আওয়ামীলীগ কাউন্সিলে ননদ-ভাবীর স্নায়ু যুদ্ধ

বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন-স্টাফ রিপোর্টারঃ

আগামি ২৪ মার্চ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ কাউন্সিল। কাউন্সিলকে ঘিরে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা ও আনন্দ উৎসব। সভাপতি পদে ৩ জন এবং সাধারন সম্পাদক পদে ৫ জন প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে। সভাপতি পদে প্রয়াত সাবেক সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বড় বোন বর্তমান উপজেলা আ’লীগ ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আফরুজা বারী এবং স্ত্রী বর্তমান আ’লীগ উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতির মধ্যে চলছে স্নায়ু যুদ্ধ। অপর সভাপতি প্রার্থী হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ ডি ডাব্লিউ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ ও উপজেলা আ’লীগ যুগ্ম আহবায়ক প্রবীণ নেতা আব্দুল হান্নান সরকার।

সাধারন সম্পাদক পদে যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন- উপজেলা আ’লীগ যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার লেবু, উপজেলা আ’লীগ যুগ্ম আহবায়ক সাজেদুল ইসলাম, আহসান আজিজার সরদার মিন্টু, মশিউর রহমান আপেল ও উপজেলা আ’লীগ যুগ্ম আহবায়ক ও দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল আলম রেজা। ২০০০ সালে উপজেলার ভুরারঘাট মাদরাসায় তৎকালিন জামায়াতের আমির গোলাম আযমের জনসভাকে পন্ড করে দিয়ে আ’লীগের রাজনীতিতে পরিচয় লাভ করেন প্রয়াত সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন।

তখন থেকে আ’লীগের হাল ধরেন লিটন। এরপর ১০১৪ সালে সংসদ সদস্য নিবার্চিত এবং ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী উপজেলা আ’লীগ কাউন্সিলে তিনি সভাপতিও নিবার্চিত হন। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন সাংসদ লিটন এবং তখন থেকে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি পদটি শুন্য হয়। ২০১৭ সালে সংসদ উপ-নিবার্চনে জাতীয় পাটিকে পরাজিত করে উপজেলা আ’লীগ সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহমেদ সংসদ সদস্য নিবার্চিত হন। ওই বছরে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ ডিসেম্বর মারা যান সাংসদ গোলাম মোস্তফা আহমেদ। সেই থেকে উপজেলায় আ’লীগের রাজনীতি নেতা শুন্য হয়ে পড়ে।

২০১৮ সালের ২৮ মার্চ উপজেলা আ’লীগ সাবেক সভাপতি টি আই এম মকবুল হোসেন প্রমানিককে আহবায়ক এবং ১২ জন নেতাকে যুগ্ম আহবায়ক করে কেন্দ্রিয় কমিটি উপজেলায় আহবায়ক কমিটি গোষণা করে। ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর অসুস্থ্য জনিত কারনে আহবায়ক টিআইএম মকবুল হোসেন মৃত্যু বরণ করে। এরপর থেকে উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছেন যুগ্ম আহবায়ক আফরুজা বারী। ছোট ভাই প্রয়াত সাংসদ লিটনের মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে আ’লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন আফরুজা বারী এবং ২০০৩ সালে আ’লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন লিটনের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি।

দহবন্দ ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি আশেক আলী জিকু জানান, আ’লীগের রাজনীতিতে সুদিনে এবং দুর্দিনে কে কত টুকো শ্রম এবং দায়িত্ব পালন করেছে তা নেতারা ভাল করে জানে। কাউন্সিলের মাধ্যমে কাউন্সিলরগণ সঠিক নেতৃত্বকে বেচে নিবেন, এটি তার বিশ্বাস।সভাপতি প্রার্থী সৈয়দ খুরশিদ জাহান হক স্মৃতি জানান, স্বামী প্রয়াত সাংসদ লিটনের পাশে থেকে আ’লীগের রাজনীতিকে তিনি পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে লালন করে আসছেন। সেই সুবাধে সকল স্তরের নেতাকর্মীর সাথে তার সু-সম্র্পক রয়েছে। দলকে সু-সংগঠিত এবং বেগবান করার লক্ষে তার এগিয়ে যাওয়া। তিনি আশাবাদী কাউন্সিররগণ কাউন্সিলের মাধ্যমে তাকে সভাপতি নিবার্চিত করবেন।

অপর সভাপতি প্রার্থী আফরুজা বারী জানান, তার ছোট ভাই প্রয়াত সাংসদ নিহতের পর থেকে তিনি আ’লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন। তার ছোট ভাইয়ের অসমাপ্ত কাজগুলোকে সমাপ্ত করার জন্য তিনি আ’লীগের রাজনীতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন ইতিমধ্যে দলকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে এসেছি। তার দাবি দলের নেতাকর্মীরা তাকে সভাপতি নিবার্চিত করবেন। আরেক সভাপতি প্রার্থী আব্দুল হান্নান সরকার জানান, আ’লীগের জন্মলগ্ন থেকে রাজনীতি করে আসছেন তিনি। একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে নেতাকর্মীগণ তাকে সভাপতি নিবার্চিত করবেন।