• কৃষি

    নীলফামারীতে শুরু হয়েছে আগাম আলু তোলার উৎসব

      প্রতিনিধি ২৭ নভেম্বর ২০২১ , ৪:২০:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

    উজ্জ্বল আহমেদ – নীলফামারী প্রতিনিধিঃ

    আশ্বিনা বৈরী আবহাওয়ার ঝুক্কি-ঝামেলা কাটিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক চড়া আলুর বাজারে আগাম নতুন আলুর সুখবর এনেছেন। দেশের বাজারে এই প্রথম আগাম আলু উপহার দিতে ইতিমধ্য শুরু হয়েছে আলু উত্তোলনের উৎসব।চলতি বছর ৬ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাহাগিলী ইউপি’র উঃ দুরাকুটি জয়নোনেরকোট গ্রামের কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম ৪বিঘা ও একই এলাকার হাড়িবেচা পাড়া গ্রামের মমেনুর ২বিঘা জমির আগাম আলু উত্তোলন করেছেন। ফলন একটু কম হলেও চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন এমনটাই আশা করছেন তারা।

    এ সময় কৃষক আনোয়ারুল বলেন, বরাবরের মত চলতি বছর আমি, ৩৫বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। এর মধ্য ৪বিঘায় লাগানো ছিল আগাম জাতের আলু। ২০ সেপ্টেম্বর, ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতে আলু লাগানোর পর ৬১দিনের মাথায় আলু তুললাম। জমিতে ৪০জন শ্রমিক কাজ করেছে। যা ৪বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫বস্তা আলু হবে। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও ৮০ থেকে ১শ টাকা বাজারের আশায় তুলেছি। ওই দামে বিক্রি হলে লক্ষাধিক টাকা খরচবাদে দিগুন টাকা লাভ হবে।

    অপর কৃষক মমেনুর জানান, ২০ সেপ্টেম্বরে ২বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি ভালো দামের আশায়। তবে জমি উচু হওয়ায় আশ্বিনা বৃষ্টিপাতে তেমন কোন ক্ষেতি হয়নি। এখন সেই জমির আলু তুলছি। যা ১০ থেকে ১২ বস্তা আলু হবে। খরচবাদে দিগুন টাকা আয় হবে। দেশের বাজারে চমকপ্রদসহ চড়া দামের আশায় ওই কৃষকের আলুসহ ট্রাকযোগে ঢাকা কাওরান বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্ততি নিয়েছি।

    স্থানীয় কৃষকরা জানান, আগাম আলুর মৌশুমে বৈরী আবহাওয়ায় কারণে আগাম আলু চাষিরা বিপাকে না পড়লে ইতিমধ্য ৩০শতাংশ জমির আলু বাজারে চলে আসত। এখন টুকটাক আলু তোলা শুরু হয়েছে। আর ক’দিন গেলে উপজেলার ৯টি ইউপি’র বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে আলু উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হবে। তবে বাজার দর ঠিক থাকলে আলু চাষিগণ লাভবান হবে। আর ব্যবসায়ীগন হুমড়ি পড়ে ট্রাকে ট্রাকে এ আলু ঢাকা চট্রগ্রাম, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সরবরাহ করেন। কৃষকদের ঘরে আসবে বান্ডিলে বান্ডিলে টাকা। এ ফসল চাষে এ অঞ্চলের কৃষকের শুধু দিন বদলই নয় এসেছে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন।

    আরো জানান, আলু উত্তোলনের পর ওই জমিতে পুনরায় নমলা আলুসহ সাথী ফসল হিসেবে ভুট্রা, মিষ্টি, কুমড়া, কাঁচামরিচ ও শীতকালীন সবজি চাষ করে থাকেন। পরবর্তীতে ওই ফসল গুলোতে আর সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না।

    জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। বর্তমান আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের আগাম আলু বাংলাদেশের জন্য রোল মডেল। কৃষকরা ভাল দাম পেলে আগামীতে আরো কৃষক আগাম আলু চাষে উৎসাহী হবে। চলতি বছর এ আলু উৎপাদানের অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙ্গবে বলে আশা করছি। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ