• আইন ও আদালত

    প্রেসিডেন্টের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

      প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১০:১৮:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    আহমাদুল্লাহ হাবিবী-স্টাফ রিপোর্টারঃ

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, সরকার দীর্ঘ ১৫ বছরে নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার বিচার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ সকল সাংবিধানিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেশকে ভয়াবহ সঙ্কটে ঠেলে দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর দাবিকে পাস কাটিয়ে একতরফা নির্বাচনের নামে দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে।

    মাদানী বলেন, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে অবৈধ সংসদকে ভেঙ্গে দিতে হবে। শিক্ষাকারিকুলাম বাতিল করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাচাতে হবে। এ কাজটুকু রাষ্ট্রের মুরব্বী হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে করতে হবে। অন্যথায় দেশ ভয়াবহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটসহ বিদেশীদের নিষেধাজ্ঞায় পরে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর দায় বর্তমান সরকারকেই বহন করতে হবে।

    আজ রবিবার সকালে একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ, অবৈধ সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে রাষ্ট্রপতির বরাবর স্মারকলিপি পেশ পূর্ব জমায়েতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    জমায়েতে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হানিফ মিয়া, ডা. শহিদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মুফতী হাফিজুল ইসলাম ফাইয়াজ, আল আমিন সোহাগ, হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া।

    প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, সরকার বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটকেন্দ্রে না যেতে ভোটারদের হুমকি-ধমকি দিয়েছে। এবার উন্নতি হয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। প্রহসনের নির্বাচনের জনগণের কোন আগ্রহ নেই দেখে সরকার জনগণকে ভোটকেন্দ্রে নিতে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করছে। সরকার নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে দেশের সম্পদ নষ্ট করছে। নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চস্থ করছে। বিরোধী দলবিহীন নির্বাচন দিয়ে জনগণকে কাছে টানতে পারছে না। জনগণ সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সরকার আঁচ করতে পারছে যে, তাদের সাথে দেশের জনগণের কোন সম্পর্ক নেই। এবার নির্বাচন হচ্ছে নৌকা-স্বতন্ত্র-ডামি নৌকা-বিদ্রোহী নৌকার চরিত্রে নাটকে অভিনয় করছে। এভাবে নির্বাচনের নামে তামাশার কোন মানে হয় না। তিনি রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেশকে ভয়াবহ বির্পয়ের হাত থেকে রক্ষার আহ্বান জানান।

    মহাসচিব বলেন, সরকারের একগুয়েমীর কারণে দেশ ভয়াবহ সঙ্কটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পরতে যাচ্ছে দেশ। কাজেই জনগণের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে সরকার গায়ের জোরে নির্বাচন করে দেশকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শিক্ষা কারিকুলাম সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নতুন প্রজন্মকে নাস্তিক ও মেধাশূণ্য করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করে বিরানব্বই ভাগ মানুষের চিন্তা চেতনা অনুযায়ী নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, জাতিসত্তা বিরোধী যে কোন সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

    অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। রিজার্ভশুণ্য দেশ যে কোন সময় ভয়াবহতার দিকে ধাবিত হবে। আর এজন্য সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদ বেড়েছে শত গুণ থেকে হাজার গুণ পর্যন্ত। এজন্য এই অবৈধ সম্পদ রক্ষার জন্য যেনতেনভাবে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করছে। কিন্তু সরকারের এই অপকর্ম জনগণ রুখে দিবে।

    অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারদলীয় অনেক প্রার্থী নিজেকে শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। এধরণের বক্তব্য দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ভারত থাকলে আমরাও আছি। উভয় বক্তব্য একইসূথোয় গাথাঁ। আওয়ামী লীগের হাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের ভোটাধিকার নিরাপদ নয়। কাজেই দেশের স্বার্থেই আওয়ামীলীগকে ক্ষমতাচ্যুৎ করতে হবে।

    সমাবেশশেষে একটি বিশাল মিছিল রাষ্ট্রপতির বাসভবন অভিমূখে রওয়ানা হয়ে দৈনিকবাংলা পৌঁছলে পুলিশ মিছিলের গতিরোধ করে। এ সময় নেতাকমীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরে নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি শান্ত করেন। সেখান থেকে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির বাসভবনে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ