• ঢাকা বিভাগ

    বিয়ের ছয় দিনের মাথায় পুরানো প্রেমিকার হাতে প্রেমিক খুন

      প্রতিনিধি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ১:১১:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    মো:আজিজুল হক-নরসিংদী প্রতিনিধি:

    ভালোবেসে শ্রাবন্তী আক্তার (২০)কে গত ছয় ফেব্রুয়ারি ২০২২ বিয়ে করেন মো. মাঈনুল মীর (২৩)। দু’জনের পরিবার রাজি না থাকায় গোপনে কোর্ট ম্যারেজ করেন তারা।তবে কে জানত, বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় পুরোনো প্রেমিকার হাতেই খুন হতে হবে মীরকে।অন্য মেয়েকে বিয়ের কথা জানতে পেরে কৌশলে মীরকে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে গলায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তার পুরোনো প্রেমিকা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইসরাত জাহান মীম (২০)।

    শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে মীমকে আটক করে পুলিশ।
    তদন্ত সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন, মীমই এ নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।নিহত মাইনুল হক মীর ঘোড়াশাল দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ফেলু মীরের ছেলে। আর ইসরাত জাহান মীম উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের ইমরান হোসেনের মেয়ে।
    গ্রেপ্তারকৃত মীমের তথ্যের বর্ণনা দিয়ে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, মীম ও মাইনুল স্কুল জীবন থেকেই একে অপরের পরিচিত।

    দু’জন স্থানীয় মুসা বিন হাকিম কলেজে একসঙ্গে পড়তেন। একসময় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন পর ওই সম্পর্কে ফাটল ধরে। গত বছরের মাঝামাঝিতে মীম আরেক ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেন। তিন মাস পর সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর আবার মীরের সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক জোড়া লাগে মীমের। কিন্তু এরই মাঝে শ্রাবন্তীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন মাইনুল। গোপনে একই সঙ্গে দু’জনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালাতে থাকেন মীর। দু’জনই পরিবারকে না জানিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি শ্রাবন্তীকে বিয়ে করেন পেশায় দাঁতের চিকিৎসকের সহকারী মাইনুল। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে নিজ বাসায় বসবাস করতে থাকেন।

    খবর পেয়ে ৭ ফেব্রুয়য়ারি শ্রাবন্তীর বাবা ও ফুফাসহ অন্য স্বজনরা মেয়ের জামাইয়ের বাসায় হাজির হন। তারা মেয়েকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। তবে কোনোভাবেই মেয়ে তার বাবার সঙ্গে যেতে রাজি হননি। মেয়েকে ছাড়াই বাসায় ফিরে যান তারা। বাড়ির অদূরে নিজের কর্ম প্রতিষ্ঠান ‘টুথ অফিস’ নামে ডেন্টাল ক্লিনিকে যাচ্ছেন জানিয়ে বৃহস্পতিবার বাসা থেকে বের হন মীর। রাতেও বাড়িতে ফেরত না গেলে স্ত্রী ও স্বজনরা কল করে মোবাইল ফোন বন্ধ পান। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে তার সন্ধান না পাওয়ায় স্থানীয় কমিশনারকে তারা বিষয়টি অবগত করে।

    কমিশনার ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করতে পরামর্শ দেন। শুক্রবার সকালে স্থানীয় পুলিশকে জানানো হয়।মীরের স্ত্রী পুলিশের কাছে তার সন্দেহের কথা জানিয়ে বলেন, পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করায় বাবা ও ফুফা তার স্বামীর ক্ষতি করতে পারেন। এরপর পুলিশ নানামুখী তদন্ত শুরু করে। মীরের কর্মস্থলেও খোঁজ নেয়। তবে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় ক্লিনিকের ভেতরে কেউ থাকতে পারেন এমন কোনো সন্দেহ পুলিশের ছিল না। কার কার সঙ্গে মীরের যোগাযোগ ছিল স্থানীয় ও স্বজনদের কাছ থেকে সেই তথ্য নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ