• আমার দেশ

    ভালবাসার মাসে তারুণ্যের চোখে ভালবাসা

      প্রতিনিধি ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৬:২৭:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    ডেস্ক রিপোর্ট:

    যার ভালোবাসা যত প্রবল তার যশ সুনাম তত বেশি। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহকে ভালোবাসার ইচ্ছা থাকলে মানুষকে ভালোবাসতে শেখ’। ভালোবাসা সকল প্রাণীকূলের মধ্যে সৃষ্টিকর্তার এক বিশেষ দান। আর এ ভালোবাসা সৃষ্টিকর্তার সেরা জীব মানুষ থেকে শুরু করে সকল প্রাণীর মাঝেই বিরাজমান। অন্যদিকে ভালোবাসার মাঝে হিংসা, বিভেন, ভুল বুঝাবুঝির কারণে সৃষ্টি হয় নানা ধরনের প্রতিহিংসা এমন কি প্রাণহানির মত ঘটনা ঘঠে সমাজে প্রতিনিয়ত। ধ্বংস করে মানুষের মনুষ্যত্বকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান বিশ্বে ভালোবাসা দিবসের দিনে বেড়ে যায় নানা ধরনের অপসংস্কৃতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। বেড়ে যায় অশ্লীলতা। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ২৬৬ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী এবং চিকিৎসক ছিলেন।

    ধর্ম প্রচার অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ফার্ডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারা রক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ত্যালেইটাইন’স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। সেই থেকেই ভালোবাসা দিবস পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বে। ভালবাসা দিবসের মানে কি শুধুই প্রেমিকের প্রেমিকার প্রতি কিংবা প্রেমিকার প্রেমিকের প্রতি ভালবাসা প্রকাশের দিনা অবশ্যই না। একটু অন্যভাবে দেখলে ভালবাসা দিবস মানে সকলের প্রতি ভালবাসা প্রকাশের দিন। কিন্তু কালের স্রোতে সে অর্থ বদলে শুধু প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসার বিশেষ বহিঃপ্রকাশের দিন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমরা কি পারি না সেই দৃষ্টিভঙ্গিটা বদলাতে?

    ভালোবাসা দিবসের শুরুতেই হাজার হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়। আর দিনের শেষে সেই ফুলই আবার পদপৃষ্ঠ হয় মানুষের। এইবার না হয় সেই ফুলের টাকাটা বাঁচালেন। ওই টাকাটা কিছু অসহায় মানুষ, ছিন্নমূল শিশুকে এক বেলা পেট ভরে খাইয়ে দিন, ওদের সাথে ভালবাসা ভাগ করে নিতে না হয় খরচ করলেন। আসুন না ছেঁড়া ময়লা কাপড়ে ঘুরে বেড়ানো রাস্তার অসহায় মানুষগুলোকে নিয়ে একটু ভাবি। ভালোবাসা হলো সৃষ্টিকর্তার প্রতি অনুভূতি, আত্মার তৃপ্তি ও মনের প্রশান্তি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাঝে অশেষ ভালোবাসা দান করেছেন। যা কোনো বিশেষ দিন বা দিবসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও উত্তম চরিত্র দ্বারা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জয় করে নিয়েছেন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়।

    সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন ইসলামের আলো। প্রতিটি ভালোবাসা হতে হবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি সান্নিধ্য লাভের জন্য। কিন্তু যে ভালোবাসায় শুধু আবেগ আর খারাপ চিন্তাধারা নিহীত সে ভালোবাসা মানুষের সকল ভালো কর্মগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। ভালবাসা অবশ্যই একদিনের জন্যে নয় তা সারা জীবনের। তবে একটি দিনকে একটু আলাদাভাবে ভালবাসা প্রকাশ করবার জন্যে, স্বরনীয় করে রাখবার মত কিছু স্মৃতি তৈরী করার জন্যে ভালো কিছু করা উচিত সেই সাথে সুখে দুঃখে চারপাশের মানুষের সাথে মিশে থাকা। পুরো পৃথিবী চলছে ভালবাসার উপরে। যেমন, মা বাবার ভালবাসা, বন্ধু বান্ধরের ভালবাসা, ভাইয়ের প্রতি বোনের ভালবাসা, বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালবাসা, অসহায় মানুষের প্রতি ভালোবাসা এই রকম হাজারো ভালবাসা নিয়েই আমাদের জীবন।

    আমরা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আমরা যার যার জীবন নিয়ে ব্যস্থ হয়ে পরি। আমাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার কিংবা আমাদের নিয়ে ভাবার অনেকেই হয়ত আছে। কিন্তু ওদের নিয়ে কারা ভাবে? ভেবেছেন কখনো? ভালোবাসার চেয়ে অবহেলাটাই ওরা বেশী পায়, আমাদের একটু খানি ভালবাসা ওদের হাসি ফোটাতে পারে। শুধু বিশেষ দিনে নয় সুন্ঠধারার ভালোবাসা জাগ্রত হোক সবার মাঝে সব সময়। ভালোবাসতে হবে নিজের প্রয়োজনেই প্রতিদান প্রাপ্তির আশায় নয়। মনে রাখতে হবে পৃথিবীতে ভালোবাসার একটি মাত্র উপায় আছে, তা হলো প্রতিদান পাওয়ার আশা না করে ভালোবেসে যাওয়া। হ্যাঁ, গভীর ভালোবাসার কোন ছিদ্রপথ নেই।

    শেখ জাহাঙ্গীর আলম
    রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ