• আবহাওয়া

    শৈত্যপ্রবাহে ভোগান্তিতে উত্তর পশ্চিমের মানুষ

      প্রতিনিধি ৫ জানুয়ারি ২০২২ , ২:৩১:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    দেশে চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় শৈত্যপ্রবাহ বইছে। মূলত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে গত তিন দিন ধরে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে শীতের অনুভূতি ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব জেলায়ই ছিল বেশি। এমন পরিস্থিতি আরও ৩-৪ দিন বিরাজ করতে পারে। ২-৪ দিন বিরতি দিয়ে পুরো জানুয়ারিতেই শীতের প্রকোপ থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) সূত্র এ তথ্য জানা গেছে।

    এদিকে তীব্র শীতে বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে জনজীবন দুর্ভোগ বেড়েছে। গত কয়েকদিন ঠিকমতো সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো ঠান্ডা হাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এই পরিস্থিতিতে জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের ভোগান্তি একটু বেশিই। গরম কাপড়ের অভাবে অনেক দরিদ্র মানুষ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

    আবহাওয়াবিদরা জানান, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের দেশ বাংলাদেশের জন্য জানুয়ারি শীতল মাস। সেই হিসাবে শীতের প্রকোপ থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে এখনকার শৈত্যপ্রবাহের মূল কারণ চারটি। এগুলো হচ্ছে-ঊর্ধ্ব আকাশ এবং হিমালয়ের দিক থেকে শীতল বায়ু প্রবাহ, ঘন কুয়াশা, স্বল্পস্থায়ী দিন ও দীর্ঘমেয়াদি রাত এবং কম জলীয় বাষ্প। ভারতের দিল্লি, উত্তরপ্রদেশসহ আশপাশের রাজ্যে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে প্রবাহিত বায়ু ওইসব রাজ্য হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হচ্ছে। এ বায়ুর গতি ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার ঘণ্টায়। প্রকৃত শীত যাই থাকুক না কেন, হিমালয়ের দিক থেকে আসা বায়ু শীতের অনুভূতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

    আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক যুগান্তরকে বলেন, এ শৈত্যপ্রবাহ ৮-৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলতে পারে। মাাঝখানে ২-৪ দিন বিরতি দিয়ে ফের শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে। শীতের অনুভূতি শহরাঞ্চলের চেয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক বেশি।

    বিএমডির বুলেটিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল হিমালয়সংলগ্ন জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় টেকনাফে ২৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৫ ও ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    রংপুর ব্যুরো জানায়, ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় কাহিল রংপুর অঞ্চলের জনজীবন। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে এ অঞ্চল। জেঁকে বসেছে হাড় কাঁপানো শীত। ঠান্ডার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষ। এমন ঘন কুয়াশা পড়লে বোরো বীজতলা, আলুসহ ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। শীতের কবল থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে গত ৫ দিনে শিশু ও নারীসহ ২০ জন দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ জনকে গুরুতর আহতাবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও শীতজনিত রোগে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। সরকারিভাবে শীতবস্ত্র শুরু করা হলেও তা অপ্রতুল।

    দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, জেলায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা। হিমেল বাতাসে কাহিল হয়ে পড়েছেন এ জনপদের মানুষ। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন, জেলায় মঙ্গলবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, জেলায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। বয়স্ক ও শিশুদের খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার শহরের গাউন মার্কেটসহ পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে শীতের কাপড় কেনার জন্য মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। গলাচিপা ও দক্ষিণ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে প্রায় পুরো উপজেলা। দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপমাত্রা খুবই কম। এতে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রিকশাচালক মো. বাবুল মিয়া জানান, পুরাতন কাপড় কিনে কোনো রকমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ