• ঢাকা বিভাগ

    বিধবা এক নারীর সম্বল পরের জায়গার বসত ঘর ছেড়ে পথে

      প্রতিনিধি ৩ জানুয়ারি ২০২২ , ৩:১৬:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ মাহাফুজুর রহমান-নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:

    নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার ১১নং পেড়লী ইউনিয়নের উত্তর খড়লিয়া চর পাড়া গ্রামের মৃত গহুর মোল্ল্যার স্ত্রী হতদরিদ্র ভুমিহীন বিধবা তহমিনা বেগমের শেষ সম্বল পরের জায়গায় থাকতে দেওয়া জায়গাটা ছেড়ে পথে নামতে হয়েছে বলে জানা যায়। ওই জমির মুল মালিক একই গ্রামের ইসমাইল মিনা ওই জমি ও সাথে থাকা নদীর পাড়ের খাস জমি টুকু কেড়ে নিয়ে তার বসত ঘরটা ভেঙ্গে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    অভিযোগ সূত্রে ৩ জানুয়ারি সোমবার সরেজমিনে গিয়ে বিধবা তহমিনা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমি দীর্ঘ ২০বছর যাবৎ ধর্ম আত্মীয় ইসমাইল মিনার জমিতে বসবাস করে আসছি, এর পাশে নদীর খাস জমি এই জমি ঘিরে আমি নিজে গাছ গাছালি লাগিয়ে নিয়েছি এরপরে ইসমাইল মিনা মারা যায় এখন তার ছেলেরা নাকি জমি বিক্রি করে দিয়েছে , শুনতে পাই এই জমি কিনেছে এলাকর সাবেক মেম্বার তুকাব শেখ,ও মাহামুদ পিং অজ্ঞাত, এবং ইনামুল মোল্ল্যা,পিং মনিরুল মোল্ল্যা,

    এনারা জমিটি কিনে ওই জমিতে থাকা ২০ বছরের বসবাস রত বিধবা মহিলা তহমিনার বসত ঘর ভেঙ্গে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান তহমিনা।এসময় বিধবা তহমিনা বেগম বলেন, ৩/৪ জন মিলে আমাকে অনেক দিন যাবত বলে আসছে তোমার বসত ঘরটা সরিয়ে নিয়ে যাও, এবং বলেন এই জায়গা আমরা কিনেছি,তখন তহমিনা বেগম তাদের কে বলেন আমি বিধবা মানুষ আমার ছেলে সন্তান নেই প্রতিবন্ধী মেয়েটা নিয়ে কোথায় যাবো, এরপর তহমিনা বেগম বলেন একদিন আমি বাড়ি না থাকায় দিনের বেলাতেই আমার বসত ঘরটা ভেঙে ফেলে দিয়েছে।

    এখন আমি খড়লিয়া সরকারি প্রাইমারি স্কুলে কিছু দিন থেকে, পরে সুভার ঘোপ আমার বিধবা মায়ের জায়গায় কোন রকম একটা ঘর বেঁধে থাকি। এসময় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন লোকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, তহমিনা বেগম একজন অসহায় ব্যক্তি সে যদি নিজে কাজ করে খাবার আনতে পারেন তবে খায়,না হলে না খেয়ে থাকতে হয় তার।

    এসময় তারা আরো বলেন এখানকার স্থানীয় ওই লোক জন ওই মহিলার উপর অবিচার করেছে,ওই মলিহার একটা প্রতিকার হওয়া উচিৎ। এ বিষয় নিয়ে বর্তমান জমির মালিক দের সাথে কথা হলে তারা বলেন আমরা জমি টাকা দিয়ে কিনেছি, ও তহমিনা বেগমের সাথে কথা বলে তার ঘর সরিয়ে দিয়েছি বিধবা তহমিনা বলেন,আমি বিধবা, আমার পরের জায়গায় থাকা ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে, আমার বিধবা ভাতা কার্ড নাই, একটি পঙ্গু মেয়েকে নিয়ে কোন রকম দিন অতিবাহিত করছি।পরের বাড়ীতে কাজ করে খাওয়া ই আমার এক মাত্র অবলম্বন।

    এদিকে সরেজমিনে গিয়ে বিধবা তহমিনা বেগমের সাথে ভিডিও বক্তব্য নেয়া কালীন সেখানে হাজির হন সাবেক মেম্বার তুকাব শেখ, এবং সাংবাদিকদের উপর রাগান্বিত হয়ে বলেন আপনারা গতবার একটা নিউজ করেছিলেন সেটা উল্টোপাল্টা হয়েছে আজকে আবার উনার কেনো নিউজ করতে এসেছেন।

    এর আগে তহমিনা বেগমে কে নিয়ে একটা নিউজ করা হয়েছিলো তখন বিষয়টি কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে আসলে তিনি ওই মহিলাকে খবর দিয়ে তার অফিসে নিয়ে যান এবং বলেছিলেন আপনি আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকবেন। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় কথা মতো কিছুদিন ওখানে বসবাস করেন তহমিনা সেখান থেকে পেটের ভাত জোগাড় করতে না পেরে আশ্রয়ন প্রকল্প ছেড়ে যেতে হয় তহমিনার।

    এসময় তহমিনা আরো বলেন,এমপি মহোদয়, জেলা প্রশাসক মহোদয়, পুলিশ সুপার মহোদয় এর কাছে বিনীত অনুরোধ যাতে আমাকে সরকারি জায়গায় একটি ঘর করে ও আর্থিকভাবে সহায়তা করেন, যাতে করে আমার পঙ্গু মেয়েটিকে নিয়ে বাকি জীবনটা অতিবাহিত করতে পারি।এমনটা দাবি করেছেন তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ