তিনি ইন্তিকাল করেন সে বছর তিনি বিশ দিনের ইতিকাফ করেছিলেন।
    সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০৪৪

    তিন
    লাইলাতুল কাদর পাওয়ার সহজ উপায় “ইতেকাফ”
    তাইতো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লাইলাতুল কাদর পাওয়ার আশায় এক মাস ইতেকাফ করেছেন।
    عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ انْطَلَقْتُ إِلَى أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ فَقُلْتُ أَلاَ تَخْرُجُ بِنَا إِلَى النَّخْلِ نَتَحَدَّثْ فَخَرَجَ‏.‏ فَقَالَ قُلْتُ حَدِّثْنِي مَا، سَمِعْتَ مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ‏.‏ قَالَ اعْتَكَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَشْرَ الأُوَلِ مِنْ رَمَضَانَ، وَاعْتَكَفْنَا مَعَهُ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنَّ الَّذِي تَطْلُبُ أَمَامَكَ‏.‏ فَاعْتَكَفَ الْعَشْرَ الأَوْسَطَ، فَاعْتَكَفْنَا مَعَهُ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنَّ الَّذِي تَطْلُبُ أَمَامَكَ‏.‏ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَطِيبًا صَبِيحَةَ عِشْرِينَ مِنْ رَمَضَانَ فَقَالَ ‏ “‏ مَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلْيَرْجِعْ، فَإِنِّي أُرِيتُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ، وَإِنِّي نُسِّيتُهَا، وَإِنَّهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فِي وِتْرٍ، وَإِنِّي رَأَيْتُ كَأَنِّي أَسْجُدُ فِي طِينٍ وَمَاءٍ ‏”‏‏.‏ وَكَانَ سَقْفُ الْمَسْجِدِ جَرِيدَ النَّخْلِ وَمَا نَرَى فِي السَّمَاءِ شَيْئًا، فَجَاءَتْ قَزْعَةٌ فَأُمْطِرْنَا، فَصَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ الطِّينِ وَالْمَاءِ عَلَى جَبْهَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَرْنَبَتِهِ تَصْدِيقَ رُؤْيَاهُ‏.‏

    আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
    তিনি বলেন, আমি আবূ সা’ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, আমার সঙ্গে খেজুর বাগানে চলুন, (হাদীস সংক্রান্ত) আলাপ আলোচনা করব। তিনি বেরিয়ে আসলেন। আবূ সালামা (রাঃ) বলেন, আমি তাকে বললাম, ‘লাইলাতুল কাদ্‌র’ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে যা শুনেছেন, তা আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের প্রথম দশ দিন ‘ইতিকাফ করলেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে ই’তিকাফ করলাম। জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী দশদিন ই’তিকাফ করলেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে ই’তিকাফ করলাম। পুনরায় জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর রমযানের বিশ তারিখ সকালে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্‌বা দিতে দাঁড়িয়ে বললেন, যারা আল্লাহ্‌র নবীর সঙ্গে ই’তিকাফ করেছেন, তারা যেন ফিরে আসেন (আবার ই’তিকাফ করেন) কেননা, আমাকে স্বপ্নে ‘লাইলাতুল কাদ্‌র’ অবগত করানো হয়েছে। তবে আমাকে তা (নির্ধারিত তারিখটি) ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা শেষ দশ দিনের কোন এক বেজোড় তারিখে। স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি কাদা ও পানির উপর সিজদা করছি। তখন মসজিদের ছাদ খেজুরের ডাল দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা আকাশে কোন কিছুই (মেঘ) দেখিনি, একখণ্ড হালকা মেঘ আসল এবং আমাদের উপর (বৃষ্টি) বর্ষিত হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। এমন কি আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কপাল ও নাকের অগ্রভাগে পানি ও কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। এভাবেই তাঁর স্বপ্ন সত্যে রূপ লাভ করল।
    সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৮১৩

    চার,
    দুনিয়া বিমুখ হয়ে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদতের মাধ্যমে
    আল্লাহর কাছাকাছি হওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায় ইতেকাফ,
    মূল লেখক মুফতী আরিফ বিন হাবিব

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ