• Uncategorized

    পিরোজপুরে পুরো সড়কেই যেন অটোস্ট্যান্ড, ভোগান্তিতে পথচারী ও ব্যবসায়ীরা

      প্রতিনিধি ৩১ অক্টোবর ২০২৩ , ৮:০১:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    তাহমিদ ফেরদাউস, পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি।

    পিরোজপুরে সরু সড়ক ও যত্রতত্র যানবাহন পার্কিংয়ের কারণে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন পার্কিং করে রাখার ফলে ব্যবসা বাণিজ্যে ঘটছে মারাত্মক বিপর্যয়। যান চালকরা বলছেন, অটোস্ট্যান্ডের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এমন পরিস্থিতি। তবে যানজট কমাতে চেষ্টা চলছে বলে জানায় পৌর কর্তৃপক্ষ।

    সরেজমিনে দেখা গেছে, মাত্র ১৮ থেকে ২৪ ফুট চওড়া রাস্তায় চলছে অটোরিকশা, রিকশা, ছোট-বড় যান এমনকি বাসও। অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যান আবার যত্রতত্র পার্কিং করে রাখা হয় রাস্তার পাশে। এতে পথচারীদের চলাচলে চরম ভোগান্তির পাশাপাশি শহরে লেগে থাকে যানজট। দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুরে পৌরসভার প্রধান সড়কগুলোর এমন বেহাল দশা।

    পার্কিংয়ের কোনো জায়গা না থাকাসহ অটোস্ট্যান্ড না থাকায় অনেক সময় যানগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে সমস্যার কথা জানালেন দোকানিরা।

    শহরের কালীবাড়ি রোডের ব্যবসায়ী হাসিব বলেন, ‘যেভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দোকানের সামনে অটো পার্কিং করে রাখা হয় তাতে ব্যবসা করা খুবই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অটো পার্কিং করে রাখায় ক্রেতারা দোকানে ঢুকতে পারেন না । এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই চালকদের সঙ্গে দোকান মালিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। এমনকি হাতাহাতি পর্যন্ত হয়ে থাকে।’

    অটোচালক ফারুক শেখ বলেন, ‘আমরা পেটের দায়ে অটোরিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। সব নিয়মকানুন মেনেই অটো চালাই। কিন্তু শহরে অটোরিকশা স্ট্যান্ড না থাকায় আমরা রাস্তায় রাখতে বাধ্য হই। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই দোকানদারদের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা হয়। কিন্তু আমরা নিরুপায়, আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের দাবি কর্তৃপক্ষ যেন আমাদের জন্য একটি অটোরিকশা স্ট্যান্ড করে দেয়।’

    জেলা অটো শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মজনু তালুকদার বলেন, ‘শহরে অটোস্ট্যান্ডের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে চালকরা রাস্তায় যাত্রী ওঠানামা করায়। বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের মিটিং হয়েছে। আমরা সে সময় দাবি জানিয়েছি, পৌর শহরের ভিতরে আমাদের জন্য একটি অটোস্ট্যান্ড করে দেওয়া হোক। তাহলে এ সমস্যার সমাধান হবে।’

    পিরোজপুর পৌরসভার সচিব মো. বনি আমিন বলেন, ‘একে তো ছোট শহর তার ওপর আবার প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে শত শত অটো প্রবেশ করায় বাড়ছে জটিলতা। তবে সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ।’

    পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অদক্ষ চালকরা অটোরিকশা চলানোয়ে দিন দিন বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠাতে মাঝে মাঝে অটো চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে ট্রাফিক বিভাগ। আমরা এ সমস্যা সমাধানের জন্য অটোশ্রমিক ও পৌর কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একাধিকবার সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। হয়তো ভবিষ্যতে সমস্যার সমাধান করতে পারব।’

    পৌর কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, জেলায় প্রায় ৫ হাজার অটোরিকশা ও ৬ হাজারের বেশি চালক রয়েছে।১৮৬৫ সালে মহকুমা থেকে পৌরসভায় উন্নীত হয় পিরোজপুর। জেলার চারপাশে নদী ঘেরা থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ভৌত কাঠামোর তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এছাড়া ব্রিটিশ আমলেই শহরের বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে। তাই নতুন পরিকল্পনা নিয়ে পৌরসভাকে ঢেলে সাজানোর তাগিদ বাসিন্দাদের।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ