প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ১১:৫১:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ শাহ আলম-ক্রাইম রিপোর্টার:
নওগাঁ জেলার সীমান্ত ঘেঁষা এক কালের খরস্রোতা পুনর্ভবা নদী এখন পানি শুণ্য হয়ে গরু-ছাগল চরানো মাঠে পরিণত হয়েছে। পুনর্ভবা নদী উইকিপিডিয়ার সূত্র মতে, পুনর্ভবা বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিনাজপুর জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২২৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১০২ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক পুনর্ভবা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৭২। নদীটির বর্তমান উৎপত্তিস্থল হচ্ছে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের বিলাঞ্চল। নদীটি পতিত বা মিলিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মহান্দা নদীর মোহনায়।
এছাড়া ইতিহাস থেকে আরোও জানা যায় যে, পুনর্ভারা নদীর প্রাচীন উৎস্য ব্রাক্ষ্মণপুর বরেন্দ্র ভূমি। ১৭৮৭ খৃষ্টাব্দে হিমালয়ের বন্যায় প্রচন্ড ভূমিধসে ভারতের সানুর নিকট এ নদীর পার্বত্য উৎস মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের নিকট থেকে আরোও জানা যায়, এক সময়ে প্রায় ১২ মাসই বহমান ছিল পুনর্ভবা এই নদী। বৃটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে এই উত্তর জনপদের রাস্তা ঘাটের তেমন কোন উন্নতি না হওয়ায় এক শহরের সাথে অন্য শহরের যোগাযাগের ক্ষেত্রে এই এলাকার মানুষ জনের ব্যবসা বাণিজ্যের একমাত্র পানি পথের রাস্তা ছিল এই নদীটি। সে সময় এই নদীতে ছোট বড় নানা ধরণের নৌকা চলত। নদীর বুক চিরে অনেক ধরণের মাল বোঝাই এমনকি বিয়ের বর যাত্রিদের নৌকার বাহারী বহরও চোখে পড়ত এই নদীতে।
বর্তমানে কালের আবর্তনে প্রকৃত নদী শাসন না থাকায় ধিরে ধিরে নদীটি ভরাট হয়ে তার যৌবন হারিয়ে ফেলেছে। নদীটি এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে এক রাশ বুক ভরা বালি রাশি নিয়ে ধু’ধু মরুভুমির মত হয়ে রয়েছে। প্রতি বছর খরা মৌসুম এলেই নদী তীরের গ্রামের রাখালদের গরু-ছাগল চরানো মাঠ হিসাবে ব্যবহার হয়। কয়েক বছর আগেও প্রতি খরা মৌসুমে নদীর পানি কমে গিয়ে নদীতে বিশাল বিশাল বোয়াল মাছ, শৌলমাছ, বাইন মাছ, আইড় বাঘাড় সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে থাকতো নদী পাড়ের লোকজন। এখন আর সামান্য পানিটুকুও থাকেনা। বর্তমানে নদীটি শুধুই স্মৃতি আর মরা খাল। নদীটিকে আবারো তার যৌবন ফিরিয়ে সারা বছর বহমান রাখার জন্য পোরশাবাসী সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।