• Uncategorized

    মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চান্চল্যকর গৃহবধূ মুক্তি খাতুন রিতা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

      প্রতিনিধি ১ মে ২০২১ , ৪:৫০:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ রুম:

    গৃহবধূ মুক্তি খাতুন রিতা (২৭) হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ৩ হত্যাকারী আদালতে ১৬৪ ধারায়স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় পাবনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী-২ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল ইসলাম স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।আজ দুপুরে মুল ঘাতক বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।এই আসামীদের মধ্যে রায়েছে নাটোরে বড়ইগ্রাম উপজেলার চরগোবিন্দপুর গ্রামের মাহাবুল সরকারের পুত্র শরীফ সরকার (২১) এবং একই গ্রামের কামাল সরদারের পুত্র জনৈক শিশু ( আইনের সাথে সংঘর্ষে জড়িত শিশু বলে নাম ও ছবি প্রকাশ করা হলনা (১৭) ও সাব্বির আহমেদ।

    বৃহস্পতিবার হত্যাকান্ড সংঘঠিত হওয়ার পর দুপুরেই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন , তিনি ভিকটিমের শ্বাশুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষন করে হত্যা রহস্য, হত্যাকারী চিহ্ণিত এবং তাদের গ্রেফতারে ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে নির্দেশনা দিলে পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতারও মাঠে নামে।নিহতের শ্বাশুড়ির দেয়া অস্পষ্ট তথ্য এবং প্রযুক্তির সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ) জনাব মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে ঐ দিন রাতে নাটোর জেলার মূল বড়ইগ্রাম থানার চরগোবিন্দপুর গ্রামের শরীফ ও হেলালকে গ্রেফতারে পুলিশ সমর্থ হয়।

    থানায় জিজ্ঞাসাবাদে এবং প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকান্ডে ৪ জনের সম্পৃক্ততার বিষয় পুলিশ নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে শরীফ ও জনৈক শিশু (১৭)শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকোরক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। শনিবার আসামী সাব্বির স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য আদালতে প্রদান করে। । আরেক আসামী গ্রেফতারে পুলিশী তৎপরতার পাশাপাশি হত্যাকান্ডে কারো ইন্ধন বা প্ররোচণা আছে কিনা এসব বিষয়েও তদন্ত চলছে।রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরী দেয়ার জন্য টাকা লেনদেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে জানা ।

    সাব্বিরের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সময় পরিহিত আসামীদের কাপড় ও জব্দ করা হয়েছে।নিহত গৃহবধূ রিতার স্বামী বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাংলা পাওয়ার কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি অর্থের বিনিময়ে মানুষকে চাকুরি দিতেন। নিহত গৃহবধূ রিতার মাধ্যমে চাকুরী প্রার্থী যোগাড় ও টাকা লেনদেন হতো বলে জানা যায়। পিতার স্বামী বায়োজিদের নানা বাড়ির এলাকার সাব্বিরকে ৪০-৪৫ হাজার টাকা বেতন চাকরি দেয়ার জন্য বেশ কিছু টাকা নেয়া হয়।

    এছাড়াও ওই এলাকার আরো কয়েকজনকে যোগাড় করে এনে চাকরির জন্য টাকা দেয়। কিন্তু সাব্বিরকে উল্লেখিত বেতনের চাকরি না দিয়ে কিনারের চাকরি দেয়া হয়। যার বেতন ১২-১৫ হাজার টাকা। এতে সাব্বির ক্ষুব্ধ হয়ে টাকা ফেরত বা বেশী বেতনের চাকরী দাবী করে। এসব টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সাব্বির আরো কয়েকজন চাকরি প্রার্থী নিয়ে হাজির হয়ে গৃহবধূ রিতাকে গলা কেটে হত্যা করে। এসময় শ্বাশুড়িকেও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এই হত্যাকান্ড পূর্বপরিকল্পিত জানিয়ে এই সূত্র জানান, সাব্বির হত্যার উদ্দেশ্যেই ছুরি সাথে করে এনেছিল।

    উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদী শহরের মশুরিয়া পাড়া নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে রিতাকে গলাকাটা হত্যা করা হয়। পরে পাশের ঘরে গৃহবধূর শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনুকে কোরআন শরীফ পড়া অবস্থায় হত্যাকারীরা হঠাৎ তার ঘরে ঢুকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। সেসময় তিনি চিৎকার শুরু করলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তিনি পুত্রবধূর ঘরে গিয়ে গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে এবং থানায় খবর দেয়। পরে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ