• রাজশাহী বিভাগ

    যমুনায় নাব্যতা সংকট, বিপাকে স্কুল গামী শিক্ষার্থীরা

      প্রতিনিধি ২৬ মার্চ ২০২২ , ১২:১৫:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ লুৎফর রহমান লিটন-সলঙ্গা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

    সিরাজগঞ্জে শুস্ক মৌসুমে শুরুতেই পানি শুকিয়ে বিশাল বিশাল বালু চর জেগে উঠেছে। বালচর জেগে ওঠার ফলে নৌকা চলাচলেও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে পাড় হলেও কষ্ট করতে হচ্ছে স্কুলগামী কমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের। রাক্ষুসী যমুনা এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে।

    জানা যায়, যমনা বিধৌত শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনি, কৈজুরি, গালা, খুকনি ও জালালপুর এ ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত যমুনা নদীর পানি শুকিয়ে ধূ ধূ বালুর চরে পরিনত হয়েছে। যে অংশে সামান্য পানি আছে সেখানেও অসংখ্য ডুবচর জেগে উঠেছে। এ কারণে এখন আর যমুনা নদীতে আগের মত নৌকা চলে না। অপর দিকে বানতিয়ার-মনাকোষা নৌরুটে বড় চানতারা হতে মাকড়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সৃষ্ট এ বালুর চরের কারণে প্রায় ৩ মাস ধরে এ নৌরুটে নৌ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পণ্য পরিবহনে ভোন্তির শেষ নেই ওই চরের সাধারণ মানুষদের। পায়ে হেটে নদী পার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষাথীরা।

    বানতিয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোনাতনী গ্রামের হাসেম আলী, ঊর্মি খাতুন, জান্নাতি খাতুন, সুমী খাতুনসহ অনেক শিক্ষার্থী বলেন, পানি শুকিয়ে বালুর চর পড়ায় যমুনা নদীতে আর নৌকা চলে না। ফলে আমাদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাটু পানি ভেঙ্গে ও রোদে উত্তপ্ত ২ কিলোমিটার বালুর চর মাড়িয়ে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। তাই প্রায়ই স্কুলে যাওয়া হয় না। এতে আমাদের পড়ালেখা বিঘিœত হচ্ছে। নদীটি ড্রেজিং করে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক করা হলে আমরা আবারও নৌকায় স্কুলে যাতায়াত করতে পারবো।

    এতে আমাদের স্কুলে যাতায়াতের কষ্ট দূর হবে।বানতিয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হযরত আলী বলেন, যমুনা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বিশাল বিশাল বালু চর জেগে উঠেছে। প্রখর রোদে উত্তপ্ত এ বালুর চর পাড়ি দিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে চায় না। ফলে তাদের পড়ালেখায়ও ভাটা পরেছে। রেজাল্টও খারাপ হচ্ছে। নদীটি ড্রেজিং করে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক করা হলে শিক্ষার্থীরা সহজে নৌকায় করে স্কুলে যাতায়াত করতে পারবে।

    অপর দিকে নদীতে পানি না থাকায় নৌকা চলে না। দোকানের মালপত্র মাথায় নিয়ে ধূ-ধূ বালু চর পাড়ি দিতে খুবই কষ্ট হয়। আবার পণ্য পরিবহণে ৩/৪ গুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়। এতে পরিবহণ খরচ বেশি হয়। তখন লাভ তো দূরের কথা উল্টো আরও লোকশান গুনতে হচ্ছে। এ নৌপথ সচল হলে মানুষ স্বল্প খরচে মালামাল পরিবহণ ও যাতায়াত করতে পারবে।
    সোনাতুনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান জানান, শুষ্ক মৌসুমে নদী নাব্য হারায়। ফলে পণ্য পরিবহন ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়ে।

    শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা বলেন, মেগা প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম-চিলমারীরবন্দর সচল করতে অচিরেই আরিচা থেকে চিলমারীবন্দর পর্যন্ত যমুনা নদীর ড্রেজিং কাজ শুরু হবে। এ কাজ শুরু হলে পর্যায়ক্রমে আমাদের এ অংশেও ড্রেজিং হয়ে যাবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ডেল্টা প্রকল্পের আওতায় একটি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এ কাজ শুরু হলে পর্যায়ক্রমে আমাদের এ অংশের শাখা নদীসহ সম্পূর্ণটাই ড্রেজিং হয়ে যাবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ