• Uncategorized

    মানিকগঞ্জে লোকসানের মুখে পাট চাষিরা

      প্রতিনিধি ২৫ আগস্ট ২০২০ , ১১:৪২:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    মো আরিফুর রহমান অরি, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

    মানিকগঞ্জে চলতি মৌসুমে পাটের বাজার ভাল থাকলেও আশানুরুপ ফলন না হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে পাটচাষিরা। এবার ভয়াবহ বন্যার কারনে বেশীর ভাগ কৃষকই পাট কাটতে পারেনি। পানির নিচে দীর্ঘদিন পাট থাকায় পাট গাছ পচে গিয়ে এ লোকসানের মুখে পড়েছে।

    মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় বিভিন্ন জাতের ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ মাত্রা ছিল। সেখানে আবাদ হয়েছিল ৩ হাজার ৬০৬ হেক্টর জমিতে। অতি বন্যার কারনে জেলার বেশীর ভাগ কৃষকই পাট কাটতে পারেনি। যে ক্ষেত কিছু পানি উঠেছিল, সে সমস্ত কৃষকরা পাট কেটে বিক্রি করছে। পাটের চাহিদা তুলনায় কম বাজারে উঠায় দামও পাচ্ছে কৃষকরা।

    মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের ফারিরচর গ্রামের কৃষক বদর উদ্দিন বলেন, পাট সাধারণ চৈত্র ও বৈশাখ মাসে চাষ করা হয়। ১০০ দিন থেকে ১২০ দিনের মধ্যে স্থান কাল ভেদে তা কেটে বাজারে বিক্রি করার উপযোগী করে থাকি।সাটুরিয়া উপজেলার কুষ্টিয়া গ্রামের পাট চাষি করিম মিয়া বলেন, বৈশাখ মাসে পাট ১২০ শতাংশ জমিতে  চাষ করেছিলাম।

    আমার সব খরচ দিয়ে প্রায় ৩২ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারতাম। ভাল ফলন হলে ৪০-৪৫ মণ পাট উৎপাদন হত। বর্তমান বাজার ২২শত টাকা করে হলে ৯৫-৯৯ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারতাম।একই গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার পাটচাষি আজগর বলেন, ৯০ শতাংশ জমিতে পাচ চাষ করেছিলাম। বন্যার পানিতে না পচে গেলে আমার ৩০- ৩৩ মণ পাট উৎপাদন হত। এবার ভাল দাম ছিল।

    বন্যার পানিতে পাট না পচে গেলে প্রায় ৭০  হাজার টাকা বিক্রি করতে পারতাম। আমার উৎপদান খরচ ২২ হাজার টাকাও উঠাতে পারলাম না।কুষ্টিয়া গ্রামর জামাল বলেন, এবার আমি ৬০ শতাংশ জমিতে ঋণ করে পাট চাষ করেছিলাম। আমার বন্যার পানিতে সব পাট তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ২০- ২২ মণ পাট বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকার পাট বিক্রি করতাম।দিঘুলিয়া গ্রামের বাদল বলেন, আমি এ বছর ২ প্লটে ৭০ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এক প্লটে ৩০ শতাংশ জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে সম্পুর্ণ নষ্ট হয়েগেছে।

    আরেক ৪০ শতাংশ জমিতে অল্প পানি উঠেছিল। সেখানে ১৫ মন পাট বিক্রি করে ৩৩ হাজার টাকা পেয়েছি।পাট চাষি শওকত বলেন, করোনার সময় বেকার ছিলাম। হাতে টাহা পয়সা ছিল না। রাস্তায় বাইরাতে পারি নাই বাপু। তহন কোন আত্বীয় ইষ্টিরাও টেহা দ্বার দেয় নাই। মহাজনদের নিকট সুদ নিয়া পাট চাষ করছিলাম। বন্যার পানিতে আমার সব আশা ডুইবা গেছে। এক মণ পাটও বেচা পারলাম না। সব পইচা গেছে।

    দৌলতপুর উপজেলার বহরা গ্রামের সোহেল বলেন, আমার খেতে পানি কম উঠেছিল। তাই আমার পাট নষ্ট হয় নাই। বৃহস্পতিবার ৩০ মণ পাট ২১ শত টাকা ধরে বিক্রি এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মো. শাজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, ভয়াবহ বন্যা আর দীর্ঘদিন পানি থাকায় অনেক কৃষকর পাট পচে গেছে। অপরদিকে যে সমস্ত পাট খেতে কম পানি উঠেছে তারা কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। পাটের দাম ভাল থাকায় তারা লাভবান হয়েছে। জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত পাট চাষীদের তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ