• আইন ও আদালত

    মাদক ব্যবসায়ী শাকিলের প্রতারনার শিকার ব্যাবসায়ী নারী ও সাংবাদিক

      প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২২ , ৪:৩২:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিজস্ব সংবাদদাতা:

    আনসারুল হাসান শাকিল নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর প্রতারনার শিকার হয়ে নিঃস্ব হতে চলেছেন সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস। এদিকে তার প্রতারনার হাত থেকে রেহায় পাননি একাধিক নারী ও ব্যবসায়ী। পাবনায় একাধিক ফ্লাটে মেয়েদের রেখে দেহ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকায় ১২৭ মালিবাগের ৪র্থ তলায় অবস্থিত নিট হেভেন নামে গামের্ন্টস এর কাঁচামাল আমদানী ও বিক্রয়ের আড়ালে চলে বিদেশী মদ, ইয়াবা ও শিশার রমরমা ব্যবসা। পাবনা থেকে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী তার ফ্লাটে অবাধ যাতায়াত ও নারী নিয়ে অবস্থান করা ও অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনা প্রতিনিয়ত চলছে।

    পাবনায় তার রয়েছে বিশাল মাদক নেটওয়ার্ক ও সন্ত্রাসী বাহীনি। এছাড়া পাবনা খেয়াঘাট রোডে অবস্থিত একে খন্দকার টাওয়ারে ২য় তলায় তার নিজস্ব ফ্লাটে চলে মাদক সেবনসহ নারী নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ। এদিকে শাকিলের মা-বাবা সহ পরিবারের সাথে রয়েছে চরম বিরোধ। একাধিক মেয়ের সাথে শাকিলের সর্ম্পক্যের প্রতিবাদ করায় তার স্ত্রী মোছাঃ সানজিদার উপর নানাভাবে চলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ ব্যাপারে পাবনায় পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। শাকিলের দুটি সন্তান থাকায় তার স্ত্রী নিরবে সব কিছু সহ্য করে সংসার করে যাচ্ছেন।

    বিশেষ করে বিদেশি মদ ও নারী দিয়ে দেহ ব্যবসা করে শাকিল হয়ে ওঠে কোটি কোটি টাকার মালিক। পাবনাসহ ঢাকা মগ বাজার, ধানমন্ডি, মালিবাগে রয়েছে একাধিক ফ্লাট, প্লট ও জমি। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভুগিরা জানান, মান সম্মানের ভয়ে তারা এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন না। কে এই শাকিল? পুরো নাম মোঃ আনছারুল হাসান শাকিল, পিতা-মোঃ খবির উদ্দিন, গ্রাম রাধানগর ডিগ্রি বটতলা, থানা ও জেলা পাবনা। পিতা-মাতার বড় ছেলে আনছারুল ইসলাম শাকিল।

    পাবনা শহরের সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুল মার্কেটে অবস্থিত শাকিলের বাবার অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ইকো ডিজিটাল সাইন নামক প্রতিষ্ঠান শাকিলের ছোট ভাই আহসানুল হাসান দেখাশুনা করতো। সেখান থেকে শাকিল বিভিন্ন সময় জোরপুর্বক টাকা নিয়ে মাদক সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালাত। এর প্রতিবাদ করায় ছোট ভাই আহসানুল হাসানকে হয়রানি করতে তার বিরুদ্ধে বিগত ২০১৫সালের ৭ নভেম্বর রমনা মডেল থানায় একটি মিথ্যা জিডি দায়ের করেন। জিডি নং-৬৮৬, তাং-০৭-১১-২০১৫ইং। পরে পরিবারের সদস্যরা হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে ইকো ডিজিটাল সাইন নামক প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

    এদিকে পাবনা সদরের মালঞ্চি ইউনিয়নে পারিবারিক জমি বিরোধ নিয়ে তার ভাই ও মামাদের সাথে রয়েছে চরম বিরোধ। এসব ঘটনায় তার মা-বাবা, ভাই ও মামাদের ভয়ভীতি দেখাতে তার লালিত সন্ত্রাসীবাহিনী ব্যবহার করতো। শাকিলের মায়ের নামের জমির উপর লাগানো বড় বড় মেহেগুনি গাছ শাকিল নিজে কেটে বিক্রি করতে গেলে ভাই ও মামারা বাধা প্রদান করেন। এ ঘটনায় ২০১৯ সালে শাকিলের লালিত সন্ত্রাসীবাহিনী মালঞ্চি গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তা জবর দখল করেন। এ বিষয়ে সেই সময়ে মালঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদে এক শালিস বৈঠকে শাকিলকে সন্ত্রাসী আচরন থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনা প্রদান করেন, সেই সময়ের মালঞ্চি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম।

    এদিকে সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসের কাছ থেকে ফ্লাট ক্রয়ের নাম করে ২০১৭ সালে ১০ লাখ টাকা হাওলাত গ্রহন করেন মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারক শাকিল। হাওলাতের টাকা ফেরত চাইলে সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তা বিলম্ব করতে থাকে প্রতারক শাকিল। প্রতারক শাকিল পাবনা শহরের ৫ মাথা মোড়ে অবস্থিত ইকো ডিজিটাল সাইন নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি চালাতে না পেরে প্রায় আড়াই লাখ টাকা দেনা পরিশোধের শর্তে ২০১৯সালে আগষ্ট মাসে মোবারক বিশ্বাসের কাছে হস্তান্তর করেন। সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস ইকো ডিজিটাল সাইন প্রতিষ্ঠানের পরিত্যাক্ত মেশিনারীজ আরো প্রায় ২লাখ টাকা খরচ করে মেরামত করে আট কালচার অ্যাড এন্ড মিডিয়া নাম দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন।

    করোনার কারনে সরকারী নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসা দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। এদিকে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারী মাসে প্রতারক ও মাদক ব্যবসায়ী শাকিল আর্ট কালচার অ্যাড এন্ড মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দাবী করে। এ নিয়ে সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসের সাথে শুরু হয় শাকিলের দ্বন্দ। এরই জের ধরে প্রতারক শাকিল মোবারক বিশ্বাসের নামে পাবনা সদর থানায় চুরির অভিযোগ প্রদান ও উকিল নোটিশ প্রেরন করে হয়রানি শুরু করেন। এছাড়া মোবারক বিশ্বাসের ব্যবসা ক্ষতি করার জন্য ডিজিটাল মেশিন আমদানিকারক হাসান ট্রেডের মাধ্যমে পাসওয়ার্ড লক করে দেয়।

    ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস ন্যায় বিচার পেতে পাবনা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে আদালতে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস। যা তদন্তাধিন রয়েছে। আদালতে অভিযোগ দায়েরের পর থেকে সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসকে প্রান নাশের হুমকিসহ নানা হুমকি প্রদান করছে শাকিলের লালিত সন্ত্রাসী বাহীনি। এদিকে মাদক ব্যবসায়ী শাকিল পাবনা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহ আলমের কাছে ৩০ লাখ টাকার মেশিনারীজ চুরির অভিযোগ এনে মোবারক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিলে গত বৃহস্পতিবার(৩মার্চ) এক শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

    শাকিলের সন্ত্রাসী বাহিনী জোর পুর্বক রায় তার পক্ষে নিতে আইনজীবিদের চাপ প্রযোগ করে। পরে আইনজীবিরা রায় পরে দেওয়া হবে বলে বৈঠত স্থগিত করেন। এরপরে আইনজীবিরা শাকিলের সন্ত্রাসীবাহিনীর ভয়ে রায় দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ওই সালিশে উপস্থিত ছিলেন শাকিলের পক্ষে এ্যাডভোকেট রেজনসহ আরো ২জন। সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ। এ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ জানান, শাকিলের পক্ষে উচ্চ পর্যায়ের চাপ থাকায় সিনিয়র আইনজীবি ও বারের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহ আলম এর নেতৃত্বে টিম রায় দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

    এদিকে সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস ন্যায় বিচার পেতে আদালতের স্বরনাপন্ন হলে তাকে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। হুমকির বিষয়ে মোবারক বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতিপয় নামধারী সন্ত্রাসী আমার প্রতিষ্ঠান জোরপুর্বক দখল নিতে এবং আমাকে জানে মেরে ফেলতে হুমকি প্রদান করছে। তিনি এও বলেন, হুমকির বিষয়ে পরবির্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে তিনি এও জানান, তিনি নিরাপত্তা হীনতাই ভুগছেন। মাদক ও দেহ ব্যবসার অভিযোগের বিষয়ে শাকিলের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বিকার করেন। তিনি এত সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন, জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে শাকিল বলেন, আমি ব্যবসার আয় দিয়ে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ