• আমার দেশ

    সব ধর্মের ব্যবসা বাংলাদেশে আছে কেবল ইসলাম ধর্মের তালিকা কেন?

      প্রতিনিধি ১৭ মে ২০২২ , ৯:৪৭:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    লেখক-শামীম আহমদ

    সব ধর্মের ব্যবসা বাংলাদেশে আছে। কেবল ইসলাম ধর্মের তালিকা কেন? ইসলাম ধর্মে নারীদের অনেক সম্মান দেয়া হয়েছে। যদিও কন্যা সন্তান আল্লাহর উপহার। তবে কি তুরিন আফরোজ নষ্ট সন্তান। তুরিন আফরোজ কি একসময় পালিয়ে যাবে তসলিমা নাসরিনের মতো! আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যা শিশু দিবস। প্রকৃতপক্ষে সন্তান-সন্ততি (ছেলে-মেয়ে উভয়েই) আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত ও শ্রেষ্ঠ উপহার। ইসলাম উভয়কেই আলাদা সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে। কাউকে কারও থেকে ছোট করা হয়নি কিংবা অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়নি। কন্যা সন্তানের মাধ্যমে আল্লাহ পরিবারে সুখ ও বরকত দান করেন। হাদিসে এমন কথা উল্লেখ হয়েছে।

    কিন্তু আমাদের সমাজে এখনো অনেক পরিবারে কন্যা সন্তান জন্ম নিলে ইতিবাচক চোখে দেখা হয় না। অনেকে আবার মেয়ে সন্তানের মায়ের ওপর নাখোশও হন। বিভিন্ন কায়দায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কন্যা সন্তান হলে অপছন্দ করা, তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং তাদের লালন-পালনের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন না করা, ইসলামপূর্ব বর্বর জাহেলি যুগের কুপ্রথা। এমন কাজে আল্লাহ তাআলা ভীষণ অসন্তুষ্ট হন।

    আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখ অন্ধকার হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে।

    তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে নাকি তাকে মাটির নিচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখো, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট। (সুরা আন-নাহল, আয়াত : ৫৮-৫৯) রাস‍ুল (সা.) মেয়েদের অনেক বেশি ভালোবাসতেন। মেয়েরা ছিল তার আদরের দুলালী। আজীবন তিনি কন্যাদের ভালোবেসেছেন এবং কন্যা সন্তান প্রতিপালনে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। কন্যা সন্তান লালন-পালনে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যাকে তারা সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করবে, কিয়ামতের দিন আমি এবং সে এ দু’টি আঙ্গুলের মতো পাশাপাশি আসবো (অতঃপর তিনি তার আঙ্গুলগুলি মিলিত করে দেখালেন)’।

    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করনে, ‘যার ঘরে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলো, অতঃপর সে ওই কন্যাকে কষ্ট দেয়নি, মেয়ের ওউপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার ওপর প্রধান্য দেয়নি, তাহলে ওই কন্যার কারণে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবশে করাবেন। হযরত আবদুল্লাহ উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ওই নারী বরকতময়ী ও সৌভাগ্যবান, যার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়। কেননা, (সন্তানদানের নেয়ামত বর্ণনা করার ক্ষেত্রে) আল্লাহ তায়ালা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেন, তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, আর যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।

    আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমার কাছে এক নারী এলো। তার সঙ্গে তার দুই মেয়ে। আমার কাছে সে কিছু প্রার্থনা করলো। সে আমার কাছে একটি খেজুর ছাড়া কিছুই দেখতে পেলো না। আমি তাকে সেটি দিয়ে দিলাম। সে তা গ্রহণ করললো এবং তা দুই টুকরো করে তার দুই মেয়ের মাঝে ভাগ করে দিলো। তা থেকে সে নিজে কিছুই খেলোল না। তারপর নারীটি ও তার মেয়ে দু’টি উঠে পড়লো এবং চলে গেলো। ইতোমধ্যে আমার কাছে নবী (সা.) এলেন। আমি তার কাছে ওই নারীর কথা বললাম। নবী (সা.) বললেন, ‘যাকে কন্যা দিয়ে কোনো কিছুর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয় আর সে তাদের প্রতি যথাযথ আচরণ করে, তবে তা তার জন্য আগুন থেকে রক্ষাকারী হবে।

    তুরিন আফরোজ একজন কন্যা সন্তান। তুরিনের মায়ের মুখে শুনেছি তুরিন একটি কুসন্তান। তুরিন তার মাকে যতোরকম নির্যাতন করছে সেই বয়ান তার মা নিজ মুখেই করছেন। সংবাদ সম্মেলনের তুরিনের মায়ের ভাষ্যমতে জানতে পেরেছি তুরিন তার মাকে নিজের বসত বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তুরিনকে আমি দুর থেকে চিনি একদশক আগে থেকে। তখন টুকটাক কিছু সেমিনারে অংশ নিতে দেখা গেছে তাকে। এই মহিলা যখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কিছুদিন কাজ করছে সেখানেও তার নামে অনেক অপকর্মের কথা চলছিলো। কর্মজীবনে সে কতোটা অসৎ তার প্রমাণ সকলেই পেয়েছে। বিচারিক কার্যক্রম থেকেও তাকে অপসরণ করছে দেশের আইন বিভাগ। ২০১৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তুরিন আফরোজ। তার অসততার জন্য কয়েক বছর পরে সেই ট্রাইবুনাল থেকে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়। মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলার একজন আসামীর সঙ্গে বৈঠকের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিলো।

    মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই)আর পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর (অব) ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে টেলিফোন করে গোপনে বৈঠক করতে চান এই মহিলা। ২০১৭ সালের ১৯শে নভেম্বর তিনি গুলশানের একটি রেঁস্তোরায় ওয়াহিদুল হক, তার স্ত্রী ও একজন স্বজনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন সময় তুরিন আফরোজ আসামীর কাছে ঘুষও চেয়েছেন। সেই বৈঠকের কথোপকথন গোপনে রেকর্ড করেন ওয়াহিদুল হক। ২০১৮ সালের ২৪শে এপ্রিল মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন তার মোবাইল ফোনে সেই রেকর্ড পায় পুলিশ। তাদের কাছ থেকে তদন্ত সংস্থা সেটি জানতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল একজন প্রসিকিউটর। সেই বৈঠকের তথ্যপ্রমাণ ও অডিও রেকর্ড চীফ প্রসিকিউটরের কাছে দেয়ার পর প্রথমে এই মামলা পরিচালনা থেকে তুরিন আফরোজকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর তুরিন আফরোজকে মামলা পরিচালনা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেন এবং তার কাছে থাকা নথিপত্র চেয়ে পাঠান। পাশাপাশি এ ঘটনায় একটি তদন্তও শুরু করা হয়েছে।

    তার কিছুদিন পরে অসৎ এই মহিলা তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ”আমি এখনো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদে বহাল আছি। আমাকে কেউ বরখাস্ত করেনি।” সেখানে তিনি লিখেছেন, ”আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ৮(২) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের কোন মামলাতে তদন্ত করার এখতিয়ার আমার আছে।আর তদন্ত করতে গেলে নানা রকম কৌশল অবলম্বন করতে হয় ।

    সুতরাং আমি তদন্তের স্বার্থে যে কোন প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণ করতে পারি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমি এই পর্যন্ত প্রসিকিউটর হিসেবে যা কিছুই করেছি তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিলেন । আমাকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়।”

    অসৎপথ বেছে নেয়া এই মহিলাকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। এই মহিলা আমার দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে ব্যবসা করছে। এটা তার কোন ধর্মের ব্যবসা? মানব ধর্মের বৈশিষ্ট্য এই ব্যবসায়ীকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সম্প্রতি এই মহিলা কয়েকজন অসৎসঙ্গী নিয়ে বাংলাদেশের আলেমদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বলছে এবং তাদের নাম দুর্নীতি দমন কমিশনে দিয়েছে। এই মহিলা যে বড় দুর্নীতিপরায়ণ তার জন্য কি বিচার করবে রাষ্ট্র। সে রাষ্ট্রের সাথে মুনাফেকি করছে। সব ধর্মের ব্যবসা বাংলাদেশে আছে। কেবল ইসলাম ধর্মের তালিকা কেন? বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম রাষ্ট্র। এতো বড় ইসলামী রাষ্ট্রের ইসলামী বক্তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পেল কোথায় এই নষ্ট মহিলা!

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ