• Uncategorized

    মহেশখালীতে রাজনীতির আড়ালে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত যুবলীগ সভাপতি কিবরিয়া

      প্রতিনিধি ১৬ জুলাই ২০২০ , ৫:২৫:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    দেলোয়ার হোসেন-(মহেশখালী কক্সবাজার) প্রতিনিধিঃ

    গত ১৬ জুলাই মহেশখালী থানায় মাদক মামলার ৭ নম্বর আসামী কুুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি কিবরিয়া সিকদার।

    মামলায় তাকে ডিলার হিসেবে উল্লেখ করা হয়।কুতুবজোম ইউনিয়নের যুবলীগের কর্মিরা নেতাকে সম্মান করে ডাকে কিবরিয়া ভাই,পুরো নাম কিবরিয়া সিকদার।

    এতদিন পরিচয় ছিল কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। গত ৫ জুলাই জানাগেল আরেক ভয়ংকর গোপন পরিচয়, যা সমাজ ধংসের কারিগর,স্থানীয় ইয়াবার ডিলার হিসেবে।

    ডিলার হিসেবে কিবরিয়া সিকদারের নামে মহেশখালী থানায় রেকর্ড হওয়া ৫নম্বর মামলায় আসামী নম্বর ৭

    আটক কৃতদের স্বীকারোক্তি মতে পুলিশের অভিযানে সহযোগিসহ পালিয়ে যাওয়া আসামী কিবরিয়ার কাছে ইয়াবা আছে। যা এখনো উদ্ধার করতে পারেনি মহেশখালী থানা পুলিশ।তাকে গ্রেফতার এবং ইয়াবা উদ্ধারে পুলিশ এখনো মরিয়া।

    অন্যদিকে কিবরিয়ার ঘনিষ্ট এক ব্যক্তির মন্তব্য কিবরিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ী নন। তিনি একজন প্রকৃত চিংড়ী ব্যবসায়ী। রাজনীতির মারপ্যাঁচে ইয়াবা মামলার আসামী।

    যেভাবে ইয়াবার ডিলারঃ-চলতি মাসের ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বড় মহেশখালী ইউনিয়নের (৮নং ওয়ার্ডের) পূর্ব ফকিরা ঘোনার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় মহেশখালী থানা পুলিশ।

    সংশ্লিষ্ট সূত্রানুযায়ীঃ-পুলিশের অভিযান টের পেয়ে তিন চারজন লোক পালিয়ে যায়। গিয়াস উদ্দিনের নির্মাণাধীন বাড়ির দক্ষিণ কক্ষ থেকে ফাতেমা বেগম, গিয়াস উদ্দিন ও আমানুল করিমকে আটক করে পুলিশ।

    ইয়াবা ব্যবসায়ী ফাতেমা,গিয়াস উদ্দিন ও আমানুল করিমকে পুলিশ তল্লাসী করে মাদক বিক্রির ১৪,৩৪০/- টাকা সহ মোট ৮৩০ পিচ ইয়াবা এবং ৫০ পুরিয়া গাঁজা জব্দ করে।

    উদ্ধারকৃত ইয়াবাগুলো এ্যামফিটামিন সমৃদ্ধ বলে উল্লেখ করা হয়।পরে গ্রেফতারকৃত তিন আসামী সাক্ষীদের সম্মুখে জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা স্বীকারোক্তি দেয়।

    পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা হলোঃ-কুতুবজোম ইউনিয়নের দৈলার পাড়া ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত মৌলভী মুহিবুল্লাহ পুত্র শান্ত ওরফে কালা মুন,হাজী জালাল আহমদের পুত্র সালাহ উদ্দিন প্রকাশ খুনি সালাহ উদ্দিন (মহেশখালী পৌরসভাস্থ পুটিবিলার তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব আবু বক্কর হত্যার প্রধান আসামী) ও আনসারুল সিকদারের পুত্র কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কিবরিয়া সিকদার।

    তাদের সবার বাড়ি একই এলাকায় কুতুবজোম ইউনিয়নের দৈলারপাড়া গ্রামে।

    এজাহারানুযায়ী ধৃত ব্যক্তিরা সাক্ষীদেয় পালিয়ে যাওয়া ওই তিনজন এবং এরা স্থানীয় ইয়াবার ডিলার। আবদু শুক্কুরের পুত্র আমান উল্লাহ হচ্ছে এজেন্ট।

    স্থানীয় সূত্রে জানাযায়ঃ-কিবরিয়া বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তার এই জীবন যাপন এলাকার অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের মতে এখন মন্তব্য করার সময় শেষ। যাইহোক তদন্তে প্রমাণিত হবে সে ইয়াবার ডিলার নাকি নির্দোষ।

    তাদের কাছে আরো ইয়াবা আছে পুলিশের এজাহারের ভাষ্যানুযায়ী, আসামীদের স্বীকারোক্তি মতে,পাইকারী ধরে বিক্রি করা ব্যক্তিরা হচ্ছেঃ-

    শান্ত ওরফে কালা মনু,সালাহ উদ্দিন, ও কিবরিয়া সিকদার। ক্রয় করা ইয়াবা খুচরাও বিক্রয় করে থাকে। পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই তিনজন ব্যক্তির নিকট আরো বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল বলে জবানবন্দি দেয়।

    তারা পুলিশকে আরো জানানঃ-পালিয়ে যাওয়ার সময় হুড়োহুড়ি করে তাহাদের দখলে থাকা উদ্ধারকৃত তিন প্যাকেট ইয়াবা ফেলে অবশিষ্ট ইয়াবা গুলো সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যায়।

    গ্রেফতারকৃতদের ভাষ্যমতে,পালিয়ে যাওয়া তিনজনই ইয়াবার ডিলার। আমান উল্লাহ এজেন্ট।মহেশখালী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজেদুল করিমের মন্তব্যঃ-

    পুলিশের অভিযান সম্পর্কে কিছুই জানেন না কিন্তু তার রাজনৈতিক সহকর্মী কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কিবরিয়া সিকদার যে মাদকদ্রব্য মামলার আসামী তিনি তাও জানেন না। তবে গত রাতে এক সংবাদ কর্মীর ফোনে বিষয়টি   শুনেছি।খোঁজ খবর নিয়ে যদি ঘটনা সত্যি হয় তাহলে উর্ধতন নেতাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন কিবরিয়ার বিরুদ্ধে।

    কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুরের বক্তব্যঃ-

    মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি কিবরিয়া সিকদারের মাদক (ইয়াবা) বিক্রির সম্পৃক্ততা এবং মামলার বিষয়ে উপজেলা নেতৃবৃন্দ রিপোর্ট করেনি। তারপরও সংগঠনের স্বার্থে ঘটনার সাংগঠনিক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিবেন। যাতে সরকার এবং পার্টির ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন থাকে।

    কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল হক সোহেলের বক্তব্যঃ-

    মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি কিবরিয়া সিকদারের মাদক (ইয়াবা) বিক্রির সম্পৃক্ততা এবং মামলার বিষয়ে জানারপর খোঁজখবর নিতে গিয়ে তাঁকে বলেছেন, কিবরিয়া রাজনৈতিক সরলতার শিকার। তাঁর বাড়ি দৈলার পাড়ায় আর ঘটনাস্থল বড় মহেশখালী।

    ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব,পার্টিতে গ্রুপিং,অতীতের ভোট’কে কেন্দ্র করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।তাঁহারা অর্থাৎ জেলা যুবলীগ কমিটি নির্বাচিত হওয়ার আগেই কুতুবজোম ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

    তারপরও সংগঠন,সমাজ ও দেশের স্বার্থে এই সমাজ ধংসকারী ইয়াবা ব্যবসায় কিবরিয়া জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে দ্রুত।

    কুতুবজোম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি অভিযুক্ত কিবরিয়া সিকদারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ না পাওয়া কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

    মামলার তদন্তকর্মকর্তা এসআই আনিস উদ্দিন বলেনঃ-অভিযানের পর সাক্ষী,আলমত এবং আসামীদের স্বীকারোক্তিমোতাবেক জনস্বার্থে মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।

    বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন আছে। পাশাপাশি অন্য আসামীদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে।মহেশখালীর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ দিদারুল ফেরদৌস সহযোগিতার আহবান করে বলেন, সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে।

    মহেশখালী উপজেলায়ও তা অব্যাহত থাকবে। যেকোনো প্রকার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং চলবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ