• Uncategorized

    সব কিছু গেল কোথায়? – আলোকিত ৭১ সংবাদ

      প্রতিনিধি ১০ মে ২০২১ , ৪:২৬:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    শাকিল হোসেন স্টাফ রিপোর্টার:

    নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কের রেলিং এর প্রায় পাঁচ মেট্রিকটন লোহার গ্রিল হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। বছরের পর বছর সংস্কার না করায় এবং রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে গ্রিল খুলে পড়ছে। আবার কোথাও কোথাও রোড ডিভাইডার গ্রিলশূন্য। তবে খুলে পড়া এসব গ্রিলের কোন হদিস মিলছে না।সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরও এর কোন খোঁজ দিতে পারছে না। আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে; যে যেভাবে পারছে সওজের লোহা লুটেপুটে খাচ্ছে।

    এ যেন এক মগের মুল্লুক! গ্রিল হারিয়ে গেলেও থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা মামলা করেনি সওজ। আর লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।উধাও হয়ে যাওয়া এসব গ্রিল কার কার পেটে- তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল। এদিকে, মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ধলু ইউপির বিভিন্ন প্রকল্পে রডের পরিবর্তে সওজের গ্রিল ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময় নওগাঁ জেলার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত মানের দু’লেন সড়ক ছিলো উপজেলা সদরে। রাস্তায় রেলিং, ফুটপাত, সোডিয়াম লাইটসহ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছিলো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শহরের সৌন্দর্য এখন শুধুই স্মৃতি! সড়কগুলোও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করলেও সংস্কারে তেমন কোন উদ্যোগ নেই। এলাকাবাসী জানায়, মহাদেবপুর-নওগাঁ-নজিপুর সড়কের ঘোষপাড়া মোড় থেকে খাদ্য গুদাম এবং মডেল স্কুল মোড়-বকচত্বর-পুরাতন ব্রিজ সড়কের ডিভাইডার অযত্ন-অবহেলায়।

    ফলে গ্রিল খুলে পড়ছে। আর সংশ্লিষ্টিদের সঠিক নজরদারির অভাবে চুরি হয়ে যাচ্ছে লক্ষাধিক টাকার লোহা। বিভিন্ন সময় মহাদেবপুর সদর ইউপি কতৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক মেট্রিকটন গ্রিল খুলে নিয়ে যায়। সেগুলো কয়েক মাস ধরে পরিষদ চত্বরে স্তুপ করে রাখা হয়। পরে বিভিন্ন প্রকল্পে রডের পরিবর্তে গ্রিল কেটে ব্যবহার করায় আস্তে আস্তে তা কমতে শুরু করে। পরিষদে এখনও কিছু গ্রিল জমা রয়েছে।

    অন্যদিকে, সড়ক থেকে কিছু গ্রিল মাদকসেবী ও বখাটেরা চুরি করে নিয়ে গেছে। দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে চুরি ঠেকাতে না পারলে বাকি গ্রিলও চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। সরেজমিনে কাচারীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সদর ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক নির্মীত একটি ড্রেনের ভাঙা স্লাব। সেখানে রডের পরিবর্তে শোভা পাচ্ছে সওজের চুরি হয়ে যাওয়া সেই গ্রিল। সেখানকার বাসিন্দারা জানায়, জনদুর্ভোগ লাগবে স্লাবটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরবরাহ করেছে চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ধলু। উপজেলা সদরের মডেল স্কুল মোড় এলাকার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মহাদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাস্তার গ্রিল খুলে নিয়ে জমা রাখে।

    পরে তা আর মেরামত করে রাস্তায় লাগানো হয়নি।’ একই কথা বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী।মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা আজাহার আলী বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ সওজের রাস্তা থেকে গ্রিল তুলে নিয়ে যেতে পারে কি না এবং খুলে পড়া গ্রিলগুলো সংরক্ষণে সওজের কোনো গাফিলতি রয়েছে কি না; তাও খতিয়ে দেখা উচিত। আশা করি সংশ্লিষ্টরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

    মহাদেবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ধলু বলেন, ‘গাছে বেড়া দেওয়ার জন্য পরিষদ থেকে লোকজন কয়েকটা গ্রিল নিয়ে গেছে। বাকিগুলো পরিষদে জমা রয়েছে। এ কোনো ব্যাপার না।’ রডের পরিবর্তে সওজের গ্রিল দিয়ে ড্রেনের স্লাব তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবসময় পরিষদে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চলমান থাকে।অল্প কিছুর জন্য মানুষ যেসব ড্রেন পারাপার হতে পারছে না। সেসব জায়গায় গ্রিল কেটে ঢালায় দিয়ে স্লাব তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তবে সব প্রকল্পে গ্রিল ব্যবহার করা হয়নি।

    মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, ‘সওজের নিকট ২০০-৩০০ কেজি লোহার গ্রিল জমা আছে। কে বা কারা রাস্তার গ্রীল খুলে নিয়ে গেছে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ