• জাতীয়

    বিনা প্রতিদ্বন্দীতা লড়াইয়ে ৮ম বারের মত এমপি হতে যাচ্ছেন সাবেক চীফ হুইপ আসম ফিরোজ

      প্রতিনিধি ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৪:৫৫:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

    মু,হেলাল আহম্মেদ-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

    বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লড়াইয়ের নাঠে পটুয়াখালী -২ আসন থেকে অষ্টম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সাবেক চীফ হুইপ আ সম ফিরোজ।দ্বাদার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তার নির্বাচিত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তারপরও তিনি বসে নেই। সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতির জন্য কর্মী – সমর্থকদের নিয়ে বিরামহীন চালাচ্ছেন প্রচার – প্রচারণা।

    ১৪ টি ইউনিবিনা লড়াই য়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত পটুয়াখালী দুই নির্বাচনী এলাকা। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে সাতবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক চীফ হুইপ আসম ফিরোজ । এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ১৩ জন দলীয় নেতা ও ব্যবসায়ী আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও সবাইকে পিছনে ফেলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন এই আসনের বর্তমান এমপি আসম ফিরোজ । এই নির্বাচনী আসনে ফিরোজকে ঢেকাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত সবাই একগাট্টা হয়ে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হাসিব আলম নামের এক ব্যবসয়ীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করালেও তাদের মধ্য জুতসহি সমজোতা না হওয়ায় ১৬ ডিসেম্বর ফেইস বুকে একটি আবেগঘন স্টাটাজ দিয়ে পরেরদিন ১৭ ডিসেম্বর তিনি তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার কর নেন। হাসিব আলমের এই প্রার্থীতা প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে পটুয়াখালী ২ আসনে ভোটের মাঠ প্রতিদ্বদ্ন্বীতাবিহীন হয়ে পড়ে। বরবরের ন্যায় এবারও বিরোধীদের ঘেরা জাল ফসকে বের হয়ে যেতে সক্ষম হন আসম ফিরোজ। এই আসনের ৭বারের এমপি দক্ষিণাঞ্চলের ঝানু পলিটিশিয়ান খ্যাত আসম ফিরোজ এর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিকের মোঃ মহসিন হাওলাদার। তার বাড়ি বাউফল উপজেলা সদর হলেও বাউফলের প্রত্যন্ত এলাকার ভোটার দের মাঝে নেই তেমন কোন প্রভাব। তিনি গত বাউফল পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে পরাজিত হয়েও আবার এমপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় রয়েছেন চরম আস্থা সংকটে। তাকে নিয়ে আলোচনা – সমালোচনারও কমতি নেই এখন বাউফলে। তারপর বাউফলে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ভীতও যেনতেন অবস্থা । এইহল আসম ফিরোজ এমপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঠের অবস্থান।

    এবং অপর প্রার্থীদের মধ্যে বিএনএফ এর প্রার্থী জোবায়ের হোসেন( টেলিভিশন, ) তৃণমূল বিএনপির মাহাবুবুল আলম ( সোনালী আশ) কে এই নির্বাচনী এলাকার ভোটারতো দূরের কথা এলাকার চেয়ারম্যান – মেম্বার বা চৌকিদাররাও ভাল ভাবে চিনেন না- জানেন না। বিভিন্ন চর চন্দ্রদীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলকাস মোল্লা বলেন, ভাই এসব প্রার্থীদের চেনা জানা তো পরের ব্যাপার, এদের নামও আমি কখনো শুনিনি । অন্যদিকে আসম ফিরোজ ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে ন্যাপের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ এর সাথে প্রতিদ্বদ্ন্বীতা করে প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রিস্কা প্রতীক নিয়ে দ্বীতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ২৯৯৬ সালেও তিনি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি বিএনপির প্রার্থী শহিদুল আলম তালুকদারের নিকট সামান্য ভোটে পরাজিত হলেও ২০০৮,২০১৪ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে টানা তিন বার সাংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।১৪সালের নির্বাচনে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। পটুয়াখালী- ২ আসন থেকে মোট ৭ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসম ফিরোজ। প্রায় টানা ৩৫ বছর এই আসনের এমপি থাকার কারনে এলাকায় উন্নয়নের ভীত যোমন মজবুত করেছেন তেমনি কর্মীদের সাথও তার রয়েছে বিশোষ সখ্যতা। মজবুত করেছেন নিজস্ব বলয়। ২০০৮ সালে এমপি নির্নাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করলেও ১৪ সালের নির্বাচনের পর তাঁকে দেওয়া হয় জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ এর দায়িত্ব। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ভোটের মাঠে তার শক্ত কোন প্রতিদ্বদ্ন্বী না থাকায় অষ্টমবারের মতো সংসারের সদস্য নির্বাচিত হওয়া শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। পটুয়াখালীর অন্যান্য আসন গুলোতে হাঁড্ডা হাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেলেও ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের দিনক্ষন ঘনিয়ে আসলেও পটুয়াখালী ২ আসনের নির্বাচনী আমেজ একটু ভিন্ন ও নিরোত্তাপ। তবে সভা- সমাবেশে ভোটারদের উপস্থিতি আর উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। এই নির্বাচনে আসম ফিরোজের সংসদ সদস্য পদের যেন নবায়ন মাত্র। নির্বাচনের মাঠে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকলেও দিনরাত সমনতালে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।সাতবার এমপি থাকাকালীন সময়ে একসময়ের অবহেলিত বাউফলকে সাজিয়েছেন নিজের মত করে। এসব উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্মী সমার্থকদের নিয়ে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার উপস্থিত নিশ্চিত করতে সভা, সমাবেশ, মিছিল মিটিং করে যাচ্ছেন অব্যাহতভাবে। ভোটের মাঠে শক্ত কোন প্রতিদ্বদ্ন্বী প্রার্থী না থাকলেও সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতিকে কোন চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানতে নারাজ আসম ফিরোজ এমপি। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অবয়াহত রাখতে, সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে দলমত নির্বিশেষে মানুষেরা শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন বলে যুগান্তরকে জানান সাংসদ আসম ফিরোজ। পটুয়াখালী দুই আসনে এবারের নির্বাচনে মোট ২লাখ ৯৩ হাজার ৩২৪জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৯হাজর ৭৬৮জন আর মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১ জন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ