• আমার দেশ

    লাগামহীন বাজার, বিপাকে মধ্যবিত্ত পরিবার, বাচাঁর আকুতি

      প্রতিনিধি ২৫ মে ২০২২ , ১১:১৮:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ শাহ আলম-ক্রাইম রিপোর্টার:

    বর্তমান দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সব জায়গায়। দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন এমন সব ধরনের পণ্য ও সেবার মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ভোজ্য তেল, ডাল, আটা ময়দা,মাছ-মাংস পিয়াজ শাকসবজি সহ এমন কোন পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। এছাড়াও বেড়েছে বাড়ি ভাড়া পরিবহন ব্যয় চিকিৎসা ও শিক্ষা উপকরণের দাম। এদিকে দেশে ধানের ভরা মৌসুমে বাজারে চালের দাম কম থাকার কথা থাকলেও এবার দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। বোরো মৌসুমেও বেড়েছে চালের দাম গত দশ দিনের ব্যবধানে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালে বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

    বলা বাহুল্য নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি জীবন যাত্রায় বাড়তি ব্যয়ের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে মধ্যবিত্ত পরিবার। নিম্নবিত্তরা সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারছে বলে তাদের জীবন এক রকম চলে যাচ্ছে। কিন্তু মধ্যবিত্তরা দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে গিয়ে পড়েছে বিপাকে। এই পরিবার গুলোতে সদস্য সংখ্যা সেই সাথে সামাজিক পরিস্থিতির কারণে বেশি বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। অনেকের সঙ্গে চাহিদা মেটাচ্ছে নিজের সঞ্চয় ভেঙে। কিন্তু কথা হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের তো আর সকল পরিবারের নেই তাদের অবস্থা দিন দিন শোচনীয় হয়ে পড়ছে।

    এটা ঠিক করোনা মহামারী ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বেই পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ঘটছে। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি এবং পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় উন্নত দেশ থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল সব দেশেই ঘটছে মূল্যস্ফীতির হার। যুদ্ধ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী দিনে দেশে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলেও আগাম সর্তকতা জানিয়েছে জাতিসংঘ। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে করোনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেওয়া গেলেও সিন্ডিকেটের কারণে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ঘটতেই পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এ নিয়ম থাকছেনা পণ্যের পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি ও সরবরাহ থাকলেও অধিক মুনাফার জন্য তা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

    দ্রব্যমূল্যের অযৌক্তিক বৃদ্ধির পেছনে কাজ করছে বাজার সিন্ডিকেট তারা যোগ সাজশের মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।কখনো কখনো তারা তৈরি করছে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সিন্ডিকেট ভাঙ্গা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে সিন্ডিকেটের কারসাজি নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব সরকারের। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের স্বার্থে ইচ্ছে মতো পণ্যের দাম বাড়াবে আর সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকবে তা হতে পারে না। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগ প্রতি নিয়ত অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন গোডাউন হতে হাজার হাজার ব্যারেল তেল উদ্ধার করলেও নাম মাত্র জরিমানা করে তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে সেই পণ্য বিক্রয়ের জন্য। জরিমানার পাশাপাশি উদ্ধারকৃত মালামাল জব্দ করে।

    নির্ধারিত মূল্যে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রয় করলে বেশিরভাগ সাধারণ ভোক্তা উপকৃত হবেন বলে অনেকেই মনে করেন। এতে করে জরিমানা প্রদানকারী দোকানদারের অবস্থা জেনে শুনে অন্যান্য দোকানদার এই ব্যবসা হতে দূরে থাকতো। এখানে প্রশ্ন হল জরিমানার টাকা তুলতে গিয়ে আবারও তারা জড়িয়ে যাচ্ছে অবৈধ উপায়ে ব্যবসা করার জন্য। সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে বারবার বলা হলেও শুধুমাত্র কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে দেশের সাধারণ জনগণ আজ জিম্মি হয়ে পড়ছে। বাজার তদারকির মাধ্যমেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের জোরালো ভূমিকা দেখার দরকার এই মুহূর্তে।

    বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার দায় বহন করবে সাধারণ ভোক্তা এটা হতে পারে না। সিন্ডিকেটের কারসাজির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে না পারা ব্যর্থতার শামিল তা খুবই দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। বর্তমান পরিস্থিতির উপর যেসব দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধি পেয়েছে তা প্রতিনিয়ত এবং প্রতিদিনের জন্য দরকার। সরকার কোন না কোন ভাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করলেও এর কোন সুফল পাচ্ছে না সাধারন জনগন সাধারণ জনগণ বলতে মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোই বেশি নিপীড়িত কারণ একটাই সামাজিক পরিস্থিতির কারণে এই পরিবারের কোনো সদস্য না পারে নিজের জমিতে কাজ করতে না পারে।

    অন্যের জমিতে কাজ করতে যার ফলে তার উৎপাদিত ফসলের উপরই নির্ভরশীল থাকতে হয়। নিম্নবিত্ত পরিবার গুলো সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কোনো না কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।কিন্তু এখন সময়ের দাবি মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোকে নিঃস্ব হওয়ার হাত হতে বাঁচানো অতীব জরুরী। তা না হলে দেশ ও জাতি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি আক্ষেপের সুরে জানান সরকারকে শুধু গরিবের ই না আমাদেরও তাহলে কি আমাদের বাঁচার কোন অধিকারই থাকবেনা সরকার ইচ্ছা করলেই মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কোন একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করলে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার নিঃস্ব হতে বাঁচবে বলে তারা জানান।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ