• শিক্ষা

    চৌহালী প্রাথমিক স্কুলের ভবন নদীতে বিলীন

      প্রতিনিধি ২০ অক্টোবর ২০২২ , ৫:২৮:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ লুৎফর রহমান লিটন-সলঙ্গা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

    পঞ্চম দফায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ভাঙন চলছে। গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে তীব্র ঘূর্ণিপাকের কারণে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আরেকটি নদীর পাড়ে ঝুলে আছে। যেকোনো সময় বিলীন হতে পারে নদীতে। এদিকে বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাকার্যক্রম। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া চারটি গ্রামে ভাঙন চলছে। ভাঙন ঠেকাতে পাউবো যথাসময়ে কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়ায় শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

    স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চৌহালীর সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে চলছে ভাঙন। এ ছাড়া নদীতে পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় তীব্র ঘূর্ণিপাকের কারণে দেওয়ানতলা, সংকরহাটি, গাবেরপাড়, মাঝগ্রাম সদিয়া ও চাঁদপুর গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবন গত মঙ্গলবার ভোরের দিকে নদীর পেটে চলে যায়। আরেকটি ভবন ঝুলে আছে। যেকোনো সময় সেটিও নদীর পেটে চলে যাবে। একাডেমিক ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বিদ্যালয়টির প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম জানান, বিদ্যালয় ভবন চোখের সামনে বিলীন হলেও করার কিছু নেই। পাউবোসহ সংশ্লিষ্টদের বারবার বলেও স্কুলটি রক্ষা হলো না। যদি এখানে স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজ করে দিত তাহলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। এখন দ্রুত একটি ঘরের ব্যবস্থা না হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।
    রেখা খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুলঘর নদীতে চলে গেল। এখন আমরা পড়াশোনা করব কোথায়? আমরা একটা ঘর চাই। আবার স্কুলে যেতে চাই।’

    বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য রমজান আলী শেখ বলেন, চাঁদপুরসহ চারটি গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। একটি স্কুল বিলীন হলো। হুমকিতে আরেকটি হাই স্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতকিছুর পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তকর্তাদের পরিদর্শন ও আশ্বাসে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। আর কত বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীর পেটে গেলে স্থায়ী বাঁধের কাজ হবে। যদিও এর আগে কিছু অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তবে সেটির যথাযথ কাজ না হওয়ায় ভাঙন চলমান রয়েছে। এ জন্য পাউবা কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের লোকজন দায়ী।

    সদিয়া চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাঙনরোধে একটি প্রকল্প অনুমোদন হলেও কাজ শুরু না হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ চারটি গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। এ জন্য পাউবো কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম গাফিলতি রয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর দাবি তাদের। ভাঙন তদারকির দায়িত্বে থাকা সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিল্টন হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো মন্তব্য করবেন না।
    সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

    পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাবনার বেড়া কৈতলা নির্মাণ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহীন রেজা জানান, বন্যা এবং নদীতীর ক্ষয়ের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিনিয়োগ কর্মসূচি প্রকল্প-২-এর আওতায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে চৌহালীর সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের মেহেরনগর থেকে এনায়েতপুর বাঁধ পর্যন্ত সাত কিলোমিটার এলাকায় আন্ডারওয়াটার ওয়েব প্রটেকশন কাজ করা হবে। বর্তমানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চূড়ান্তের কার্যক্রম চলছে। ভাঙনের এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ