• আইন ও আদালত

    কুমিল্লায় গণধর্ষণের শিকার যুবতীর আত্মহত্যা প্রধান আসামী হাসান জেলহাজতে প্রেরণ

      প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২৩ , ৮:১০:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

    কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:

    কুমিল্লার দেবীদ্বারে গণধর্ষনের শিকার যুবতীর আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় ৩ ধর্ষককে অভিযুক্ত করে যুবতীর ‘মা'(৫০) বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। ওই ঘটনায় মামলার প্রধান আসামী হাসান বৃহস্পতিবার (৬এপ্রিল) কুমিল্লার ৪নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ওমর ফারুক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠাবার নির্দেশ দেন।

    পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ওই যুবতীর আত্মহত্যার সংবাদটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রকাশের পর জাতীয় মানবাধিকার সংস্থার দৃষ্টি আকৃস্ট হলে, দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।

    একই সময়ে ঘটনার অনুসন্ধানে মাঠে নামে পুলিশসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা। এদিকে ঘটনা প্রকাশের পর ধর্ষক পরিবার ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকীর মুখে ভিক্টিমের ‘মা’ আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হয়। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (৪এপ্রিল) বুড়িচং উপজেলা থেকে আত্মগোপনে থাকা তাকে উদ্ধার করেন। ওই দিন বিকেলে ভিক্টিমের মা’(৫০) বাদী হয়ে ৩ ধর্ষক পৌর এলাকার বিনাইপাড় গ্রামের মো. আব্দুল কাদের’র পুত্র মো. হাসান(২৭), মৃত: রাজা মিয়ার পুত্র মো. রুবেল মিয়া(২২), মুকবল হোসেন’র পুত্র মো. জসীম উদ্দিন(২৬) ও অজ্ঞাতনামা আসামীদের অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ০৪/৭৩। মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান আসামী হাসান বৃহস্পতিবার (৬এপ্রিল) আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে, জামিন নামঞ্জুর করে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠায়।

    উল্লেখ্য, গত ১৭মার্চ রাত অনুমান সোয়া ৮টায় ভিক্টিম পিংকি আক্তার পার্শ্ববর্তী খালার বাড়ি থেকে ফেরার পথে হাসান, রুবেল ও জসীম মুখে উড়না পেচিয়ে একটি বাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ঘটনা টের পেয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন দৌড়ে গেলে ৩ ধর্ষক পালিয়ে যায়। গত ২০মার্চ রাত ৯টায় কীটনাশক টেবলেট (কেরির টেবলেট) খেয়ে পিংকি আত্মহত্যা করে। এদিকে ধর্ষকদের বাঁচাতে গত ২৫মার্চ ‘শাহজাহান ফিসিং নেট ইন্ডাস্ট্রির অফিস কক্ষে এক সালিশ ডাকা হয়। সালিশে ‘শাহজাহান ফিসিং নেট ইন্ডাস্ট্রির মালিক প্রধান আসামি হাসানের মামা মো. শাহজাহান মেম্বার(৪৮), তার ভাই পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সাধারন সম্পাদক আবু তাহের(৪৬), প্রতিবেশী মো. মোস্তফা(৬৫), ছেনু মাষ্টার(৫০) ও মো. আওলাদ(৪০) সহ একটি প্রভাবশালী মহল ২লক্ষ টাকা জরিমানায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়।

    এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কুষ্ণ ধর জানান, একাধিকবার অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের সাথে অভিযুক্তদের এবং সালিশে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার হোতা সালিশদারদের খুঁজে পাইনি। এসময় ভিক্টিমের মা’ও পলাতক ছিলেন। বুড়িচং এলাকা থেকে ভিক্টিমের মা’কে উদ্ধার করে এনে মামলা দায়েরে সহযোগীতা করি। বৃহস্পতিবার (৬এপ্রিল) মামলার প্রধান আসামী হাসান কুমিল্লা ৪নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করার সংবাদে আদালতে গিয়ে জামিনের বিরোধিতা করলে আদালত আসামী হাসানকে জেল হাজতে পাঠান। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ