• রাজশাহী বিভাগ

    তানোরে চাল কলের আড়ালে অবৈধ মুড়ি কারখানা

      প্রতিনিধি ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৫:৫৮:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:

    রাজশাহীর তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) তানোর-চৌবাড়িয়া রাস্তার মাদারীপুর চালকলের আড়ালে অবৈধ মুড়ি কারখানা গড়ে ভেজাল মুড়ি উৎপাদনের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অপকর্ম করা হলেও অজ্ঞাত কারণে কর্তৃপক্ষ নিরব ভুমিকা পালন করে চলেছে।এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে অবৈধ মুড়ি কারখানা বন্ধের দাবিতে গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মাদারিপুর মতিউরের চালকলের নামে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের নামে সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়।

    অথচ চালকল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রেখে গোপণে মুড়ি কারখানা করে ভেজাল মুড়ি উৎপাদন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে এখানে মুড়ি উৎপাদনে মুড়ির রং দৃষ্টিদন্দন করতে রাসায়নিক সার (ইউরিয়া), কাপড়ের রং ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নানা উপকরণ মেশানো হয়। অন্যদিকে কৃষি জমির মাঝে গড়ে উঠা এই চালকলে মুড়ি উৎপাদনে দিনরাত সমান তালে কাঠসহ রাবারের জুতা-স্যান্ডেল পোড়া হচ্ছে। এতে ফসলী জমির ধানসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

    এদিকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সরজমিন দেখা যায়, চাতালের ভিতরে বিকট শব্দে ধোঁয়া বের হচ্ছে এবং অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে মুড়ি। এসব মুড়ি তৈরীর পর পরই বিএসটিআই’র লোগো সংবলিত প্যাকেটে প্যাকেটজাত করা হচ্ছ। এ সময় উন্মুক্ত শরীরে ময়লাযুক্ত হাত-পাঁয়ে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছিল এদৃশ্যের ভিডিও ধারণ করতে গেলে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর চড়াও হয়ে বলেন, মালিক সেতুর হুকুম ছাড়া ছবি তোলা যাবে না।

    একটু পরেই লাঠিহাতে বয়োজ্যেষ্ঠ একব্যক্তি এসে বলেন, কিসের ছবি তুলছেন, আমরা চুরি করে ব্যবসা করছি না, সব দপ্তরের কাগজপত্র আছে। তিনি দেওয়ান নামের প্যাকেট নিয়ে এসে বলেন এখানে সবার অনুমতি লেখা আছে। প্যাকেটের গায়ে লিখা অটোমেটিক মেশিনে তৈরি দেওয়ান মুড়ি সবার সেরা, মসজিদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, মসজিদ মার্কা দেওয়ান মুড়ি, সবার সেরা, এক্সপোর্ট কোয়ালিটি, ইউরিয়া মুক্ত, নেট ওজন ৫০০ গ্রাম, বিএসটিএর মনোগ্রাম থাকলেও কোন কিছু লিখা নেই। ব্যাচ নং উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ন তারিখ, বাজার মুল্য লিখা আছে কোন তারিখ নির্ধারিত মুল্য কিছুই লিখা নেই। ভিতরের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর মারাত্মক নোংরা।

    স্থানীয়রা জানান, সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের জন্য সরকারি ভাবে যেই চাল কলের বরাদ্দ হয় সেই চাল কল কিভাবে মুড়ি কারখানা হয়। দিনরাত সমান তালে খড়ি পুড়ানো হচ্ছে। যার বিষাক্ত ধোয়ায় ফসল ও গাছ-পালার চরম ক্ষতি হচ্ছে, আমরা নিষেধ করলে আমাদের নামে উল্টো মামলার হুমকি দেন মালিক পক্ষ। তারা আরো বলেন, চালকলের মালিক মাদারিপুর গ্রামের মতিউর রহমান। মতিউরের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছেন নওগাঁর সেতু নামের এক ব্যক্তি। এবিষয়ে সেতু সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,

    সকল দপ্তরের কাগজ আছে বলেই প্রকাশ্যে কারখানা চলছে। আমি নওগাঁর ছেলে সেই ক্ষমতা নিয়েই কারখানা চালাচ্ছি, প্রশাসন অভিযান দিতে এলেই বুঝবে আমি কে। এবিষয়ে মতিউর রহমান বলেন, চাতালের ব্যবসা নাই এই জন্য ভাড়া দিয়েছি সমস্যা কি। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ এবিষয়ে তিনি অবগত নন, তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ