• আমার দেশ

    ষড়যন্ত্রকারীদের কথায় কান দিলে বাংলাদেশের মাথা আবার নিচু হবে-আসাদ

      প্রতিনিধি ২ জানুয়ারি ২০২৪ , ১০:৩৪:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন-বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি:

    ষড়যন্ত্রকারীদের কথায় কান দিলে বাংলাদেশের মাথা আবার নিচু হবে বলে সতর্ক করেছেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর পবা উপজেলার হাট চন্দ্রপুর কলেজ মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

    আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, যারা আজকে নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র করছেন, আপনাদের বিবেক কি একবারও বলে না, ৭১- এ আমেরিকা আমাদের বিরুদ্ধে কী অবস্থান নিয়েছিল? শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সেই উঁচু মাথা এরা নিচু করতে চায়। যারা জানুয়ারির এক তারিখে ছাত্র ছাত্রীদের হাতের বই বন্ধ করতে চান, বিধবা মায়ের ভাতা বন্ধ করতে চান, বয়স্ক পিতার ভাতা বন্ধ করতে চান, শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা বন্ধ করতে চান, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করতে চান, ওদের কথায় যদি কান দেন বাংলাদেশের মাথা আবার নিচু হবে।

    তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি মাসের এক তারিখে আপনার সন্তানরা নতুন বই হাতে হাসি মুখে নিশ্চয়ই বাড়ি ফিরেছে। আর সেই হাসিমাখা মুখ দেখে নিশ্চয়ই আপনি আনন্দিত হয়েছেন। আপনার আনন্দ আর সন্তানের এই হাসির পেছনে শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম আছে। সেই পরিশ্রমের ফসল আপনারা ভোগ করছেন।

    নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আসাদ বলেন, পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রনায়ক আছে যে সৎ সাহস করে বলতে পারে, সন্তান আপনার, লেখাপড়ার দায়িত্ব আমার? প্রত্যেক মাসের শুরুতে যার সন্তানরা স্কুলে পড়ে, প্রত্যেকটি মায়ের মোবাইলে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে যায়। শুধু কি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সন্তানের মায়েদের মোবাইলে টাকা যায় নাকি বাংলাদেশের সমস্ত সন্তানরা নতুন বই আর শিক্ষা উপবৃত্তি পায়? যদি সবাই পায় তবে সে দলই করুক না কেন আপনাদের কাছে আমাদের দাবি আছে, আপনি শেখ হাসিনার দ্বারা সম্মানিত হয়েছেন, সেই সম্মানের জায়গায় বিবেকের রায়টি নৌকায় চাই।

    রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে প্রায় ৬ হাজার মানুষ উপকার ভোগ করে থাকেন। আমাদের বৃদ্ধ মা-বাবা, অন্তঃসত্ত্বা মা-বোন, বিধবা মা-বোনেরা ভাতা পান। জমিজমা না থাকায় দুঃখ দুর্দশায় থাকা মানুষেরা, যারা কখনও কল্পনাও করে নি, তাদের ২ কাঠা জায়গাসহ আধা পাকা বাড়ি রেজিষ্ট্রেশন করে দেওয়ার সৎ সাহস শেখ হাসিনা ছাড়া কে দেখাতে পারে? এছাড়াও নানা দুঃখকষ্টে থাকা মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য শেখ হাসিনা বিভিন্নভাবে কাজ করে থাকেন। সেই সহযোগিতা কি শুধু আওয়ামী লীগের মানুষেরা পায়? সেই কারণেই চাই এ সমস্ত কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে চলমান থাকুক।

    তিনি আরও বলেন, আমাদের নারী সমাজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, সেই নারীদের মাথা যেন কোনোদিন নিচু না হয়। আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষকদের অবস্থা ১৫ বছর আগে কোথায় ছিল? আজকে শেখ হাসিনার শাসনামলে আপনি যদি ভালো থাকেন, আপনার বিবেককে প্রশ্ন করুন তো, আপনার ভোটটি কাকে দিবেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো সরকার কি ২ হাজার মাদ্রাসায় পাকা ভবন তৈরি করে দিয়েছে? মাদ্রাসার শিক্ষকদের মর্যাদা স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের মর্যাদার সমমান করে দিয়েছেন, অতীতে তো কেউ করে নি। সেই কারণেই তো আপনার বিবেকের রায়টি নৌকায় চাই।

    ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে আসাদ বলেন, পৃথিবীতে অনেক ধনী মুসলিম রাষ্ট্রনায়ক আছে, কোনো রাষ্ট্রনায়ক কি একসাথে ৫৬০টি মডেল মসজিদ তৈরি করতে পেরেছে?

    উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদ বলেন, আমাকে ভোট দিয়ে জাতীয় সংসদে যাওয়ার যদি ব্যবস্থা করে দেন, আমি আপনাদের কথা দিতে পারি, আমি আপনাদের সম্মান রক্ষা করে মানুষের মর্যাদা দিয়ে মানুষের পাশে থেকে এই অঞ্চলের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হবো। মানুষ হিসেবে মানুষের সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার না করে দল, মত নির্বিশেষে সকলের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ মানব সমৃদ্ধ বাংলাদেশের মধ্যে পবা একটি অনন্য উপজেলা হিসেবে উপবিষ্ট হবে।

    পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরাব আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নবীবুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সদস্য ফারুক হোসেন ডাবলু, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান বাবু, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আলী আজম সেন্টু, পবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী, হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেবর আলী, পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মোরশেদ, পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফাহিমা বেগম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হাসান তুহিন, পবা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদ ইসলাম রাজু প্রমুখ।

    এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর সিটি হাট সংলগ্ন জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন মোহনপুর উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক এনামুল হক। মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন কবিরাজের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান, মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জামাল হোসেন বিশ্বাস, প্রমুখ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ