• ধর্ম

    মাগফিরাতের বারিধারায় সিক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ-মুফতী আরিফুল ইসলাম কারীমী

      প্রতিনিধি ১৪ এপ্রিল ২০২২ , ১১:৩৮:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    আলোকিত ইসলাম ডেস্কঃ

    রহমতে ভরা পবিত্র রমজানুল মোবারকের প্রথম দশক শেষ হয়ে ক্ষমার ঘোষণা নিয়ে মাগফিরাতের দ্বিতীয় দশকের দ্বিতীয় দিন আজ। রমজানের প্রথম ১০ দিনে যারা আল্লাহর রহমতে সিক্ত হয়েছেন, আজ তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন মাগফিরাত আর নাজাতের বারিতে ভেজার। আমরা কী রহমতের বারিধারায় সিক্ত হতে পেরেছি? মাগফিরাতের এ দশকে রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকে। মহান আল্লাহতায়ালা অসংখ্য-অগণিত মানুষকে এই দশকে ক্ষমা করবেন। তবে যারা রমজানের এই কল্যাণময় সময়গুলোও অবহেলা ও উদাসীনতায় দূরে ঠেলে দেয় তারাই বঞ্চিত থাকে আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ থেকে।

    রমজানের এ দশকে আমরা মাগফিরাত থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। রোজা, কোরআন তিলাওয়াত, তারাবি, তাহাজ্জুদ, দান-সদকা, তওবাহ, ইস্তেগফার, দোয়া, দরুদসসহ পূণ্যকর্মের মাধ্যমে মুমিন বান্দাদের পাপ ক্ষমা করানোর সুবর্ণ সুযোগ পবিত্র মাহে রমজনুল মোবারক।হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রমজান মাস লাভকারী ব্যক্তি যে উত্তমরূপে সিয়াম ও কিয়াম (রোজা, তারাবি ও অন্যান্য আমল) পালন করে, তার প্রথম পুরস্কার এই যে, সে রমজান শেষে গুনাহ থেকে ওই দিনের মতো পবিত্র হয় যেদিন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। (মুসলিম : ৮৯৬৬)।

    হজরত রাসুলে কারিম (সা.) এরশাদ করেন, রমজান মাসে সিয়াম পালন পূর্ববর্তী রমজান থেকে কৃত গুনাহসমূহকে মিটিয়ে দেয়; যদি কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়’। (মুসলিম : ২৩৩)।

    হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘রমজান মাসে সিয়াম পালন বছরের দশমাস সিয়াম পালন তুল্য’। (মুসলিম : ১১৬৪)।

    রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেলো, কিন্তু এই মাসেও তাকে ক্ষমা করা হলো না সে আল্লাহতায়ালার রহমত থেকে চিরবঞ্চিত ও বিতাড়িত। (মুসতাদরাকে হাকিম : ১৭০)।

    হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা আদায় করবে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম : ৫২৩)

    নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি খাটি ইমান ও ইখলাসের সঙ্গে রমজানের রাতে (তারাবিহতে) দাঁড়িয়ে যাবে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (মুসলিম : ৫২৩)।

    রমজান মাসের আমলগুলো যদি আল্লাহর কাছে কবুল হয়, তাহলে মহান আল্লাহ রোজাদারদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।
    পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন।’ (সুরা ফুরকান : ৭০)।

    মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনে আরও এরশাদ করেন, ‘আর তিনিই তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন ও পাপগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা আশ শুয়ারা : ১৫)।

    কোরআনুল কারিমে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন’। (সুরা বাকারা : ২২২)

    মাহে রমজান আমাদেরকে আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে। মাগফিরাতের এই দশকে যথাযথ হক আদায় করে রোজাসহ অন্যান্য ইবাদত এবং নেক আমলসমুহের মাঝে কাটাতে পারলে আশা করা যায় পরম করুণাময় আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি মাগফেরাতের বৃষ্টি ঝরাবেন।

    মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাগফিরাতের বারিধারায় সিক্ত করুন।

    আসুন এই দশকে আমরা বেশি বেশি করে তওবাহ, ইস্তেগফার, কোরআন তিলাওয়াত, দান সদকা ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার চেষ্টা করি। মাগফিরাতের এই দশকে মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমিন।

    রাইটারঃ
    ইসলামী কলামিস্ট, সাংবাদিক ও মোহতামীম-উত্তর ইয়ারিংছড়ি দারুল উলুম ফজলুল করীম কওমী মাদ্রাসা,রাঙ্গামাটি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ