• আমার দেশ

    দেশের রাজনীতির ধরণ দেখলে মনে হয় দেশ প্রাকসভ্য পর্যায়ে রয়েছে-পীর সাহেব চরমোনাই

      প্রতিনিধি ৪ নভেম্বর ২০২২ , ৩:৪৪:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

    আঃ কাদের কারিমী-বরিশাল জেলা প্রতিনিধি:

    রাসূল সা.-এর সীরাতের অনুসরণের মাধ্যমেই চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট নিরসন সম্ভব
    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও দেশের মানুষ নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। অধিকার বঞ্চিত মানুষ এখনও অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করছে। ভাত ও ভোটের অধিকারের জন্য রাজপথে নেমে এসেছে মানুষ। দেশ এখন চরম সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। জাতীয় সম্পদের অপরিকল্পিত অপব্যবহারের মাধ্যমে চরম পর্যায়ের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মাধ্যমে দেশের শিল্প-কারখানার স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে; যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। একই সমস্যাকে কেন্দ্র করে দিনদিন দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে দেশ অস্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। নিম্নবিত্ত তো বটেই মধ্যবিত্তের নাগরিকরাও জীবনধারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি রাসূল সা.-এর সুন্নাহকে উপেক্ষা করে মানব রচিত বুর্জোয়া নীতি আদর্শের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনা করার কারণেই দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের এসব সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। সুন্নাহর আলোকে জাতীয় সম্পদের অপব্যবহার রোধের মাধ্যমে এসকল জাতীয় সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

    পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, নববী আদর্শ বাদ দিয়ে মানবরচিত কুফরি মতবাদের অনুসরণ ও অনুকরণর কারণে দেশের সামগ্রিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলামী অনুশাসন বাদ দিয়ে অন্য কোনো বুর্জোয়া মতবাদের প্রাধান্য দেয়া কখনোই বুদ্ধিমান শাসকদের কাজ হতে পারে না। তিনি বলেন, এখানকার রাজনীতির ধরণ দেখলে মনে হয় দেশ প্রাকসভ্য পর্যায়ে রয়েছে। বিগত জাতীয় নির্বাচনসমূহ ভোট ডাকাতির মহোৎসব করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও দেশের রাজনীতি অস্থির হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, প্রধান বিরোধী দলসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে রাজপথে মোকাবেলা করা হবে বলে বলা হচ্ছে; যা রাজনীতির শিষ্টারচার পরিপন্থি। তিনি বলেন, সভ্য দেশের রাজনীতি এভাবে চলতে পারেনা বরং আইন, নিয়ম-কানুন এবং সংবিধান মেনে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমেই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে হবে। বর্তমান সরকার দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গলাটিপে হত্যা করেছে। প্রশাসনকে নির্জীব আজ্ঞাবহ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বাঁচো-মরো পরিস্থিতিতে ফেলেছে; যা কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। এই অবস্থার পরিবর্তনে ক্ষমতাসীনদেরকেই প্রধান ভূমিকা নিতে হবে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে। সেজন্য সর্বদলীয় জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।

    আজ (৪ নভেম্বর ২০২২) শুক্রবার, সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর গুলিস্তানস্থ কাজী বশির মিলনায়তনে জাতীয় সীরাত সম্মেলন, সীরাত প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ, বিশ্বজয়ী হাফেজ-ক্বারীদের সংবর্ধনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জাতীয় সীরাত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, দলের সিনিয়র নায়েবে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই), মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।

    সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এবং কেএম শরীয়াতুল্লাহ ও মাওলানা জিয়াউল আশরাফের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সীরাত সম্মেলনে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারি সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রধান মুফতী আল্লামা হিফজুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস ড. মুফতী ওয়ালিউর রহমান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক ড. মুফতী রশীদ আহমদ ও ড. মাওলানা হুসাইনুল বান্না, সীরাত গবেষক মাওলানা যাইনুল আবিদীন, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাসিক মদীনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ বদরুদ্দীন খান, ইবি অধ্যাপক ড. গোলাম মাওলা, সীরাত গবেষক মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী, কবি, লেখক ও গবেষক মাওলানা মুসা আল হাফিজ, কবি এমদাদুল হক, শিক্ষকনেতা অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, শ্রমিকনেতা আমিনুল ইসলাম, যুবনেতা আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ছাত্রনেতা নূরুল করীম আকরাম, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতী শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ